লেখকঃ গোলাম রাব্বী
রহমত আলী ঢাকা শহরের একটি অফিসের অফিস সহায়ক এর কাজ করেন।পনেরো বিশ হাজার টাকা বেতন পান। এবার ওনার ছেলের সাঁঝ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ+ পেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছে, উনার স্বপ্ন ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানানো তাই ভালো কলেজে ভর্তি করার জন্য শহরে নিয়ে আসার চিন্তা করেন সাঁঝও অনেক ভালো মেধাবী ছাত্র এযাবত কোন পরীক্ষায় এ+ ছুঠেনি। তাই রহমত আলী একটি বড় বাসা ভাড়া নেন এবং কয়েকদিন পর গ্রামে গিয়ে স্ত্রী রহিমা খাতুন ও ছেলেকে নিয়ে আসেন ঢাকায়।
ঢাকার একটি স্বনামধন্য কলেজে ভর্তি করান তার ছেলেকে। ছেলেও কলেজে যায় ভালোভাবে ক্লাস করে বাসায় ফিরে ছুটির দিনে মা বাবার সাথে ঘুরতে যায়। বাবা রহমত আলী বুয়েট দেখিয়ে বলেন “বাবা তোমাকে এখান থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করতে হবে” ছেলে ও বাবাকে আশ্বস্ত করে “আপনারা শুধু দোয়া করেন আমি যেন আপনাদের ইচ্ছা পূরণ করতে পারি” খুব ভালোই কাটছিল শহরে জীবন কলেজ পড়াশোনা নিয়ে।
কলেজ জীবন ভালোই কাটছিল, ত্রৈমাসিক পরীক্ষা শুরু হয়ে যায় দেখতে দেখতেই। পরীক্ষার শেষ দিন, একটি মেয়ের দিকে চোখ পড়ে সাঁঝের। খোঁজ নিয়ে জানতে পারে মেয়েটি তাদের কলেজেরই নাম “সকাল” নিতান্তই ভাল ছাত্রী, মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করেছে। সকালের সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য জানতে পারে সাঁঝ।
আর তখন থেকেই ভাল লেগে যায় সকালকে সাঁঝের, কিছু দিন পর থেকে তার চিন্তা চেতনা শুধু সকাল আর সকাল।কি করবে এক বন্ধুর সাথে এবিষয়ে কথা বললে সে জানায় সাঁঝ তার প্রেমে পরেছে।কি করবে জানতে চাইলে বন্ধু তাকে প্রেম করার পরামর্শ দেয়।
কলেজ খোলার দিনই সাঁঝ সকালকে প্রেম প্রস্তাব দেয়,সকাল রাজি হয় নি, সকাল তার এক বান্ধবীর কাছে এবিষয়ে কথা বললে সে তাকে রাজি হওয়ার কথা বলে, সকাল অপেক্ষায় থাকে পরবর্তী প্রস্তাবের। চার দিন পর সাঁঝ আবার প্রস্তাব করে সকাল রাজি হয়ে যায়। তাদের মধ্যে ফোন নাম্বার বিনিময় হয়। ফোন নাম্বার নিয়ে সাঁঝ মহা আনন্দে বাসায় ফিরছে।পথে সেই বন্ধুর সাথে দেখা….
সাঁঝঃ বন্ধু সু খবর সে তো রাজি।
বন্ধুঃ তাহলে তো ভালোই পার্টি দে?
সাঁঝঃ অবশ্যই
সাঁঝ কোচিং সেন্টারের বেতনের টাকা দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে পার্টি দেয়।
বাসায় ফিরে সাঁঝ রুমের দরজা বন্ধ করে সকালের দেওয়া নাম্বারে কল দেয়।তারা দীর্ঘক্ষণ কথা বলে।
প্রতিদিনই সাঁঝ-সকাল দীর্ঘক্ষণ কথা বলে পড়ার কোন রুটিন নেই সারাদিনই শুধু কথা আর কথা। গভীর রাত পর্যন্ত কথা বলে ওরা।
এভাবে ১০-১৫ দিন যাওয়ার পর বিষয়টি সাঁঝের মায়ের চোখে পড়ে। তিনি সাঁঝকে এবিষয়ে প্রশ্ন করলে উত্তরে বলে “মাঝে মধ্যে বন্ধুরা কল দেয় শহরে আসছি না গ্রামের বন্ধুরা মিস করে এখনে কিছু বন্ধু রয়েছে তারাই কল দেয়। পড়াশোনা তো ঠিকই করছি মা! তিনি আর কথা বাড়ালেন না।
সাঁঝ-সকাল ৩-৫ দিন পর পরই দেখা করে ঘুরতে যায়, ভালোই কাটছিল দিনকাল। কিন্তু পড়াশোনা একদমই হচ্ছিল না, এনিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথাও নেই।প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে দুজন।
এরই মধ্যে সকালের জন্মদিন…..
৪-৬ দিন আগ থেকেই সাঁঝ প্রস্তুতি নিচ্ছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হিসাবে তার কাছে বেশি টাকা পয়সা না থাকারই কথা তাই সে এক বন্ধুর কাছ থেকে ধার নেয় ৫০০০টাকা।
আজ সকালের জন্মদিন, সাঁঝ তারাতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ভালো পোষাক পরিধান করে বাসা থেকে বেড় হয় মায়ের প্রশ্নের উত্তরে বলে “বন্ধুর বাসায় ঘুরতে” বাজারে গিয়ে ২০০০ টাকা দিয়ে একটি গাড়ি ভাড়া করে একদিনের জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই সকাল হাজির হয়। তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে সঁন্ধায় বাসায় ফিরে।
কয়েক মাস পর……
বার্ষিক পরীক্ষার আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকী। কিন্তু সাঁঝ-সকালের প্রস্তুতি নেই বললেই চলে। তাদের হাতে তো পড়ার সময়ই ছিল না।
এদিকে সাঁঝের বন্ধু ধারের ৫০০০ টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে, সাথে মোবাইল রিচার্জের দোকানের ২০০০ টাকা বাকী দোকানদার পূর্বের পাওনা পরিশোধ না করলে আর রিচার্জ দেবে না বলে দিয়েছে। তাই সাঁঝ বাধ্য হয়ে সুন্নতে-খাৎনায় মামার বাড়ি থেকে পাওয়া আংটি বিক্রি করে দেয় ১০০০০ টাকায়।
শনিবার থেকে পরীক্ষা শুরু আজ সোমবার…. সাঁঝ সকালের মধ্যে কথার এক পর্যায়ে
সাঁঝঃ আচ্ছা, চার দিন পর তো পরীক্ষা? তোমার প্রস্তুতি কেমন?
সকালঃ ভালো না অর্ধ বার্ষিকে যা পড়া ছিল তাও রিভিশন দেওয়া হয় নি, তোমার?
সাঁঝঃ ভালো না, আমরা কি পরীক্ষার দিনগুলোতে কথা বলা কমিয়ে আনতে পারি?
সকালঃ পারবে তুমি?.
সাঁঝঃ চেষ্টা করব।
সকালঃ আচ্ছা, আজ থেকে পরীক্ষার শেষ দিন পর্যন্ত আমরা ২ ঘন্টা কথা বলব।
সাঁঝঃ এত কম!
সকালঃ আচ্ছা বাবা, ২ঘন্টা ৩০ মিনিট।
সাঁঝঃ ঠিক আছে,
অন্য প্রসঙ্গে চলে যায় তারা ।
আজ শনিবার পরীক্ষা শুরু ।আগের কথা মতো তারা প্রতিদিন ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট করে কথা বলে কাটিয়ে দেয় পরীক্ষার শেষ দিন পর্যন্ত।
এখন আবার তারা, পূর্বের মতো কথা বলা ঘুরতে যাওয়া শুরু করে।
১০ দিন পর……
আজ ফল প্রকাশ সাঁঝ ১০টার দিকে কলেজে যায় গিয়ে দেখে সকাল উপস্থিত। বেলা ১১ ঘটিকায় ফলাফল প্রকাশ হয়, সবাই আশা করেছিল পূর্বের মতো এবার সাঁঝ-সকাল ভালো অবস্থানে থাকবে। কিন্তু ফল দেখে সবার চোখ কপালে উঠে যায়, সাঁঝ ৩ বিষয়ে ফেল করেছে আর সকাল ২ বিষয়ে।
হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে সাঁঝ। বাড়ি পৌঁছে দেখে তার মা মিষ্টি হাতে বসে আছে বারান্দায়, বাসায় রান্নাও করেছেন সাঁঝের পছন্দের সব খাবার। পূর্বের ন্যায়ই ছেলে ভালো ফলাফল নিয়ে ফিরবে আশায়।কিন্তু যখন সাঁঝ মায়ের হাতে মার্কসীট দেও তখন উনার মাথায় আকাশ ভেঙে পরল। বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আশে। কিন্তু তার ফেল করার বিষয় বাবার কাছে গোপন রাখে মা-ছেলে। বাবাকে বলা হয় সে জিপিএ ৪.৭০ পেয়েছে। বাবা একটু বকাবকি করল। এই চিন্তায় সাঁঝের মা প্রায় অসুস্থ হয়েই পরলেন।
কলেজ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক বিষয়ে ফেল করলে দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রোমোশন দেওয়া হবে না। কান্নায় ভেঙে পরে সাঁঝরা মা ছেলে। পর দিন সাঁঝ তার মাকে নিয়ে কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষের হাতে-পায়ে ধরে অতিথের ভাল ফলাফলের কথা বিবেচনা করে দ্বাদশে প্রমোশন করিয়ে দেন।
ফলাফল প্রকাশের ২-৩ দিন সাঁঝ-সকালের এত বেশি কথা হয় নি। তারা একটু একটু বুঝতে পারছিল যে তাদের প্রেমই আজকের অধপাতনের কারণ।
কিন্তু ৩-৪ দিন যেতে না যেতেই তারা আগের মতো প্রেমের দুনিয়ায় ফিরে যায়।
আগের তাদের আগের মতই চলছে কথা বলা দেখা করা ঘুরতে যাওয়া এভাবেই নির্বাচনী পরীক্ষা চলে আসে। সাঁঝ চিন্তা করল যদি নির্বাচনী পরীক্ষায় পাস না করা যায় তাহলে তো এইচএসসি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। তাই তারা নকলের আশ্রয় নেয় যেদিন যে পরীক্ষা তারা সেদিন সে বই পরীক্ষা কেন্দ্রের ওয়াশ রুমে রেখে আসে আর পরীক্ষা শুরু হলেই প্রশ্ন নিয়ে বারবার ওয়াশরুমে গিয়ে দেখে দেখে পরীক্ষা দেয়। এভাবে সবকটি পরীক্ষা দিয়ে পাশও করে ফেলে তারা।
সামনে ফাইনাল পরীক্ষা,কিন্তু তাদের মন পড়াশোনা নেই বললেই চলে, তাদের ধারণা পরীক্ষার অনেক দিন বাকী ২-১ মাস আগ থেকে পড়া শুরু করলেই পাস পরতে পারবে। এভাবেই দিন যাচ্ছিল তাদের।
৩ মাস পর……
পরীক্ষার ৩ দিন বাকী মাত্র। সাঁঝ পড়তে বসছে, কিন্তু তার কাছে পড়াশোনা একদমই অসয্য লাগছে বার বার টেবিল থেকে উঠে যাচ্ছে, সকল পড়া তার কাছে অপরিচিত মনে হচ্ছে এসবের কোন কিছুই যেন তার পড়া নেই। এদিকে সকালও কল দিচ্ছে সাঁঝেরও পড়ায় মন বসছিল না তাই কল ধরে কথা বলতে থাকে।
এই তিনটি দিনও কেটে যায় কথা বলতে বলতেই হয়নি পড়াশোনা।
সাঁঝের মন খারাপ কিছুটা কিন্তু সকালের কথা ভাবতেই সব ভুলে যায়।
পরীক্ষার দিন…..
সাঁঝ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসে কিন্তু অচেনা পড়ায় মন বসছিল না তার তাই কিছুক্ষণ পর উঠে যায় পড়ার টেবিল থেকে। বেলা ৮ঘটিকার দিকে খাওয়া দাওয়া শেষ করে মা বাবার কছ থেকে দোয়া নিয়ে কেন্দ্রের দিকে রওনা হয়। গেইটে সকালের সাথে দেখা দুজন একসাথে প্রবেশ করে। ৩-৪ মিনিট পর সাঁঝ দেখল সকাল আসন খোঁজে পায়নি তাই নিজের আসন খোঁজা বাদ দিয়ে সকালকে আসন খোঁজে দেয়। পর সাঁঝ তার আসন খোঁজে পেতে পেতে পরীক্ষার ১০ মিনিট চলে যায়।
প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর সাঁঝ দেখে তার কিছুই জানা নেই, সব অপরিচিত পড়া হয়নি এমন প্রশ্ন ২-৩ টি প্রশ্ন পড়াছিল কিন্তু উত্তর মনে পরছে না রিভিশন না দেওয়ায়।
মন খারাপ করে ভাবতে থাকে, আমার কেন এমন হল? আমার তো কোন দিন এমন প্রস্তুতি ছিল না? কি এর কারণ? সকাল! হ্যাঁ, সকালের কারণেই আজ আমার এই অবস্থা। আমারই ভুল ছিল প্রেম করতে যাওয়া, সে নিজেকে সান্ত্বনা দেয়।
হ্যাঁ, সত্যি এরকম প্রেম তোমার সবকিছু শেষ করে দেবে।
এদিকে সকালের পরীক্ষা সাঁঝের মতো খারাপ না ৩৩-৩৫ পাস করার আশা আছে। এভাবেই পরীক্ষার দিনগুলো কেটে যায়। তারা উভয়ই বুঝতে পারে তাদের পড়াশোনায় এমন বিপর্যয়ের কারণ। কিন্তু পরীক্ষা শেষ হলেই তারা ফিরে যায় আগের মতোই প্রেম জীবনে।
২ মাস পর…….
কাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হবে।সাঁঝের মা-বাবা অনেক আনন্দিত প্রতিবারের ন্যায় এবারও উনাদের ছেলে বোর্ড পরীক্ষায় এ+পাবে। ফলাফল প্রকাশের দিন সাঁঝের বাবা ঘুম থেকে উঠেই বাজারে গিয়ে সাঁঝের পছন্দের সকল খাবার মাছ মাংস ইত্যাদি নিয়ে আসেন।বাসায় ধুমধাম করে রান্না হচ্ছে, সাঁঝের বাবার অফিসেও তার ছেলর সুনাম আছে তাই তিনি কয়েকজন সহকর্মী ও উপরস্থ কর্মকর্তাদের দাওয়াত করেন।১২ ঘটিকায় ফলাফল প্রকাশ হবে, অথিতিরাও চলে এসেছেন ১১ঘটিকায়। সব আয়োজন শেষ সবাই অধীর আগ্রহে বসে আছে সাঁঝের গৌরবময় ফলাফল শুনার আশায়। সাঁঝ ভয় পাচ্ছে সে তো জানে তার অবস্থা।
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ১২টা বাঝে সাঁঝের বাবা ইন্টারনেটে রোল ও রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার দিয়ে সার্চ করে যখন ফলাফল দেখেন সাঁঝ ৩ বিষয়ে ফেল এবং বাকী বিষয়গুলোতেও ৩৫-৪০ এর মধ্যে নাম্বার। তখনই তিনি বুকে ব্যাথা অনুভব করেন এবং অজ্ঞান হয়ে যান। উনাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায় উপস্থিত অতিথিরা সহ সবাই। ডাক্তার জানায় উনি হার্টঅ্যাটাক করেছেন জরুরি অপারেশন করতে হবে মোটা অংকের টাকা লাগবে। সাঁঝের মা উনাদের জমানো সকল টাকা দিয়ে অপারেশন করান। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ৩ দিন পর উনি চিকিৎসারত অবস্থা মারা যান।
এদিকে সকালও ১ বিষয়ে ফেল করে।এনিয়ে তাদের রাড়িতেও শোকের ছায়া, সকালের মা-বাবা তাকে অনেক বকা বকি করেন। উনারা সকালকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এবাড়িতেও সাঁঝ পিতা হারানোর শোকে কাতর, নিজের এমন বিপর্যয়ে একেবারেই ভেঙে পরে, না করে খাওয়া দাওয়া না করে কিছু শুধুই মনমরা হয়ে বসে থাকে রুমের ভিতর। সাঁঝের মাও স্বামী হারানোর ব্যাধনা আর ছেলের এই পরিনতিতে একেবারে ভেঙে পরেন চেহারায় একদম শোকেয় ছায়া নেমে এসেছে, তাকানোই যায় না উনার দিকে। তখনও সাঁঝ একটু একটু কথা বলে সকালের সাথে।
২মাস পর……..
সাঁঝের মা সিদ্ধান্ত নিলেন শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাবেন। এখানে তাকলে খাবেন কি? পরবেন কি? সঞ্চিত কিছু অর্থ ছিল তা সাঁঝের বাবার চিকিৎসা ও এই ২ মাসের খরচ করে তা এখন শূন্যের কোটায়।
এদিকে, সকালে বিয়ে পাকা হয়েছে এক লন্ডন প্রবাসীর সাথে। সকালের বাবা নিজের সবটুকু দিয়ে একমাত্র মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেন।মেয়ের বিয়ের পর উনাদের আর কিছু অবশিষ্ট চাই না, মেয়ের সুখই উনাদের সুখ।
বিয়ের ৭ দিন আগে সকাল সাঁঝকে জানায় তার বিয়ের কথা, শুনে সাঁঝের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে যায়। সাঁঝ সকাল কেউই চায় না বিয়েটা হওক।তারা ৭ দিন অনেক প্ল্যান করে পালানোর মতো অনেক কিছুর কিছুই হল না।
বিয়ের দিন……
সাঁঝের মা ডাকছে ঘুম থেকে উঠার জন্য কিন্তু কোন সারা পাচ্ছেন না, অনেকক্ষণ ডাকা ডাকির পর তিনি পাসের বাসার করিম চাচাকে ডাকেন সাহায্যের জন্য। তিনি এসে কিছু সময় চেষ্টা করেন।
তখন বেলা প্রায় ১০টা ৩০ মিনিট,
করিম চাচা বাধ্য হয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেই দেখতে পান সাঁঝের ঝুলন্ত লাশ দেখেই সাঁঝের মা জ্ঞান হারান। ততক্ষণে লোকজন জমা হয়ে যায়।সাঁঝের মাকে মাথায় পানি দেওয়া হয় সাথে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যেই পুলিশ এসে সাঁঝের লাশ নিয়ে যায় থানায় ময়না তদন্তের জন্য।
কিছুক্ষণ পর সাঁঝের মায়ের জ্ঞান ফিরে তিনি উনার ছেলের কথা জানতে চাইলে উপস্থিতরা জানায় উনার ছেলে আত্নহত্যা করেছে লাশ পুলিশ নিয়ে গিয়েছে। তখন তিনি দৌড় দিয়ে ছাদে যান লাফ দিয়ে তিনিও আত্মহত্যা করেন।
পুলিশ এসে লাশটা নিয়ে যায়। থানার বারান্দায় পরে থাকে মা-ছেলের লাশ। এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে এই মার্মান্তিক ঘটনা।
এদিকে সকালদের বিয়ে মহা আয়োজন কত আনন্দ উল্লাস হচ্ছে ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে বর আসবে সবাই অপেক্ষায়।
সকালের বাবা টিভিতে দুপুর ১২টার খবর দেখছেন, তিনিও দেখতে পান সাঁঝদের এই মর্মান্তিক মৃত্যু। সকালের বাবা সাঁঝ ও তার পরিবারকে চিনতেন। সাঁঝ যে সকালদের কলেজে পড়ে তাও জানতেন। তাই তিনি সকাল কে ডেকে খবরটি দেখান, দেখে সকাল একেবারেই নিশ্চুপ হয়ে যায়। তখন সকালের বাবা বলেন “যাও মা ঘরে যাও শুভ দিনে এমন খবর মথায় নিও না, মন খারাপ হবে” সকাল তার ঘরে যায়।
এদিকে বর চলে এসেছে বর যাত্রীদের খাওয়া দাওয়া শেষ। বিয়ের সময়ও হয়ে গিয়েছে কাজী সাহেব কনেকে কুঞ্জে আনতে বলেন। সকালের বাবা সকালের মা ও তার ২ খালাতো বোনকে বলে সকাল কে নিয়ে আসতে।
উনারা সকালের ঘরে গিয়ে দেখেন সকাল নিচে পরে আছে কাছে গিয়ে দেখেন হাতে পটাসিয়াম সায়ানাইডের কৌটা…।।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..