ওয়াকিল আহমেদ,
জয়পুরহাটের কালাইয়ে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে জহুরুল ইসলাম (৩৮) নামে একজনকে আসামি করে কালাই থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে একই দিন দুপুরে ঘটনাটি ‘ধামাচাপা দিতে’ সালিশের আয়োজন করে গ্রাম্য মাতবররা। কিন্তু অভিযুক্ত উপস্থিত না থাকায় পরে সালিশ বাতিল করা হয়।
মামলার আসামি জহুরুল ইসলাম উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের মাস্তর চান্দারপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে। তিনি পোশায় একজন অটোরিকশা চালক। তিনি পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে অন্য বাড়িতে টিনের ঘর ছাউনি দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন শিশুটির বাবা। দুপুরের দিকে শিশুটির মা তাকে বাড়িতে রেখে স্বামীর কাছে যান। এ সময় শিশুটি বাড়িতে একাই ছিল। এ সুযোগে জহুরুল ইসলাম ওই বাড়িতে ঢুকে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন।
মামলার বাদী ও নির্যাতিত শিশুর বাবা জানান, কাজ শেষে দুপুরে বাড়িতে ঢুকে তিনি মেয়েকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তার কাছ থেকে ঘটনা জেনে গ্রামের লোকজনদের জানান। তখন গ্রামের মাতবর ছফির উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, ছুমির ফকির, আলতাব হোসেন সরদার, আমিরুল খান ও ছাত্তার খান শিশুটির বাবা-মাকে ঘটনাটি জানাজানি করতে নিষেধ করেন। তারা সবাই মিলে রাতে সালিশ করে এ ঘটনার মীমাংসা করে দেবেন বলেও আশ্বাস দেন।
নির্যাতিত শিশুটির বাবা আরও জানান, এরপর তিনি স্থানীয় একটি ফার্মেসি থেকে কিছু ওষুধ এনে মেয়েকে খেতে দেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে গ্রামে সালিশ বসান মাতবররা। ওই সালিশে তারা উপস্থিত হলেও জহুরুল ইসলাম অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে মাতবররা সালিশ বাতিল করেন। পরে রাতেই তিনি জহুরুলকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির বাবা জানান, রাতে মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তাকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। পরে চিকিৎসকরা শিশুটিকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে পাঠান।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. নুর আলম বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই শিশুটিকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ওই গ্রামের মাতবর হেলাল উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি মীমাংসার জন্য রাতে আমরা সবাই মিলে সালিশে বসেছিলাম। কিন্তু জহুরুল সালিশে না আসায় সেটা সম্ভব হয়নি। পরে আমরা সবাই মিলে ওই শিশুর পরিবারকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেই। জহুরুল আগেও চার-পাঁচবার একই কাজ করেছে। তার শাস্তি হওয়া দরকার।
কালাই থানার ওসি সেলিম মালিক বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে একজনকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ঘটনা ‘ধামাচাপা দিতে’ সালিশের আয়োজনে প্রসঙ্গে ওসি বলেন, যদি ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে সালিশ বসে থাকে তাহলে তদন্ত করে সালিশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy