রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক;
কুড়িগ্রামে মাথাপিছু মাত্র ১৩০ টাকা খরচ করে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরপি) পদে চাকরির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ৪৩ জন। এদের মধ্যে ৬ জন নারী এবং ৩৭ জন পুরুষ।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) দিনভর মনস্তাত্ত্বিক মৌখিক পরীক্ষা শেষে ওইদিন রাত ১১ টার দিকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত ৪৩ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে এই ৪৩ জনের প্রাথমিকভাবে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। এরপর পুলিশ বিভাগের খরচে তাদের আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বিনা খরচে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা শেষে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ অফিসার (আরও) এসআই . রাসেল মাহমুদ।
তিনি আরও জানান, কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন্স মাঠে গত ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর এই তিনদিন পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে চাকরি করতে আগ্রহী প্রার্থীদের শারীরিক মাপ ও শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। এতে এক হাজার ৭২০ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৩৪৪ জন উত্তীর্ণ হন।
এরপর ১৭ নভেম্বর মাপে ও শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৪০ জন।
এরপর বুধবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দিনভর মৌখিক মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা শেষে ৪৩ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
এছাড়া ওয়েটিং লিস্টে কয়েকজনকে রাখা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষায় কেউ উত্তীর্ণ না হলে-সেক্ষেত্রে এই তালিকায় থাকাগণ ক্রমানুসারে সুযোগ পাবেন।
এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন একজন পূর্ণিমা রানী মন্ডল। রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের রামমিং গ্রামের অধিবাসী স্বর্গীয় অজিত কুমার মন্ডলের দু’সন্তানের মধ্যে পূর্ণিমা রানী মন্ডল বড়। তার ছোট ভাই অপূর্ব মন্ডল পার্থ নবম শ্রেণির ছাত্র। পূর্ণিমা বর্তমানের নাটোরের আব্দুলপুর সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
পূর্ণিমা রানী মন্ডল জানান, জমিজমা তেমন নেই। মা উর্মিলা রানী মন্ডল অনেক কষ্টে সংসার এবং দুই ভাইবোনের লেখাপড়া খরচ চালান। কখন টাকার অভাবে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে-এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এ অবস্থায় পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ায় খুব খুশি।
তিনি আরও জানান, এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তার খরচ হয়েছে মাত্র ১৩০ টাকা। এরমধ্যে ব্যাংক বাবদ ১০০ টাকা এবং অনলাইনে আবেদন পাঠানো বাবদ ৩০ টাকা খরচ হয়েছে।
চিলমারী উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের নয়ারহাট ইউনিয়নের উত্তর ফেচুকা চরের কৃষক আব্দুল গফুরের সন্তান আবু সায়েম জানান তারও খরচ হয়েছে ১৩০ টাকা। এছাড়া যাতায়াত এবং খাওয়া খরচ বাদে আর কোন টাকাপয়সা লাগেনি। এভাবে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির জন্য নির্বাচিত হওয়ায় খুব খুশি। পুলিশ কনস্টেবল পদে এই চাকরি পাওয়ায় গর্বিত বলেও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আগে থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে কোনো ধরনের দালাল মাধ্যম কিংবা যে কোনভাবে তদবির করলে তাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছিল। ফলে এর সুফল পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, শারীরিক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছতার মাধ্যমে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগে এখানকার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এজন্য তারাও খুব খুশি বলে জানান তিনি।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy