কলাপাড়ায় ডাক্তার-নার্সের খামখেয়ালিতে প্রাণ গেল মা-নবজাতকের
কলাপাড়া পটুয়াখালী প্রতিনিধি,
কলাপাড়ায় ভুল চিকিৎসা ও ডাক্তার-নার্সদের খামখেয়ালিতে এক নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৮ জুন) সকালে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। এর আগে, শনিবার মৃত্যু হয় তার সদ্যজাত সন্তানের।
মৃত রুনা বেগম (২০) ওই উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের টুঙ্গিবাড়িয়া গ্রামের জসিমের স্ত্রী।
রুনার স্বামী জসিম জানান, শুক্রবার বিকেলে তার স্ত্রী প্রসব বেদনায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করি। ওই সময় চিকিৎসা করাতে গিয়ে নার্সরা তার নিম্নাঙ্গের একপাশ কেটে ফেলে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রুনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে ওই হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জে এইচ খান লেলীনের মালিকানাধীন কলাপাড়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই সিজারের মাধ্যমে রুনার সন্তানের জন্ম হয়। পরদিন সকালে শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ওইদিনই তার মৃত্যু হয়।
অপারেশন থিয়েটারে ডা. জে এইচ খান লেলীনের ছাড়াও ডাঃ পার্থ সমদ্দার ছিল। তিনি কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসক না থাকা সত্ত্বেও ডা. জে এইচ খান লেলীনের সাথে অপারেশন করে থেকে বলে জানা যায়।
এদিকে প্রসূতি রুনা বেগমের পেট ফোলা ও শ্বাসকস্ট বেড়ে যাওয়ায় রোববার রাতে তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সোমবার ভোরে সেখানে তিনি মারা যান।
রুনার স্বামীর অভিযোগ, কলাপাড়া হাসপাতালে রুনা যন্ত্রণায় চিৎকার করলে নার্সরা তাকে চড়-থাপ্পড় মারে। এমনকি সিজারের পর সেলাই না করে সার্জিক্যাল টেপ দিয়ে তার কাটা স্থান আটকে দেয় তারা। এছাড়া জন্মের পর নবজাতকের মাথায় ক্ষত দেখা গেছে। মা ও সন্তানের এত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ডাক্তার-নার্সরা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা খামখেয়ালি না করলে মা-সন্তান দুজনই বেঁচে থাকতো।
কলাপাড়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নার্স আলো বেগম বলেন, নিম্নাঙ্গ কাটা অবস্থায় আমাদের ক্লিনিকে রোগী নিয়ে আসা হয়েছে। তখন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এখানে তিন ব্যগ রক্ত দেয়া হয়।
এ বিষয়ে ডা. জেএইচ খান লেলীনকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার চেম্বারও বন্ধ পাওয়া গেছে।
ডা. জেএইচ খান লেলীনের বিরুদ্ধে এর আগেও রোগীর প্রতি অবহেলা, রোগী লাঞ্ছিত ও বাণিজ্য অভিযোগ রয়েছে। অজ্ঞাত কারণে পার পেয়ে যায়।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলদার বলেন, বিষয়টি কিছুক্ষণ আগে আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।