তৌহিদ আহাম্মেদ রেজাঃ
কারাগারে নিঃসঙ্গ বাবর, বছরের পর বছর খোঁজ নিচ্ছে না কেউ
চোখে সোনালি রঙের চশমা, পরনে সাদা পাঞ্জাবি; হাতে একটি রকেট লঞ্চার। এটি নেড়েচেড়ে দেখছেন আর রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে বিশাল অস্ত্রের চালান আটক হওয়ার পর তা দেখতে পরদিন চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইনস মাঠে যান তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
সেই সময় এমনই একটি ছবি তোলা হয়, এটি গণমাধ্যমে বহুবার ছাপা হয়েছে। এ ছবি তোলার কিছুক্ষণ পরই আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লুৎফুজ্জামান বাবর মন্তব্য করেন, এ অস্ত্র আনার সঙ্গে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের যোগসূত্র থাকতে পারে। তবে এখন আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ নয়, তিনি নিজেই এর সঙ্গে জড়িত। আদালতের রায়ে বাবরসহ ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে।
গত এক যুগের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে নিঃসঙ্গ জীবন কাটছে এক সময়ের প্রভাবশালী এ নেতার।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নভেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত তার পরিবারের সদস্য বা আইনজীবীদের কেউ বাবরকে দেখতে কারাগারে যাননি। এমনকি বিএনপি কোনো নেতাকর্মী বা তার নিকটাত্মীয়রাও তার কোনো খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না।
জানা গেছে, বাবরের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে গুলশানের বাসায় থাকেন। তার বড় ছেলে আগে দেশের বাইরে থাকলেও এখন দেশে আছেন। তিনিই পরিবারের দেখভাল করেন। তবে অদৃশ্য কারণে বিগত প্রায় দুবছরের বেশি সময়ে বাবরের সঙ্গে দেখা করেননি তারা।
এদিকে বাবরের পরিবারের পক্ষ থেকে বিএনপির হাইকমান্ডকে তার (বাবর) সাজা মওকুফ কিংবা মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে জানালেও তারা সেটা কর্ণপাত করেনি। যেন সবার কাছেই প্রায় অচ্ছুত হয়ে পড়েছেন সাবেক এ বিতর্কিত নেতা।
এছাড়া তারেক রহমানের অপরাধ সঙ্গী হওয়ায় অনেকেই ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে বাবরের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না বলেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে কারাগার সূত্রে জানা গেছে, দুটি আলোচিত মামলায় ফাঁসির রায় মাথায় নিয়ে কারাগারে বাবর স্বাভাবিকই আছেন।
বিএনপি সরকারের সময়ের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের সাত বছর পর ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়।
এর চার বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বাবরসহ ১৯ জনের ফাঁসির রায় দেন আদালত।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy