কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :
নওগাঁর রাণীনগরে পুরোদমে শুরু হয়েছে চলতি আমন ধান কাটা-মাড়াই। গৃহস্থ্যদের মতো অধিক লাভবান না হলেও বর্গাচষীরা রেহায় পাচ্ছেন লোকসান থেকে ধানের ভাল ফলন ও দাম পাওয়ায় । ফলে কৃষকরা এবার লাভের মূখ দেখছেন। গত ৫০ বছরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ ফলন ও দাম পাচ্ছেন কৃষকরা কৃষি কর্মকর্তারা দাবি করে বলছেন।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে,চলতি মৌসুমে উপজেলা জুড়ে প্রায় ১৮ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে স্বর্ণা-৫, বিনা-১৭, বিআর ৪৯,বিআর-৫১,বিআর-৮৮,বিআর- ৭১,বিআর-৭৫সহ আগাম ও মোটা জাতের ধান চাষ করা হয়েছে ৭হাজার ২০৫হেক্টর জমিতে। এছাড়া ১১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে চিনি-আতপ ও চিকন জাতের ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। ইতি মধ্যেই চিনি আতপ ধান কাটা-মাড়াই শুরু না হলেও মোটা জাতের ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। কৃষকরা বলছেন,ধান রোপনের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের গাছ খুব ভাল হয়েছিল। এমৌসুমে হাল চাষ থেকে শুরু করে রোপণ,আগাছানাশক,সার,পানি সেচসহ কাটা মাড়াই পর্যন্ত বিঘা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১১হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্গাচাষীদের মতে,গৃহস্থ্যদের বিঘাপ্রতি ১০থেকে ১১ হাজার টাকা খরচ হলেও বর্গাচাষীদের বাৎসরিক জমি ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত ৬ থেকে ৭ হাজার টাকাসহ প্রায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ১৮ থেকে ২২ মন পর্যন্ত ফলন হচ্ছে। এই জাতের ধান সোমবার উপজেলার ধানের মোকাম খ্যাত আবাদপুকুর বাজারে প্রতিমন সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিআর-৪৯ জাতের ধান বিঘা প্রতি ১৬-২০ মন পর্যন্ত ফলন হচ্ছে। রকম ভেদে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ফলে গৃহস্থ্যরা অধিক পরিমানে লাভবান হলেও বর্গাচাষীরাও তেমন লাভ করতে না পারলেও লোকসান থেকে রেহায় পাচ্ছেন। আবার অনেকেই ৩-৪ হাজার টাকা লাভ করছেন। করজগ্রামের আমিনুল, সুর্য, ভেটি গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন,নারায়ন পাড়ার বছির আলী মিঠু,জলকৈ গ্রামের পলান চন্দ্রসহ কৃষকরা জানান,দীর্ঘ বছর পর এবার যেমন ধানের ফলন বেশি হচ্ছে,তেমনি কাটা-মাড়াইয়ের শুরুতেই আশানুরুপ ধানের ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে ধানের ভাল ফলন হলেও দাম পাওয়া যায়নি আবার দাম ভাল থাকলেও ফলন পাওয়া যায়নি। ফলে আমন আবাদ করে বিশেষ করে বর্গাচাষীদের বিঘা প্রতি ৩-৪ হাজার টাকা করে লোকসান হয়েছে। কিন্তু এবার ফলন এবং ভাল দাম পাওয়ায় বর্গাচাষীরাও লাভবান হচ্ছেন।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের তুলনায় এবার ধানের রোগ বালাই কম থাকায় এবং আবহাওয়া জনিত কারনে এবং নুতুন নতুন ধানের জাতের ফলে ফলন খুব বেশি হয়েছে। তিনি দাবি করে বলেন গত ৫০ বছরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে। পাশা পাশি কাটা-মাড়াইয়ের শুরুতেই বাজারে আশানুরুপ দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy