রূপ-রূপান্তর
ওমায়ের আহমেদ শাওন
নির্দেশনায়- একেএম মাহফুজুল হক (সাবেক আইজিপি)
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ-মেজর (অবঃ) জি. মহিউদ্দিন চিশ্তী
এছাড়াও যাদের ভালোবাসায় অনুপ্রেরণা পেয়েছিÑ
জান্নাতুল ফেরদাউস (জান্নাত), ঋৃতিকা সেন, শামসুজ্জোহা খুশবু
লেখকের আরও প্রকাশিতব্য গ্রন্থঃ
উপন্যাস: দ্যা কলগার্ল, যেভাবে ভালোবাসা হয়, দেওয়াÑনেওয়া
ছোটগল্প গ্রন্থ: আবেদনময়ী
কাব্যগ্রন্থ: হেয়ালি তরুণী, নগ্নিকা
প্রবন্ধ গ্রন্থ: মহাসত্য
উৎসর্গ
জানতাম, ফিরে আসবেই
তবে আগের মতো হয়ে এলেনা!
খামখেয়ালিতে ভরপুর তব আবেগ;
বাস্তবতায় উল্টো বিম্ব!
১.
বিকেল বেলা। রৌদ্রের তীব্রতা খুব একটা বেশি নয়। আসরের নামাজের সময় ঘনিয়ে আসিতেছে। নামাজের প্রস্তুতি নিতে বিলম্ব হইতেছে। অবসাদের এ সময়ে চিন্তা করিতেছে কি করা যায়?
জানালার বাহিরে একদল ছোট-ছোট ছেলে-মেয়েরা হৈ-হুল্লোর করিতেছে। সেহজাদ দাঁড়িয়ে তাহা অবলোকন করিতেছে। বেশ ভালোই লাগিতেছে তাহার। শৈল্পির ভাবনার এমন দৃশ্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া সময় অতিবাহিত করা কোন সময় ভালো লাগার বোধ সৃষ্টি করিয়া থাকে। কারণ অতীতের গহ্বরে প্রবেশ করা অন্যরকম এক আনন্দের স্বাদ বহন করে।
দলছাড়া একটি মেয়ে স্বল্প দূরে দাঁড়িয়ে বাকি ছেলে-মেয়েদের খেলা দেখিতেছিলো। মেয়েটির দিকে অবাক চাহনি নিক্ষেপ করিয়া সেহজাদ নিজের মাঝে কৌতুহল সৃষ্টি করিল। মেয়েটি অত্যন্ত সুকুমার। এমন মেয়েকে দেখিলেই আলাদা এক অনুভূতি আসিয়া যায়। সূর্যালোকের রশ্নিতে তাহার অবয়ব যেন আনন্দ করুণার সংমিশ্রণে স্বর্গীয় রূপ পরিগ্রহ করিতেছে। হালকা-পাতলা সুঠাম গঠন, লাল ফ্রকের মাঝে নয়নাভিরাম আনার কলি চুমকি। চেহারা সমেত বক্ষে টানিয়া রাখিবার মত। সে মনে মনে ভাবিল, হয়ত এতদিনে আমারও এমন এক মেয়ে হইত। অনুরূপ জাহ্নবীর মত আদলটা একবার কল্পনা করিল। ভাবিল, ডাকিব নাকি? না, কি জন্য ডাকিব? পরিচয় না জানিয়া কথা বলা বোধহয় ঠিক হইবে না। কাহার না কাহার মেয়ে? তাই মেয়েটিকে ডাকিতে ইচ্ছে করিলেও নিজের প্রশ্নবানের নিমিত্তে ডাকিতে পারিল না।
জাহ্নবীকে খুব মনে পড়িতেছে; মেয়েটিকে দেখিবার পর। হৃদয়ের অভ্যন্তরে আর কিছু আঁকিতে পারিতেছে না। কেমন যেন চাপা ঝড় মনের মধ্যে জাগিয়া উঠিল। আপনা হইতে একটি প্রতিবাদও চতুর্দিক ঘিরিয়া বসিল। ব্যর্থরা অতীত স্মৃতি মনে করিলে দিশেহারা হইয়া ওঠে। তাহাদের দুঃখের মাত্রা আরও তীব্রতর হয়। নাহ, সেহজাদ সমস্থ দুঃখের জরাজীর্ণতাকে উপেক্ষা করিয়া ভবিল-না, যে সুখের সমুদ্রে অবগাহন করিতেছে তাহাকে নিয়ে আর এত ভাবনার কি রহিয়াছে।
আসরের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। আল্লাহু আকবার.....। সেহজাদ জানালার নিকট হইতে সরিয়া আসিয়া বুক সেলফে চোখ বুলাইলো চোখ দু’টি হঠাৎ যেন ঝাপসা হইয়া গেল। বিরক্তি অনুভব করিল। তবুও একটা বই খুঁজিতে চেষ্টা করিল। দোর হইতে দৈবাৎ সালাম জ্ঞাপন।
- আসসালামু আলাইকুম।
পিছন ফিরিয়া সৌজন্যের হাসিযোগেÑ ‘কি ব্যাপার জাফিন, ভালো তো?’
- আলহামদু-লিল্লাহ। অনেকটাই ভালো। কথাটি টানিয়া বলিল।
‘বাসার সবাই কেমন আছে?’
-সবাই ভালো। বই খুঁজিতেছেন নাকি?
‘কিভাবে বুঝিলে?’
- মানুষের মুখ দেখিলেই বোঝা যায়।
‘তাই নাকি?’
- হ্যাঁ-ঠিক তাই।
‘হুম। ভাবিতেছি যে, একটা বই পড়িÑ। বই পড়িলে শত্রু কমিয়া যায়। আর অস্বস্থিকালে বই পড়াটাই ভালো। বই হলো মানুষের জীবনের একমাত্র পরম সঙ্গী।’
- জানিই তো। তা এতো অস্বস্থির কারণটা কী?
‘এমনিতেই। কোন কিছু ভালো লাগিতেছে না।’
- তাই?
‘হুম।’
-অতীত কালের কথা ভাবিয়া নিজের সুন্দর ভবিষ্যতকে উড়িয়ে দিবেন না।
‘মানে?’
- তাহা হইলে কি ভাবিতেছেন? আমি বুঝি, বর্তমান কালের অনিহা ও অস্বস্থির কারণগুলোর অন্যতম হইলো- অতীত ভাবনা।
‘ভালোই বলিলে।’
-হুম।
‘মা ঘরে আছে, একটু বসো। বলিয়া সেহজাদ নামাজের উদ্দেশ্যে বাহির হইল।
জাফিন সেহজাদের মায়ের রুমে চলে যায়।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy