রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, কালুরঘাট ব্রিজটি দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগের জন্য অপরিহার্য। এটি অনেক পুরানো ব্রিজ। এখানে রেলপথের সঙ্গে সড়ক যুক্ত হয়েছিল। আমাদের যে ওয়েটের ইঞ্জিন বা লোকমেটিভ ছিল তা ১২ টনের। অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল ব্রিজটি। এ কারণে ব্রিজটির স্ট্রেন্থ (ক্ষমতা) যাতে বাড়ানোর যায় সেটার জন্য আমরা প্রকল্প গ্রহণ করেছি।
ইতোমধ্যে যার কাজ চলমান আছে। আমাদের পরিকল্পনা বা মূল টার্গেট ছিল ১৫ টনের ইঞ্জিন যাতে চলে। তা চলতে পারবে এবং সেটি আগামী ২০ বছর ঝুঁকিমুক্তভাবে চলতে পারবে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় মন্ত্রী কালুরঘাট ব্রিজের পশ্চিম প্রান্ত থেকে পায়ে হেঁটে সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। এরপর ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে এসে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ ব্রিজটি বাদ দিয়েও এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি নতুন একটি ব্রিজের। আমরা আশা করছি সেটির কাজ আগামী বছর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করতে পারবো। সে ব্রিজে ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথ এবং ফোর লেনের সড়ক থাকবে। এ নতুন ব্রিজ না হওয়া পর্যন্ত কালুরঘাট ব্রিজটিকে যাতে ব্যবহার করতে পারি সেইভাবে আপডেট করা হচ্ছে।’
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন দিয়ে ট্রায়াল রান করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ নভেম্বর উদ্বোধনের পূর্বেই দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ পরিপূর্ণভাবে তৈরি হয়েছে কি না আনুষ্ঠানিকভাবে এবং সরকারিভাবে নিশ্চিত হতে এ ট্রায়াল রান দেওয়া হবে। তার পূর্বে কালুরঘাট ব্রিজে ট্রেন চলাচলের উপযোগী হয়ে যাবে। হয়তো ছোটকাট কিছু কাজ থাকতে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এই কালুরঘাট ব্রিজ দিয়ে এদিকে ট্রেন যায় সঙ্গে যানবাহনও চলাচল করে। এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে পথচারীদের জন্য আলাদা করে ব্রিজের একপাশে ৬ ফিটের একটি আলাদা লেন বা ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে দিচ্ছি। যেটি আগে ছিল না। আগে ব্রিজের মূল কাজ হয়ে যাক। ওয়ার্কওয়ে করতে হয়তো এক দেড় মাস সময় লাগবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্রড গেজ ট্রেন এখন চালাতে পারবো না। ঢাকাকে মূল ফোকাসে রেখে দেশের আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ করেছি। এদিকে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে দোহাজারী থেকে চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে লাকসাম এবং আখাউড়া থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ করা হবে। এটি ধীরে ধীরে হবে। এই সময়ের মধ্যে আশা করছি কালুরঘাটে যে নতুন ব্রিজ করতে যাচ্ছি তা হয়ে যাবে।’
এরপর রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন সড়কপথে গাড়িযোগে দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত হন এবং দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পযন্ত নবনির্মিত রেলপথ ট্রলিযোগে সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এসময় তার সাথে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা, সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্তসহ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।