কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় তিস্তা নদীর ভাঙন তান্ডবলীলায় ২শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে এবং কয়েক’শ একর আবাদী জমিও নদীতে ভেঙে গেছে। ভাঙনকবলিত এই মানুষ জনদের আহাজারীর শেষ নেই। নিমিশেই নদীতে ভেঙে যাচ্ছে শতশত বসতবাড়ি।
সদ্য নদী ভাঙনের শিকার পরিবারের স্থান এখন খোলা আকাশের নিচে। অনেকেই জানেননা এখন তারা কোথায় আশ্রয় নিবেন। এদিকে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে ভাঙন ঠেকাতে পাউবো’র পদক্ষেপ থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারনে এখনো বরাদ্দ কৃত জিও ব্যাগ নদীতে ফেলানো হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছেন, ভাঙন ঠেকাতে ভাঙনকবলিত এলাকায় কয়েক হাজার জিও ব্যাগ নদীতে ফেলানো হবে।
চিলামারী উপজেলার পাত্রখাতা শেষ সীমান্ত ও পার্শ্ববর্তী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কারেন্ট বাজার এলাকায় এই তান্ডবলীলায় গত ১ সপ্তাহে ২ শতাধিক ঘরবাড়ি তিস্তার পেটে চলে গেছে । তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন এই ভাঙন দীর্ঘ কয়েকমাস থেকে চলছে কিন্ত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় কেউ আমলে নেয় নি । যার ফলে কয়েকশ একর জমি নদীতে গেছে।
এদিকে হুমকির মুখে রয়েছে মন্ডলেরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদারীপাড়া মন্ডলেরহাট নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ্ দাখিল মাদ্রাসা। নদী ভাঙন রোধ করতে না পারলে এই প্রতিষ্ঠান গুলোও নদীতে বিলিন হতে পারে বলে জানিয়েছেন পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ্ দাখিল মাদ্রাসার সুপার।
নদী ভাঙনের স্বীকার বাহারউদ্দিন বলেন, ‘শ্যাষ জায়গাটুকুও রক্ষা করবের পাই নাই।নদী তো ভাঙ্গি নিলো এহন আমরা কই যামো, বউ ছাওয়া নিয়ে থাকমো কই।’ ‘চোখের সামনে এমন ভাঙন এর আগে দেখি নাই বাবা, সরকার কি হামার দিকে দেখে না। বস্তাত (জিও ব্যাগ) বালু ভরে রাখছে নদীত আর ফেলায় না!
এমন অভিযোগও করেন পঞ্চাশোর্ধ এই ব্যক্তি। শুধু বাহার উদ্দিনই নয় ওই এলাকার গনি, সুবল, নয়া তারাও এমন অভিযোগ করে বলেন, ‘সময়মতো জিও ব্যাগ ফেলানো হলে হয়তো এতোটা ভাঙন থাকতো না। আজ আমাদের বাড়িঘর সরানো লাগত না।’ ‘এমন ভাঙনের মুখে ঠিক একটু দুরে ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলে জিও ব্যাগ ভরাট করছেন ঠিকাদারী ওই প্রতিষ্ঠান তবে ভাঙন রোধে এমন দৃশ্য কতটুকুই বা ভূমিকা রাখবে বলে ক্ষোভ জানায় রফিকুল ইসলাম।
পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ্ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও. আ. আজিজ আকন্দ বলেন, ‘নদী ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শত শত মানুষ আজ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় দ্রুত এর প্রতিকার করা না হলে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কয়েকটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে, হুমকির মুখে পড়বে চিলমারী উপজেলা সদরও।’
‘ভাঙনরোধে ওই এলাকায় ৭০ হাজার জিও ব্যাগ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গণনা শেষ হলে খুব দ্রুত জিও ব্যাগ নদীতে ফেলানোর কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী কুড়িগ্রাম আব্দুল্লাহ আল মামুন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy