সহিদুল ইসলামঃ
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় নিজ কর্মস্থলসহ বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে হয়রানি ও কটুক্তির শিকার হচ্ছেন ইউএনওসহ নারী কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণের উদ্দেশ্যে সরকারি জমি দখলমুক্ত করেন ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা। সেটিই কাল হয় তার জন্য-
একের পর এক আসে হুমকি। সবশেষ ফেসবুকেও চলে এ নারী কর্মকর্তার চরিত্র হরণের চেষ্টা। নারীদের কর্মপরিবেশ নিরাপদ করার দাবি ভুক্তভোগী এ ইউএনও’র।
এদিকে কাজের ক্ষেত্রে একই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন ওই উপজেলায় কর্মরত বাকি নারী কর্মকর্তারাও। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নারীদের হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে বলে মনে করে মহিলা পরিষদ। তবে জেলা প্রশাসক বলছেন, কর্মক্ষেত্রে নারীরা হয়রানির শিকার হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রশাসনিক ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ উপজেলা। সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় এ পর্যায় থেকেই। সরাসরি মানুষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করতে হয় ইউএনওদের।
সামলাতে হয় স্থানীয় নানা সমস্যা থেকে শুরু করে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। দেশের ৬৪টি জেলার ১৪৯টি উপজেলায় ইউএনও’র দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। সুতরাং তাদের সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে কর্মপরিবেশ নিরাপদ করা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ হচ্ছে কয়েকটি ধাপে। পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় প্রায় ৫০০ ঘর নির্মাণ ও বিতরণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের ঘরগুলো নির্মাণে জায়গা সঙ্কট থাকায় দখলকৃত সরকারি জমি উদ্ধারে নামেন ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা।
পিরোজপুরের কাউখালীর ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা
তিনি জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী ও ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে সরকারি জমি দখলমুক্ত করার পর থেকেই বিভিন্ন সময় তাকে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। শুধু তাই নয়, একটি প্রভাবশালী চক্র প্রতিনিয়ত দিচ্ছে হুমকি। সবশেষ অস্ত্র হিসেবে চক্রটি বেছে নিয়েছে ফেসবুককে। একের পর এক বাজে পোস্ট করে চলছে তার চরিত্র হরণের চেষ্টা। এ অবস্থায় কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান ইউএনও রেখা।
একই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাত আরা তিথি বলেন, আমরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে গেলে কিছু প্রভাবশালী নেতা আইনি প্রক্রিয়ায় আমাদের সঙ্গে না পেরে চরিত্র হরণের চেষ্টা করছে। যা দুঃখজনক।
নারী কর্মকর্তাদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুসরাত জাহানও।
এদিকে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে নারীর ক্ষমতায়নকে দুর্বল ও পিছিয়ে ফেলা হচ্ছে বলে মনে করেন পিরোজপুর জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সালমা রহমান হ্যাপী। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশের দাবি জানাচ্ছি। নারীরা আজ প্রায় কর্মক্ষেত্রেই নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। কাউখালীর ঘটনায় যারা জরিত সবার বিচারের দাবি করছি।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে নারীরা হয়রানির শিকার হলে কোনো ছাড় নয়। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পিরোজপুরে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, তিনজন ইউএনও এবং সহকারী কমিশনারসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে নারী কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy