তৌহিদ আহাম্মেদ রেজাঃ
কক্সবাজার ঘিরে বাবার স্বপ্নের স্মৃতিচারণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
কক্সবাজারকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর নানা স্বপ্ন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে কক্সবাজারকে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৯ আগস্ট) গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজারের প্রতি জাতির পিতার আলাদা আকর্ষণ ছিল। তিনি তো জেলখানায় থাকতেন বেশিরভাগ সময়। কিন্তু যখন তিনি জেলের বাইরে থাকতেন, তখন প্রতিবছর শীতকালে আমাদের নিয়ে একবার কক্সবাজার বেড়াতে যেতেন। তখনকার কক্সবাজারের অবস্থা এ রকম ছিল না। তখন ছোট ছোট কটেজ ছিল, কাঠের ঘর ছিল। সেই কটেজ ভাড়া করে থাকতে হতো। এমনকি আমরা তার সঙ্গে উখিয়াতে গেছি। তখন ঘন জঙ্গল ছিল উখিয়াতে। উখিয়াতে জঙ্গলের পথ বেয়ে আমাদের যেতে হয়েছে। আমরা সেখানে ডাকবাংলোতে ছিলাম। রাতের বেলায় বাঘের গর্জন, পাখির ডাক, হাতির ডাক সবই শোনা যেত। সেখানে হাতি আসতো, বাঘের ডাক শোনা যেত, এতো ঘন জঙ্গল সেখানে ছিল যদিও এখন তার চিহ্ন মাত্র নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে যে বড় ঝাউবনটি দেখেন সেটাও কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের করা। কক্সবাজারে যে সি-বিচ, পৃথিবীর কোনো দেশে এতো লম্বা বালুকাময় সি-বিচ নেই। ৮০ মাইল লম্বা সি-বিচ। এটাকে আরও উন্নত করে আকর্ষণীয় করা এবং পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা তার (বঙ্গবন্ধুর) একটা স্বপ্ন ছিল। আমরা স্পিড বোটে এক সময় মহেশখালী যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আমার আব্বার সঙ্গেই। কিন্তু হঠাৎ সাগর খুব উত্তাল হয়ে যাওয়ায় আমরা যেতে পারিনি। কিন্তু পরবর্তীকালে আমরা সব জায়গায় গিয়েছি, কুতুবদীয়া, মহেশখালী বদরখালী থেকে শুরু করে টেকনাফ সব জায়গায় ঘুরেছি। আমরা সেন্টমার্টিনও গিয়েছি। সব মিলে কক্সবাজারকে নিয়ে জাতির পিতার অনেক আকাঙ্ক্ষা ছিল, স্বপ্ন ছিল। কক্সবাজার একটা আন্তজাতিকমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠবে, দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আসবে, যেটা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে আর বাংলাদেশ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবে। এটাই তার স্বপ্ন ছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, কক্সবাজারে আরও সুপরিসর বিমান যেন নামতে পারে সেভাবে কক্সবাজার এয়ারপোর্টকে উন্নত করবো। আমাদের মনে এটাই ছিল এটাকে আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরে উন্নীত করবো।
ভবিষ্যতে এই কক্সবাজারই হবে দেশের অর্থনৈতিক প্রাণ কেন্দ্র জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই এয়ারপোর্ট সম্প্রসারণ হলে আমি মনে করি, প্রাশ্চাত্য থেকে প্রাচ্যে বা প্রাচ্য থেকে প্রাশ্চাত্যে যতো প্লেন যাবে এসব বিমানের রিফুইলিংয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক জায়গা হবে এই কক্সবাজার।
বেবিচক সূত্র জানায়, দেশে প্রথমবারের মতো সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর নির্মিতব্য এ রানওয়ের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যার পুরোটাই অর্থায়ন করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হলে কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। রোববার (২৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করবেন।