কুড়িগ্রামে বাড়ছে সংক্রমণ, জোন ভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত;
রেখা মনি,নিজস্ব প্রতিবেদক: আমার কাছে
Facebook Twitter share
কুড়িগ্রামে মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলাফেরার প্রবণতা বাড়ার সঙ্গে করোনা সংক্রমণের মাত্রাও বেড়ে চলেছে।
গত এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ মাত্রা গত ছয় মাসের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলেও মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বরং সরকারি কিংবা বেসরকারি অফিসগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই মিলছে কাঙ্ক্ষিত সেবা। বিভিন্ন গণপরিবহন, সড়ক কিংবা বাজারে মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে মানুষ।
Surjodoy.com
এ অবস্থায় জেলার সংক্রমিত এলাকা ম্যাপিং করে সংক্রমণ বিবেচনায় জোন ভিত্তিক লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। রবিবার (১৩ জুন) জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রেজাউল করিম এই তথ্য জানিয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত এক সপ্তাহে (৫ জুন থেকে ৫ জুন পর্যন্ত) জেলায় ১৭৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে গত ১২ জুন ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয় যা গত ছয় মাসে সর্বোচ্চ। এ অবস্থায় সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই বলে মনে করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
The Daily surjodoy
স্বাস্থ্য বিভাগ আরও জানায়, জেলার সদর উপজেলায় সংক্রমণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত ৭০ জনের মধ্যে ৫৩ জনই সদর উপজেলার বাসিন্দা।
এদিকে জেলা শহরের ব্যাংকসহ বিভিন্ন অফিস ও বিপণিবিতানগুলোতে দেখা গেছে, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বিভিন্ন ধরনের সেবা গ্রহণ করছেন। সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা, বেশির ভাগ মানুষকে মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। একই অবস্থা গণপরিবহনসহ ছোট যাত্রীবাহী যানগুলোতেও।
The Daily surjodoy
জেলায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন। সংক্রমণ বিবেচনায় জেলার বিভিন্ন এলাকা ম্যাপিংয়ের ব্যবস্থা নিয়েছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই দুই বিভাগ।
সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘করোনা থেকে বাঁচতে হলে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাস্ক পরিধানের কোনও বিকল্প নেই। সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আমরা আগামীকাল (১৪ জুন) জরুরি মিটিংয়ে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
The Daily surjodoy
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, জেলা থেকে ছেড়ে যাওয়া পরিবহনের সংখ্যা ও গণপরিবহনে যাত্রী পরিবহনসহ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মালিক সমিতিকেও এ ব্যাপারে সহায়তা করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন মার্কেটে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
The Daily surjodoy
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা ম্যাপিংয়ের কাজ শুরু করেছি। জেলার কোন অঞ্চলগুলোতে সংক্রমণের মাত্রা বেশি সেটা নির্ণয় করে আমরা জোন ভিত্তিক পৃথক পৃথক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে জেলা করোনা সংক্রান্ত কমিটির মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
The Daily surjodoy
‘পুরো শহর বা জেলা লকডাউন করে কার্যকর করতে না পারলে লাকডাউন করে লাভ হবে না। লকডাউন বাস্তবায়নটা জরুরি। যে পাড়ায় বা যে এলাকা সংক্রমণ বেশি সেই পাড়া বা এলাকা আমরা পৃথকভাবে লকডাউন করবো। অথবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বাড়িগুলো আমরা বিধিনিষেধের আওতায় আনবো। আমরা তাদের অনুরোধ করবো যেন তারা আইসোলেশনে থাকেন। আমরা ম্যাপিং করছি, কোন কোন জায়গাগুলোতে সংক্রমণ বেশি সেই জায়গাগুলোতে খণ্ড-খণ্ডভাবে লকডাউন করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।’ যোগ করেন জেলা প্রশাসক।
Leave a Reply