গৃহবধূকে হত্যার উদ্দেশে বিবস্ত্র করে নির্যাতন'দৈনিক সূর্যোদয়ের হস্তক্ষেপে আটক-২
নিরেন দাস,সূর্যোদয় প্রতিনিধিঃ-
নীলফামারীর সৈয়দপুরে মল্লিকা বেগম (৩২) নামে অসহায় এক গৃহবধূকে হত্যার উদ্দেশে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির করার ঘটনার বিষয়ে জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয়ের হস্তক্ষেপে নির্যাতনকারী ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরর পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার প্রধান আসামী নূর ইসলাম (২২) ও তার ভাই নূর জামান (২৩) নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। এঘটনায় দৈনিক সূর্যোদয়ের হস্তক্ষেপে পুলিশের তৎপরতায় বাঁকি অন্যান্য আসামীরা পলাতক রয়েছে।
সোমবার (১২ জুলাই) গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনাটি জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকার সম্পাদকের দৃষ্টিগোচর হলে নির্যাতনের শিকার অসহায় গৃহবধূর পরিবারের পক্ষে সম্পাদক মুঠোফোনে জেলা পুলিশ সুপারকে ঘটনার বিষয়টি জানালে পুলিশ সুপারের নির্দেশে সোমবার বিকেলেই থানায় একটি মামলা দায়েরর পরে সন্ধায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
আটককৃতরা হলেন,নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার চৌমুহনী গ্রামের মৃত.নজির উদ্দিন মালুর দুই ছেলে নূর ইসলাম ও নূর জামান।
ভুক্তভোগী পরিবার ও থানার এজাহার সূূত্রে জানা যায়,গত ৯ জুলাই শুক্রবার বিকেলে অসহায় গৃহবধূ মল্লিকা বেগম তার বসতবাড়ির সামনে তিস্তা ব্যারেজ ক্যানেলের সরকারি জায়গায় জীবিকানির্বাহের জন্য দীর্ঘ ৩ বছর ধরে বাঁশের তৈরি মাচা (জাঙ্গি)তে বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি চাষ করে আসছিলেন। শাকসবজি চাষআবাদকৃত ওই বাঁশের তৈরি মাচা(জাঙ্গি)টি কয়েকদিনের বৃষ্টির ফলে নষ্ট হয়ে ভেঙে পড়লে তা গত শুক্রবার বিকেলে গৃহবধূ মল্লিকা বেগম ভেঙে পড়া (জাঙ্গি) টি সংস্কার করতে গেলে।
এসময়ে আটককৃত আসামীরাসহ আসামী মুনির উদ্দিন ওরফে মংলু (৪৮) ও তার স্ত্রী মোছাঃ নূর নাহার (৪০),মোহাম্মদ আলীসহ অজ্ঞাত আরও ২-৩ জন অসহায় গৃহবধূর ওই জায়গাটি দখলের উদ্দেশে লাঠিসোটা নিয়ে মল্লিকাকে (জাঙ্গি) টি সংস্কার না করার জন্য বাঁধা দেয় এবং (জাঙ্গি) টি তারা ভেঙে ফেললে গৃহবধূ মল্লিকা তাদের বাঁধা দিলে মামলায় প্রধান আসামী নূর ইসলাম তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মল্লিকাকে এলোপাথাড়ি বেধড়ক মারধর শুরু করে এবং তার নূর ইসলামের হুকুমে অন্য আসামীরাও মল্লিকার মাথার চুল ধরে মাটিতে ফেলে তার পঢ়নের কাপড়চোপড় ছিঁড়ে ফেলে বিবস্ত্র করে তারাও বেধড়ক মারধর শুরু করে।
তারা এতেও ক্ষান্ত না হয়ে এক পর্যায়ে প্রধান আসামী নূর ইসলাম অসহায় গৃহবধূ মল্লিকার বুকে লাথিমেরে নদীর পানিতে ফেলে হত্যার উদ্দেশে শ্বাসরোধ করে পানিতে ডুবিয়ে মারার চেষ্টা করে। ধস্ততাধস্তির একপর্যায়ে গৃহবধূ মল্লিকা তার জীবন বাঁচাতে সজোরে চিৎকার করতে থাকলে তার চিৎকার শুনে মল্লিকার দেবর ফারুক চিৎকার শুনে তার ভারবীকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও হত্যার উদ্দেশে তারা বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে মাটিতে ফেলে রাখে।
এমন অবস্থায় ওই গ্রামের লোকজনেরা ছুটে এসে উক্ত আসামীদের হাত থেকে মল্লিকা বেগমকে ছিনিয়ে রক্ষা করলে তারা ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার সময়ে নির্যাতিতা অসহায় গৃহবধূক মল্লিকাকে গ্রামবাসীর সামনেই প্রকাশ্যে প্রাণ নাশের হুমকিসহ তাকে অপহরণ করে চিরতরে গুম করে দেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে গ্রামবাসীরা তাদের দুজনকেই গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
এঘটনায় আরও জানা যায় উক্ত আসামীরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়াই তাদের ভয়ে কেউ মুখ রাজি হয়না কেননা তাদের ক্ষমতার দাপটে এঘটনার আগেও ওই গ্রামের অনেকেই তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন। গত ৯ জুলাই নির্যাতনের শিকার অসহায় গৃহবধু মল্লিবকার সাথে এতো বড় ঘটনার ঘটার পড়েও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে প্রাণের ভয়ে থানায় না গিয়েই নীরবেই ছিলেন মল্লিকা বেগম কেননা তার স্বামী জীবিকানির্বাহের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে কাজের জন্য বাহিরেই থাকেন আর দরিদ্র অসহায় মল্লিকা বেগমের স্বামী না থাকাই সে একাই বাড়িতে থাকেন এ ভয়ে আসামীদের বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা মুখ বুঝে সজ্জ করে ভয়েই ছিলেন।
এতো বড় আলোচিত ঘটনার বিষয়টি একটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় যোগাযোগ গণমাধ্যমের মাধ্যম ফেইসবুকে গৃহবধূকে নির্যাতনের একটি ভিডিও জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকায় সম্পাদক এর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপারকে সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে কল করে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানোর ঘটনার বিষয়টি জানিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বললে। সম্পাদকের দেয়া তথ্য অনুসারে ঘটনাটির বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপারের সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্যাতনের শিকার অসহায় গৃহবধূ মল্লিকার সাথে সাথে যোগাযোগ করাসহ ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিলে সৈয়দপুর থানা পুলিশ চৌহমুনী গ্রামের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মল্লিকাকে বিবস্ত্র করে হত্যার উদ্দেশে মারধর করার ঘটনার সত্যতা পেয়ে নির্যাতিতা গৃহবধূর পাশে দৈনিক সূর্যোদয়ের মতো থানা পুলিশও ওই গৃহবধূর পাশে দাঁড়াই এবং ওই দিনই সরাসরি থানায় একটি এজাহার দায়ের পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী নূর ইসলাম ও তার ভাই নূর জামানকে আটক করতে সক্ষম হয়। তাদের আটকের পর অন্যান্য আসামীরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আবুল হাসনাত খান জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন,পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন আলামতসহ গ্রামবাসীর নিকট থেকে ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় থানায় একটি এজাহার নিয়েই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি আরও জানান পলাতক আসামীদের আটকের জন্য পুলিশ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পাশাপাশি জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পরিবারও নির্যাতনকারী প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অসহায় নির্যাতিত গৃহবধূর পাশে থেকে তৎপর রয়েছে।
উল্লেখ্য ঘটনার উদঘাটন ও প্রভাবশালী আসামীদের আটকের জন্য এবং তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করাই উক্ত প্রভাবশালীরা আসামীরা জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয়ের সাংবাদিককেও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলছে' আমরা সাংবাদিক ও পুলিশদের পকেটে রাখি। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে জামিন তো পাবই" তাদের এ আধ্যাত্মিক খুঁটিরজোর কোথায় তা জানতে জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকার সাথেই থাকুন বিস্তারিত আরও আসছে----