ওয়াকিল আহমেদ, ক্ষেতলাল (জয়পুরাট) প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গৃহবধুকে বর্বরোচিত নির্যাতন করলেন স্বামী। স্থানীয়’রা বলছেন, স্বামীর সাথে অভিমান করে নিজেই আগুন লাগিয়েছেন স্ত্রী।
জানা গেছে, জয়পুরহাটের বানিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর সরদার তার মেয়ে মঞ্জিলা খাতুন (২৮) কে পাঁচ বছর পূর্বে ক্ষেতলাল উপজেলার রোয়াইর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে শারফুল ইসলাম রনি (৩২) এর সাথে বিয়ে দেন।
মঞ্জিলা খাতুনের বাবা আব্দুস সবুর সরদার, তাঁর বাড়ী জয়পুরহাটের বানিয়াপাড়া গ্রামে। তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ে মঞ্জিলা খাতুন এর প্রতি জামাই কারণে-অকারণে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে আসছিল। আমরা একাধিকবার সতর্ক করার পরও জামাই ঐরূপ আচরণ করতে থাকে।
গত ২৬ জুলাই (সোমবার) দুপুর ১টায় তুচ্ছ এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার মেয়ে মঞ্জিলা খাতুনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরের দরজা বন্ধ করে শারীরিক নির্যাতন করে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। তার আত্মচিৎকার শুনে রনির বড় ভাই আরিফুল ইসলাম ও একই গ্রামের মীর বক্স এর ছেলে খয়বর আলী ছুটে এসে ঘরের দরজা ভেঙে মঞ্জিলা খাতুনকে উদ্ধার করে। ততক্ষণে তার কোমর থেকে মুখ পর্যন্ত ও দুই হাত পুড়ে যায়। ওই প্রতিবেশীরা দ্রুত তাকে শহীদ জিয়া মেডিকেল হাসপাতাল বগুড়া নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিউটে তাকে স্থানান্তর করেন। সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন গৃহবধূ মঞ্জিলা খাতুন।
এ বিষয়ে মঞ্জিলার বাবা বাদী হয়ে স্বামী শারফুল ইসলাম রনি বিরুদ্ধে ক্ষেতলাল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে, মামলার বাদীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে মঞ্জিলার দুলাভাই পরিচয় দিয়ে কথা বলেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার কোমরগ্রামের আব্দুল মতিন মন্ডলের ছেলে শাহীন। সূর্যোদয় প্রতিনিধি তাকে জিজ্ঞাস করেন- ঘটনার দিন আপনি কোথায় ছিলেন? সে বলেন ঘটনাস্থলে আমরা উপস্থিত ছিলাম না, স্থানীয়দের বিবরণ অনুসারে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। গুরুতর আহত মঞ্জিলা খাতুন কথা বলার অবস্থায় না থাকায় তার মূখে কিছু শুনতে পারিনি।
স্থানীয়রা বলছেন-ঈদ পরবর্তীতে জামাই শারফুল ইসলাম রনি শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে তার বাড়িতে আসার জন্য দাওয়াত করেন। তাদের মধ্যে জমি কটকবলা ও টাকা পয়সা লেনদেন বিষয় নিয়ে মনমালিন্য হওয়ায়, জামাইয়ের বাড়িতে আসেন নি শ্বশুর বাড়ীর লোকজন। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে গৃহবধূর আত্মচিৎকার ও ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে আমরা ছুটে গিয়ে দরজা ভেঙে পুড়ে যাওয়া অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করি।
ক্ষেতলাল থানার ওসি নীরেন্দ্রনাথ মন্ডল। তিনি বলেন- এ বিষয়ে মেয়ের বাবা ২৯ জুলাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। আমরা ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে আসামিকে আটক করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে বিজ্ঞ আদালত
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..