দীর্ঘদিনের আওয়ামীলীগের স্বৈরশাসন আমলের সরকার দলীয় সুবিধাবাদী লোকগুলো ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিজয়ের পর,ঢাকা মহানগর উত্তরের আওতাধীন শেরে বাংলা নগর থানার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক লীগের নেতারা রাতারাতি বনে গেছেন বিএনপির নেতা ।
আওয়ামী লীগ আমলে তারা যেমন দখল বাণিজ্য, লুটপাট ,মাদক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ সহ নানা অনৈতিক কাজের জড়িত থেকে সাধারণ মানুষকে সবসময় ভয়-ভীতি তে তটস্থ রাখতো, ঠিক একই ভাবে ৫ তারিখের পর (একাধিক ভিডিও থেকে দেখা যায়, প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত) বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায়,
আওয়ামী লীগের মহিলা কমিশনার হামিদা আক্তার মিতার(২৬,২৭,২৮ ওয়ার্ড) ও ২৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আফজাল মাস্টারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত, এবং গত ১৬-১২-২০২০ তারিখে শেরেবাংলা নগর থানা কৃষকলীগের সভাপতি জামাল পাপা ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম জয় স্বাক্ষরিত ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কৃষকলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা অনুযায়ী কৃষক লীগের সহ-সভাপতি মোঃ মাহবুব হোসেন, মোঃ রাসেল তোফাজ্জল হোসেন, মোঃ খবির হোসেন, মোঃ লিটন হোসেন, মোঃ কবির শেখ, যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক মোঃ রাসেল হোসেন এর নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন রামদা,চাপাতি, হকিস্টিক ,রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মী সাধারণ জনগণের উপর হামলা করে । কাজী অফিসে সরকারি খাস জমি দখল ও মার্কেট,গরুর খামারেও (শ্যামলী কাজী অফিস খাল পাড় মার্কেট) ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় ।
শেরে বাংলা নগর থানার কাজি অফিস ২ নম্বার রোডের ৩০ ফিট খালের পাশে শিউলি বেগমের বাড়ীর সামনে চলাচলের সরকারি জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রাখে মমতা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক কাজী বেলায়েত হোসেন বিল্লাল এর নেতৃত্বে কৃষকলীগের ২৮ নং ওয়ার্ডে নেতা মাহাবুব, তোফাজ্জল, লিটন, কবির, সোহেল, মানিক, সজিব সোহেল ও খবির গংরা ।
স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পতন হওয়ার পর গত ২৪ আগস্ট সেনাবাহিনীর এবং মোহাম্মদপুরের বৈষম্যবিরধী ছাত্র আন্দোলনের সন্মনয়ক ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে ৩০ ফিট খালের পাশের সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করা হয়। দখল মুক্ত হওয়ার কয়েকদিন পর আবারও গত ৩০ আগস্ট খালের পাশে সেই সরকারি জায়গা দখলে নিতে আসে মাহাবুবের নেতৃত্বে তোফাজ্জল, লিটন, কবির, সোহেল,মানিক,সজিব ও খবির গং।
এ বিষয়ে অভিযোগ কারী শিউলি বেগম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ২০০৯ সালের জমি কিনে স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করছিলাম, ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর কাজী বেলায়েত হোসেন বিল্লাল ও তার পরিচিত আত্মীয় নাকি এক শতাংশ জমি কিনেছে আমার বাড়ির সামনে। এই বলে সে দখল করে নিয়ে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত দীর্ঘদিন বাসা থেকে বের হতে পারিনি এখন সেনাবাহিনী ও ছাত্রদের বদৌলতে রাস্তা বের হলেও মাহবুব গংরা দখলের পায়তারা করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,হামলার সময় তারা বিএনপির স্লোগান দিতে থাকে। বিএনপি'র নামে তারা স্লোগান দিতে দিতে একের পর এক হামলা করতে থাকে যার সকল ভিডিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
জনৈক ভুক্তভোগী বলেন, এতদিন যাদের কে দেখে এসেছি আওয়ামী লীগের হয়ে অপকর্ম করতে আর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঐতিহাসিক বিজয়ের পর তাদেরকে বিএনপির ভাগ্য বিধাতা রূপে আবির্ভূত হতে দেখে আমরা আতঙ্কিত ।
স্থানীয় অনেকে দাবি করেন, মাহবুব আগে ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক-লীগের সহ-সভাপতি থাকলেও বর্তমানে তিনি কাজী অফিস ইউনিট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ।
এ ব্যাপারে মাহবুবের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ১৭ বছর ধরে বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত আমি কখনো আওয়ামী লীগ করিনি, বিএনপি করতে গিয়ে আমি অনেক মামলা খেয়েছি,কৃষকলীগ বলা ভিত্তিহীন।
এ ব্যাপারে কৃষকলীগের সহ-সভাপতি তোফাজ্জল এর কাছে ফোনে জানতে চাইলে কাজী অফিস ইউনিট বিএনপির সভাপতি শিপনের রাজনীতি করেন বলে জানান ।
কমিটির তালিকা অনুযায়ী যুগ্ম-সম্পাদক রাসেল হোসেনকে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি কখনো কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলামনা, আমি এখনো কোনো রাজনীতি করিনা ।
কবির শেখ ,লিটন হোসেন কে ফোন দিলে, পরিচয় পেয়ে ব্যস্ত আছি বলে লাইন কেটে দেন ।
মমতা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক কাজী বেলায়েত হোসেন বিল্লাল এর
বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পরিচিত একজন দেড় শতাংশ জমি কিনেছে, একাধিক প্রশ্ন করায় তিনি এক উল্টোপাল্টা কথা বলেন ।
মাহবুব কৃষকলীগের সহ-সভাপতি হয়েও কিভাবে ইউনিট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হলেন, এমন প্রশ্নে ২৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান স্বপনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহানগর কমিটি ইউনিট কমিটি করেছিল তাই আমি এ বিষয়ে কোন কিছু জানি না ।
কৃষক লীগের নেতারা কিভাবে বিএনপির নেতা হলেন,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তাদেরকে আমি চিনি না,তারা কেউ বিএনপির লোক না।তারা বিএনপি'র নাম ভাঙ্গিয়ে চলছে এমন প্রমাণ পেলে,আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।