স্টাফ রিপোর্টার
লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলপথের কাকিনা রেলস্টেশন থেকে এক কিশোরীকে কৌশলে নিয়ে গিয়ে সাতজন মিলে ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় ওই সাতজনসহ শনিবার ১০ জনের নাম উল্লেখ করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে ওই কিশোরী। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত পেশায় ইজিবাইক চালক রকি উপজেলার বাণীনগর এলাকার রজব আলীর ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের বাণীনগর এলাকায়। রকিকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ধর্ষণের শিকার কিশোরীরেও চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে। তার বাড়ি জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নে। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে।
পুলিশ জানায়, দলবদ্ধ এ ধর্ষণের ঘটনায় রকিসহ সরাসরি জড়িত হিসাবে সাতজনের নাম এসছে। এদিকে সালিশকারী হিসাবে বাণীনগর এলাকার রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা সোলায়মান আলী, তুষভান্ডার ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম এবং স্থানীয় একটি অনলাইনের সম্পাদককে আসামি করা হয়েছে।
ওই কিশোরী জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে ট্রেনে পাটগ্রাম থেকে এসে কালীগঞ্জের কাকিনা রেল স্টেশনে নেমে একটি দোকানে খাওয়ার জন্য ঢোকে। কৌশলে রকি তাকে আর ট্রেন ধরতে না দিয়ে ইজিবাইকে গন্তত্যে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে সেখান থেকে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে রাতে একটি সেচপাম্পের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর সারারত আরও কয়েকটি জায়গায় একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ শেষে ভোরের দিকে ট্রাকে উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এতে বাধ সাধে সে। সকালে খোঁজ নিয়ে রকির বাড়িতে বিচার নিয়ে গেলে বাবা-মায়ের সামনে তাকে মারধরও করা হয়। পরে সেখান থেকে স্টেশন এলাকার একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় কিশোরীটি। তাকে পুলিশের কাছেও আসতে দেওয়া হচ্ছিল না। গত শুক্রবার সকালে তাকে দুই হাজার টাকা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়।
লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘কাকিনা রেল স্টেশন থেকে মেয়েটিকে প্রলোভন দেখিয়ে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে অন্তত সাতজন ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর থেকে মেয়েটি কান্নাকাটি শুরু করলে ওই এলাকায় সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করা জরিমানাও মেয়েটিকে না দিয়ে সেখান থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়’।
কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ফরহাদ হোসেন মন্ডল জানান, বাণীনগর এলাকার রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা সোলায়মান আলীর বাড়িতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলামের বাড়িতে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ফলে তারাও এ ঘটনার মামলায় আসামি হয়েছেন।
Surjodoy.com