তৌহিদ আহমেদ রেজাঃ-
ডা. মুরাদ হাসান বাংলাদেশের একজন সমালোচিত রাজনীতিবিদ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের জামালপুর-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি নবম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৮ সালের মন্ত্রী সভায় তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ) এর প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পান। এরপর ১৯ মে ২০১৯ তারিখ থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
প্রাথমিক জীবন
১০ অক্টোবর ১৯৭৪ সালে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলাধীন দৌলতপুর গ্রামে মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম অ্যাড. মতিয়র রহমান তালুকদার, মাতা: মনোয়ারা বেগম।
শিক্ষা
জামালপুর শহরস্থ কিশলয় আদর্শ বিদ্যা নিকেতনে তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু। ১৯৯০ সালে তিনি জামালপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি, ১৯৯৩ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০০০ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ২০০৪-২০০৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ‘Plastic & Reconstructive Surgery’র উপর Post Graduation Training (PGT) সম্পন্ন করেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হতে ২০১১ সালে Radiation Oncology’র উপর এম. ফিল ডিগ্রী অর্জন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনকোলজি বিভাগে কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।
রাজনৈতিক জীবন-
তিনি নবম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিরও কেন্দ্রীয় সদস্য। তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এবং বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এর আজীবন সদস্য।
পারিবারিক জীবন-
তার পিতা অ্যাডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী বিচারপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তার স্ত্রী ডা: জাহানারা এহসানও পেশায় একজন ডাক্তার।সমালোচনা
সমালোচনা
২০২১ সালের অক্টোবরে মুরাদ হাসান তার এক বক্তব্যে বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তার ব্যক্তিগত মন্তব্যে তিনি সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ এবং ১৫তম সংশোধনী বাতিল করে ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনর্বহাল রাখার ইচ্ছা পেশ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা উল্লেখ থাকায় এবং সকল ধর্মের প্রতি সমান মর্যাদা উল্লেখ থাকায় তার প্রস্তাবটি নেট দুনিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়।
১ ডিসেম্বর রাতে ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতাকর্মী’ শিরোনামে এক ফেসবুক লাইভে যুক্ত হন মুরাদ হাসান। লাইভটির সঞ্চালক ছিলেন নাহিদ রেইনস নামে এক ইউটিউবার ও ফেসবুকার। লাইভের এক পর্যায়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে তিনি বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্ম ও পরিবার নিয়েও কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি জাইমা রহমানকে লুইচ্চা বলে অভিহিত করেন। আরও বলেন, প্রতিরাতে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষের সঙ্গে না শুইলে নাকি তার হয় না। ক্ষমতাসীন কারো মুখে এহেন মন্ত্যবকে নিন্দা জানাতে দেরি করে না নারীবাদী গোষ্ঠী।
এদিকে ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ফোনালাপ ভাইরাল হয়। দাবি করা হচ্ছে, এই কথোপকথনটি ডা. মুরাদ হাসান ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির। ফোনালাপে থাকা চিত্রনায়ক ইমন ইতোমধ্যে সেটি স্বীকারও করেছেন। ওই কথোপকথনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মাহিকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হুমকি দেন। পুরো বক্তব্যে ‘অশ্রাব্য’ কিছু শব্দ উচ্চারিত হয়েছে। বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া