কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম রেণু হাইকোর্ট থেকে স্বপদে বহালের আদেশ পান। এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আজ রবিবার দুপুরে ঢাকা থেকে পাকুন্দিয়ায় আসেন। সমর্থকসহ তিনি পাকুন্দিয়া সদরে আসার আগেই প্রতিপক্ষ সংসদ সদস্যের গ্রুপটি উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নেয়।
তারা সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের নামে বিভিন্ন শ্লোগানও দেয়। এক পর্যায়ে দেশিয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেলে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উল্লেখ্য, পাকুন্দিয়ায় ১৯৯৯ সালে সংঘটিত মুক্তিযোদ্ধা সেলিম হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামী হওয়ায় গত ৫ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেণুকে সাময়িক বরখাস্ত করে। পরে পাকুন্দিয়ার সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও পৌরসভার মেয়র অনাস্থা দিলে গত ৬ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ চেয়ারম্যান পদ থেকে তাকে অপসারণ করে পদটি শূন্য ঘোষণা করে।
এছাড়া ফেসবুকে স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের ব্যক্তিগত সহকারী আমজাদ হোসেন লিটন বাদী হয়ে ২৪ মে কটিয়াদী থানায় রফিকুল ইসলাম রেণুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলাও দায়ের করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রফিকুল ইসলাম রেণু হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করলে হাইকোর্ট তার বরখাস্তের আদেশ স্থগিত ঘোষণা করেন। পরে ৯ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকেও হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন লাভ করেন।
বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের সমর্থক জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের উপদেষ্টা আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ বলেন, সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের নেতৃত্বে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বিশ্বাসী। কিন্তু রফিকুল ইসলাম রেণুর সমর্থকরা অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে উপজেলা পরিষদে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। জনতা সেটা প্রতিহত করেছে।
অপরদিকে রফিকুল ইসলাম রেণু বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন ও লুটপাটে বাধা দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকেও সংসদ সদস্যের বাড়িতে ডেকে নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করাতে বাধ্য করা হয়েছিল বলে তিনি অভিযোগ করেন। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।