ইমাম হোসেন জীবন চট্টগ্রামঃ
গ্রাহক সেবা না বাড়িয়ে পানির দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক।
গ্রাহক সেবা না বাড়িয়ে পানির দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। সুজনের ফেসবুক পেইজে প্রাপ্ত নোংরা, আয়রন মিশ্রিত দুর্গন্ধযুক্ত পানি সরবরাহ, গড় বিল, অপর্যাপ্ত পানি সরবরাহ, গ্রাহক হয়রানি, লাইন আছে পানি নেই এবং আজগুবি বিল সংক্রান্ত গ্রাহকদের শতাধিক অভিযোগ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর ২০২১ইং) সকালে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ’র সাথে তাঁর দফতরে মতবিনিময় করতে গিয়ে উপরোক্ত মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেওয়ার পর থেকে চট্টগ্রামের জনগনের কাছে সুপেয় পানি পৌঁছে দিতে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন নতুন পানি শোধনাগার প্রকল্প গ্রহণ এবং এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থানও করেছেন। প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন থাকাকালীন সময়ে নগরবাসী মাত্রাতিরিক্ত দুর্ভোগ পোহালেও তাদের মনে অন্তত এটুকু সান্ত¦না ছিল যে কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে গ্রাহকগন নিরবচ্ছিন্ন পানি সুবিধা পাবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে তাদের সে আশা গুড়ে বালি। চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকার ওয়াসার বেশিরভাগ গ্রাহকই প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে বছরের পর বছর। বিশেষ করে নোংরা, আয়রন মিশ্রিত দুর্গন্ধযুক্ত পানি সরবরাহ, গড় বিল, অপর্যাপ্ত পানি সরবরাহ, গ্রাহক হয়রানি, লাইন আছে পানি নেই এবং আজগুবি বিল নিয়েই গ্রাহকের সীমাহীন অভিযোগ। এসব অভিযোগ থাকার পরেও বছরের পর বছর ওয়াসার বিল পরিশোধ করছেন গ্রাহকগণ। তারপরও অজানা কারণে গ্রাহকদের এসব অভিযোগ নিস্পত্তির কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না। প্রায়শই নগরবাসী ওয়াসার গ্রাহক সেবা নিয়ে আমাদের নিকট অভিযোগ করে। আমরাও অভিযোগগুলোর সমাধানের জন্য ওয়াসার কাছে প্রেরণ করি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে প্রায়ই গ্রাহকদের অভিযোগগুলো সমাধান হয় না। এতে করে ওয়াসার প্রতি নগরবাসীর নেতিবাচক ধারনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার নগরবাসীকে সুপেয় পানি প্রদানের লক্ষে বিভিন্ন নতুন নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। তারপরও গ্রাহকগণ কাংখিত সেবা না পাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। এর ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশাল উন্নয়ন কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তিনি ওয়াসার এমডিকে পানির দাম বৃদ্ধির পরিবর্তে গ্রাহক সেবায় মনযোগী হওয়ার আহবান জানান। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মারফত প্রাপ্ত ওয়াসার বিরুদ্ধে গ্রাহকদের শতাধিকেরও বেশি অভিযোগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওয়াসার এমডি’র নিকট হস্তান্তর করেন সুজন। তিনি প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে অতিসত্বর গ্রাহক ভোগান্তি নিরসনের দাবী জানান।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ আন্তরিকতার সাথে সুজনের বক্তব্য শুনেন। তিনি গ্রাহকদের উত্থাপিত অভিযোগের গুরুত্ব উপলব্দি করে সমস্যাগুলো দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণসহ আলোচনা করে সমাধানের জন্য তাৎক্ষণিক প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন নগরবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহ করতে বাস্তবিক অর্থে কাজ করছে ওয়াসা। গ্রাহকদের ভোগান্তির জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন গ্রাহক ভোগান্তি নিরসনে দিন রাত কাজ করছে ওয়াসার প্রকৌশলীগণ। চলমান কাজগুলো সম্পন্ন হলে গ্রাহক ভোগান্তি অনেকাংশে কমে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। নাগরিক উদ্যোগ দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীর সমস্যা নিরসনে কাজ করছে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান ওয়াসা এমডি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম, ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম, নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রেজাউল হোসেন দুলাল, খোরশেদ আলম প্রমূখ।