মাসুদ রানা জয়, পার্বত্যচট্রগ্রাম,ব্যুরো:
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দুর্গম লক্ষীছড়ি উপজেলা ও গুইমারা উপজেলার সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে গেছে। এতে যান – বাহন চলাচলসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
চলতি মাসের মাঝামঝি থেকে গত সপ্তাহের কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হলে লক্ষীছড়ি – গুইমারা সড়কের ১২ কিলোমিটার ও ১৪ কিলোমিটারের মাঝামাঝিতে বাঁশগ্রাম এলাকার দু’টি স্থানে ডেবে যাওয়ায় সড়কটি ভেঙ্গে পড়ে।
গত এক সপ্তাহ ধরে সড়কের কোন মেরামত করছে না স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের লক্ষীছড়ি উপজেলার প্রকৌশল বিভাগ। গুইমারা উপজেলা সিন্ধুকছড়ি থেকে লক্ষীছড়ি উপজেলা যাওয়ার সময় প্রথম ১৪ ও ১৩ কিলোমিটারের মাঝখানে সড়কটির পাকা বরাবর ডেবে যায়।
আর ১৩ কিলোমিটার ও ১২ কিলোমিটারের মাঝামাঝিতে বড় আকারে সড়কের সাইট ওয়াল বা পাশের দেওয়ালটিসহ পাকা সড়কটিও বেদলছড়িতে ডেবে যায়।
এতে সড়কের উপর দিয়ে মটরসাইকেলেও ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছ । অথচ গত এক সপ্তাহ ধরে লক্ষীছড়ি উপজেলার উপজেলা প্রকৌশলীর উপস্থিতি নেই। গত মঙ্গলবারে (১৭/০৮/২০২১) এই ভাঙ্গা সড়কের ব্যাপারে ফোন করলে তিনি চট্টগ্রাম বলে জানান।
সড়ক ভেঙ্গে গেছে সপ্তাহখানেক আগে। তবুও উপজেলা প্রকৌশলীর কর্মস্থলে ফিরেননি। সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার সাথে সাথে তাঁর কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা অবশ্যই প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞ মহল মত প্রকাশ করেছেন।
খাগড়াছড়ি জেলার দুুর্গম উপজেলা লক্ষীছড়ি সদর থেকে গুইমারা উপজেলার সিন্ধুকছড়িতে সড়কটি সংযোগ হয়। এ সংযোগ সড়কের খাদ বা ঝিরির বা নীচু স্থানের প্রত্যেকটি জায়গায় সাইট ওয়াল বা পাশের দেওয়াল দিয়ে সড়কটি রক্ষা করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর খাগড়াছড়ি জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ মাস খানেক আগে এসব সড়ক রক্ষা দেওয়াল নির্মাণ করে।
কিন্তু দুর্ভাগ্য মাস হতে না হতেই দ’তিন দিন বৃষ্টি হওয়ায় সড়ক রক্ষণ দেওয়াল ডেবে যাওয়ায় পাকা সড়কও চলে যায় মাটির সাথে। ঝুঁকি নিয়ে মটরসাইকেল চালাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমন কি ভাঙ্গা সড়ক এলাকায় কোন রেড সিঙ্গেল বা লাল পতাকা দেখা যায়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এসব কর্মকর্তা দিয়ে দেশের উন্নয়ন করা দূরে থাক নিজের উন্নয়নও করতে হিমসিম খাবে সরকার। তাই স্থানীয় এলাকাবাসীদের সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নিকট দাবী,
অতিসত্বর এই লক্ষীছড়ি উপজেলার ও গুইমারা উপজেলার সংযোগ সড়কটি দ্রুতগতিতে উন্নত এবং সড়ক সংরক্ষণ দেওয়াল নতুন করে নির্মাণের জন্য সদাশয় সরকারের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের অভিযোগ,
সড়ক সংরক্ষণ দেওয়াল নির্মাণের সময় যে সব গাছের খুঁটি বা পোল দেওয়া হয়েছিল তা যৎসামান্যই মাটিতে পুঁতে দিয়েছিল।
যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হওয়া মাত্রই সংরক্ষণ দেওয়ালটি ডেবে গিয়ে পাকা সড়কসহ নীচে চলে যায়। খাদ বা ঝিরির উপর সড়ক তৈরী করায় এসব সড়ক সংরক্ষণ দেওয়াল নির্মাণ করতে হয়েছে।
কিন্তু সরকারের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের গাফেলতিতে বা কাজের সময় তদারকির অবহেলায় সড়ক বিভাগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের শ্লথ গতিতে থমকে যায়। যার দরুন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের জোয়ার ভাটায় নীচে নেমে যাচ্ছে।
সরকারের গতি ধারাকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে গেলে এসমস্ত কাজে ধোকাবাজ, কাজে অবহেলা, কাজের সঠিক তদারকি না করা কর্মকর্তাদের দিয়ে সরকারের মূল পরিকল্পনা কোনদিন বাস্তবায়ন হবে না।
কারণ যে সড়কটি সপ্তাহ খানেক আগে ভেঙ্গে গেলেও উপজেলা প্রকৌশলীর কর্মস্থলে অনুপস্থিত।
উল্রেখ্য, দুর্নীতি দমন নাগরিক আন্দোলনের খাগড়াছড়ি জেলার জেলা সমন্বয়কারী ও প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধি নিজে গত মঙ্গলবার (১৭/০৮/২০২১) লক্ষীছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী চট্টগ্রাম বলে জানা গেছে জনৈক কর্মচারী থেকে। সঙ্গে থাকা জনৈক সাংবাদিক ফোনে কথা বলেন এবং প্রকৌশলী চট্টগ্রামে নিশ্চিত হওয়া গেলো।
প্রকৌশলী গতকালও লক্ষীছড়ি ছিলেন না। আজ প্রতিবেদন লেখার আগ মহুর্তে প্রকৌশলীকে পাওয়া গেলেও দু’এক কথা বলে ফোন কেটে দেন। তাই ভাঙ্গা সড়কের বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি গুরুত্ব না দিয়ে ফোন কেটে দিলেন।
মানে দুর্গম উপজেলা লক্ষীছড়ি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে তোয়াক্কা করেন না বুঝা গেলো। এখন সড়ক ভেঙ্গে গেছে, বড় কথা নয়, লক্ষীছড়ি উপজেলার সমস্ত কাজের গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে “”দুর্গম লক্ষীছড়ি উপজেলার উন্য়ন কাজের কাজের গুণগতমান কতটুকুই বা ঠিক?
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy