ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাস তাণ্ডব চালাচ্ছে। আমাদের দেশও এর বাইরে নয়। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ফলে দেশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজমান করছে।
যদিও দেশে করোনার সংক্রমণ কমাতে গত মার্চ থেকে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশে লকডাউন রাখা হয়েছিলো। এই লকডাউনের কারণে আমাদের জীবনযাত্রা প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়তে হয় পোশাক, কাঁচামাল নির্ভর ছোট-বড় সকল শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে। এর প্রভাবে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। একইসঙ্গে চাকরি হারিয়েছেন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো কোনো অফিস বেতন-ভাতা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বগতির মধ্যেই মানুষের জীবনকে সচল রাখতে ১ জুন (সোমবার) থেকে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। গণপরিবহনও চলাচল শুরু করেছে।
কিন্তু অবাক করার ব্যাপার হলো সড়ক পরিবহন সেক্টরের লোকজন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অযুহাতে ভাড়া বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে ৮০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর দাবী জানিয়েছিলো। তাদের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিআরটিএ ৬০ শতাংশ ভাড়া বেশি নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
করোনার কারণে নির্দিষ্ট একটি সেক্টরের লোকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এমন সিদ্ধান্ত দেওয়া হলে আখেরে নিম্ন আয়ের লোকদেরই বেশি ক্ষতি। মহামারির দুর্যোগে অর্থ কষ্টে থাকা নাগরিকদের জন্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা রকমের সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো। সর্বশেষ নিন্ম আয়ের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঈদ উপলক্ষে যে আড়াই হাজার টাকা প্রণোদনা দিয়েছেন সেটাও পরোক্ষভাবে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের পকেটেই যাচ্ছে।
এই মহাবিপদকালে পরিবহন মালিকেরা ক্ষতির কথা বলেছে। অথচ যখন প্রতিটি স্ট্যান্ডে সারা বছর ধরে প্রতিদিন পরিবহনের বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের নামে যে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা উঠানো হয়, সেসব অর্থ কার কার পকেটে যায়? এতদিন পরিবহনের নেতারা শ্রমিকদের কোনো খোঁজ নিয়েছে বলেও তো আমাদের চোখে পড়ছে না।
এছাড়া জনগণকে ৬০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে। অথচ তাদের আয়-রোজগারের বেলায় কতটুকু সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। জনগণের বেতন কাঠামো কি ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে?
প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহনগুলো চলতে হবে। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে গণপরিবহনগুলো কিছুক্ষণ লোক দেখানো দূরত্ব বজায় রাখলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঠাসাঠাসি করে লোক উঠাচ্ছে। যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়াও নিচ্ছে ডাবল। তাহলে তাদের প্রতি যে নির্দেশনা রয়েছে তার কোন দিকটি তারা পালন করছে?
তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার একান্ত আবেদন, বিআরটিএ কর্তৃক অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি পুণর্বিবেচনা করার পাশাপাশি গণপরিবহনগুলো যেন পুরোপুরি করোনা বিষয়ক সতর্কতা মেনে চলে তার জন্য যথাযথ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থার নির্দশনা দেন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy