ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান খান, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ
মিয়ানমার সীমান্তবর্তী উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের করইবনিয়া গ্রামের ইয়াবা কারবারি ইকবাল সিন্ডিকেটের হাতেই প্রহ্রত হয়েছিলেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। মানুষ গড়ার কারিগর এবং জাতির বিবেক হিসাবে পরিচিত এই শিক্ষাবিদ ইকবাল সিন্ডিকেটের ইয়াবা কারবারের প্রতিবাদ করতে গিয়েই অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ইয়াবার করাল গ্রাস থেকে প্রজন্ম এবং জাতিকে রক্ষায় যে শিক্ষাবিদ প্রতিবাদে মূখর হয়ে ইয়াবা বিরোধী ভুমিকা পালন করতে এগিয়ে এসেছিলেন তার প্রাণ নাশের জন্যই গত বছরের ১৭ অক্টোবর হামলা করেছিল ইকবাল সিন্ডিকেটের সদস্যরা। কক্সবাজার সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুফিদুল আলম জানান, এ ঘটনা নিয়ে সে সময় তীব্র প্রতিবাদও জানিয়েছিলেন শিক্ষকরা। শিক্ষক সমিতি হামলাকারি ইয়াবা কারবারিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছেও আবেদন নিবেদন জানিয়েছিলেন।শিক্ষকরা জানান, ইয়াবার আগ্রাসন বন্ধে সীমান্ত জনপদে যারাই সোচ্চার হবেন তাদের নিস্তব্ধ করে দিতে ইকবাল সিন্ডিকেট সহ অন্যান্য কারবারিরা এখনো সোচ্চার।শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ বুুুধবার এ প্রসঙ্গে বলেন-‘ আমার উপর হামলাকারি ইকবাল সিন্ডিকেটের বাড়িও আমার একই এলাকায়। ইকবাল সিন্ডিকেটের প্রধান ইকবালের ঘরে তার ভাই ভুট্টোর বিবাহ উপলক্ষে তিন দিন ব্যাপি যে আলীশান অনুস্টানের আয়োজন করা হয় তার খবর আমি যথারিতী উখিয়া থানা পুলিশ থেকে শুরু করে উখিয়ায় কর্মরত আইন শৃংখলা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তা ও সদস্যদেরও অবহিত করেছিলাম।’ অথচ আগাম খবর দেওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁর প্রশ্ন- এ বরকম হলে ইয়াবা কারবার আদৌ বন্ধ হবে কিনা ? অধ্যাপক
মোজাফ্ফর জানান, তাঁকে হামলার জন্য ৫ জন সশস্ত্র ইয়াবা কারবারির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল উখিয়া থানায়। ওই মামলার সব আসামীই হচ্ছেন ইয়াবা কারবারি ইকবাল সিন্ডিকেটের সদস্য। ইকবালের নির্দ্দেশেই তাকে শায়েস্তা করতে চালানো হয়েছিল পরিকল্পিত হামলা। গত ২২ জানুয়ারির আলিশান বিয়ের খবর অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরো জানা গেছে, উখিয়ার রতনাা পালং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি করইবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আলী আহমদের পুত্র ইয়াবা কারবারি ইকবাল হোসেনের (৩৪) বিরুদ্ধে ৯ টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে রামু থানায় রয়েছে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলা নং-০৬ তাং-০৩-১০-২০১৪খ্রীঃ। উখিয়া থানায় রয়েছে ৫ টি মাদক দ্রব্য আইনের মামলা, একটি নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা এবং অপর ২টি হত্যা প্রচেষ্টা সহ চুরির মামলা। উখিয়া থানায় ইয়াবা কারবারি ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো হচ্ছে যথাক্রমে ৫ টিইয়াবা মামলা-নং-৪১/১০৩ তাং-২২-০২-২০২০, নং-০১/তাং-০১-১২-২০১৮, ০৭/ তাং-০৫-০৫-২০১৭,১৫/১৭-১২-২০১৫, ১৩/ ১৭-১১-২০১৫, নারী ও শিশু
নির্যাতন মামলা নং-০৩/০২-১০-২০১১, হত্যা প্রচেষ্টা মামলা নং-১৩/১৫-০৬-২০১৩ ও ০৩/০৩-০৮-২০১১ খ্রীঃ।
এদিকে ইয়াবা কারবারি ইকবালের ভাইয়ের আলিশান বিয়ে সহ ইয়াবাসহ সিন্ডিকেটের বিষয়টি সংবাদপত্রসহ অনলাইন গুলোতে প্রকাশিত হওয়ার পর সিন্ডিকেট সদস্যরা বিভিন্ন মহলে দেন-দরবার চালিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের বাঁচাতে।