কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে লকডাউনে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন হেলিপ্যাডে আশ্রয় নেওয়া ৫০পরিবারের শতাধিক বেদে মানুষ। বেদে মহিলারা বেশির ভাগ সিঙগা লাগানো, দাঁতের পোকা ফালানো এসব করে জীবিকা নির্বাহ করে। আর কিছু মহিলা মেয়েদের চুড়ি, ফিতা বিক্রি করে থাকে। আর বেদে পুরুষরা সাপের খেলা দেখা ও কড়ি বিক্রি করে। এভাবেই বেদে পরিবাররা কোনো রকমভাবে জীবন-যাপন করে আসছিল। লকডাউনের কারণে তাদের রোজগার এখন বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়েই থাকতে হয় অনেক সময়। সরকারের দেয়া ত্রাণ সহযোগিতা থেকেও বঞ্চিত এ বেদে পরিবারগুলো।
মঙ্গলবার সরেজমিনে উলিপুর হেলিপ্যাডে বেদে পরিবারের আশ্রয়স্থলে গিয়ে দেখা গেছে, আশ্রয় নেয়া প্রায় শতাধিক বেদে রয়েছে করুন পরিস্থিতিতে। লকডাউনে রোজগারের সকল পথ বন্ধ থাকায় এখন খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে নারী ও শিশুসহ বেদে পরিবারগুলো।
বেদে পরিবারগুলো বলেন, ‘আমাগো ছবি তুইল্লা কি হবে, মোরা গেরামে যাইতে পারি না। কোনো কাজ কাম নাই। হাটবাজারে গেলে সবাই খেদাইয়া (তাড়াইয়া) দেয়। বাল বাচ্চা লইয়া এহন কি খামু? করুনার (করোনা) ভয়ে মোগো সব রুটি রুজি বন্ধ। ছবি তুইল্লা নেন বালা কথা সরকারকে কইয়েন মোগো লইগা কিছু চাউল ডাইল (ত্রাণ) ব্যবস্থা কইরা দিতে।’
পরিবারগুলো আরো বলেন, জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার এ পেশায় যুক্ত আমরা দেশের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াই খাবারের সন্ধানে। এক সময় জীবন ছিল জলপথে নৌকায় নৌকায়। তাবিজ, ওষুধি গাছ-গাছড়া বিক্রি,সাপের খেলা, শিঙ্গালাগা, পরিমালা করে চলে আমাদের সংসার। স্থল পথে গ্রামে গ্রামে ঘুরে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় আমাদের। ওইসব গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় আমাদের আহার যোগে। করোনা ভাইরাসে লকডাউনের কারনে আমরা কোন গ্রামে ঢুকতে পারিনা। গ্রামে ঢুকলে মানুষ আমাদের তারিয়ে দেয়। ঘরে খাবার নেই। এখন আমরা কি করব বুঝতে পারছিনা।