গাইবান্ধা,প্রতিনিধিঃ-
বাংলাদেশের মানুষ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও ঘাটতি রয়েছে পুষ্টিতে। পুষ্টির ঘাটতির অভাবে অনেকে রাতকানা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
আর এই পুষ্টির চাহিদা মেটাতে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কড়াইবাড়ি সহ বিভিন্ন গ্রামে চাষ হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল কমলা শাঁসযুক্ত উন্নত জাতের বারি মিষ্টি আলু ১২ জাত। ফলে চর এলাকায় পুষ্টির ঘাটতি পুরন হবে। মিষ্টি আলু লাভজনক ও পুষ্টি সমৃদ্ধ হওয়ায় এটা চাষ করে স্বাবলম্বী হতে চাচ্ছে কামারজানির কড়াইবাড়ী গ্রামের কৃষক রবিজল হক। শুধু তাই নয় চাষাবাদ করে কৃষক রবিজল হকের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন। তিনি ৭জন সদস্যের মুখে অন্ন জোগান। দেশীয় মিষ্টি আলুর থেকে কমলা শাঁসযুক্ত মিষ্টি আলুতে পুষ্টি গুন যেমন বেশি তেমনি ফলন দ্বিগুন। এটাতে ভিটামিন-এ, বি, সি সহ ২৩ টি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। দেশী মিষ্টি আলু প্রতি শতাংশে ১ থেকে দেড় গুন চাষ হলেও এটি প্রতি শতাংশে ৩ থেকে সাড়ে ৩ গুন মন ও ৩৫ থেকে ৪০ মন টন আলু উৎপাদন হয়৷ সে সাথে উৎপাদন খরচ প্রতি কেজিতে ৫ টা থেকে সাড়ে ৫ টাকা খরচ হয় ও বাজারে প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা তারা বিক্রি করে থাকে।
কৃষক রবিজল হক জানান- কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য কমলা শাঁসযুক্ত মিষ্টি আলু চাষ করছি। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর আমার এক আত্বীয়র ৪০ শতাংশ জমিতে আমি প্রথম চাষ শুরু করি। এটার ফলন বেশি। আশা করছি এটা বিক্রি করে লাভবান হবো। বাজারে এটা ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এর আগে তিনি পাট, ভুট্রা চাষ করেছেন।
গাইবান্ধা বিএআরআই সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান- প্রযুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে দীর্ঘ পাঁচ বছর হলো চরাঞ্চলে কাজ করছেন। এরমধ্যে কমলা সাহিত্য মিষ্টি আলু অন্যতম। বাড়ি মিষ্টি আলু ৪, ৮,১২,১৩,১৪,১৫ এর উপর কাজ করছি। পুষ্টির ক্ষেত্রে সুপার ফুড এটি। এটায় ভিটামিন-এ, বি, সি ও আয়রন সহ ২৩ টি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এতে করে বিজ্ঞানীরা এটাকে সুপারফুড হিসেবে আখ্যায়িত করছে। দেশী মিষ্টি জাতের আলু থেকে এর ফলন দ্বিগুণ। প্রতি শতাংশে ৩৫ থেকে ৫০ টন মণ উৎপাদন হয়।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান জানান- কমলা শ্বাসযুক্ত মিষ্টি আলু গাইবান্ধার কামারজানি সহ বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ হচ্ছে। মিষ্টি আলু লাভজনক ও পুষ্টি সমৃদ্ধ। মিষ্টি আলু চাষে উর্বর জমি লাগেনা। বালু বা যে কোনো মাটিতে চাষ হয়। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও পুষ্টিতে ঘাটতি রয়েছে। চর এলাকার এই মিষ্টি আলু খেলে সেই ঘাটতি পুরন হবে। এ জাতের আলু সম্প্রসারিত করা উচিৎ। এতে করে চর এলাকার মানুষের কিছুটা হলেও ঘাটতি পুরন হবে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গন উন্নয়ন কেন্দ্র, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এর যৌথ সমন্বয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ ও মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছি।