এই যেন বলা যায় পুরো বিশ্বের অভিশপ্ত বছর ২০২০ । সেই বছরে করোনা যেন কেড়ে নিয়েছে মার্মা সম্প্রদায়ের মাহা সাংগ্রাই পোয়েঃ নববর্ষ উদযাপন সহ আদিবাসীদের বড় উৎসব। গেল বছর ২৬ মার্চ ২০২০ সাল হতে সারাদেশসহ বিশ্বে ও মহামারি করোনা কারনে লকডাউন হয়ে যায়। ধমকে যায় সারাবিশ্বে, নিস্তব্ধ হয়ে যায় পুরোবিশ্ব। একে একে ছড়াতে থাকে মৃত্যু মিছিল। । সেই বছর হতে বন্ধ হয়ে যায় আদিবাসিদের বড় উৎসব বিঝু,সাংগ্রাই, বৈসাবি। গেল বছরে সেই উৎসব পালন করতে না পারলেও এই বছরে সবার মনে পোষণ রেখে ছিল গেল বছর চেয়ে এই বছরে বিশাল আকারে ধুমধাম করে মাহা সাংগ্রাই পোয়েঃ সহ বৈসাবি বিঝু পালন করবে। কিন্তু এই বছরের করোনা আক্রান্ত বেড়ে যাওয়া ৫ এপ্রিল হতে ১১ এপ্রিল লকডাউন দেন সরকার। পরে করোনা সংক্রামন যখন আরো দিন দিন মৃত্যু সংখ্যা বাড়তে থাকে ঠিক তখনি দেশে কথা চিন্তা করে সরকার সর্বাত্বক লকডাউন দিয়ে দেই সারাদেশে। চিন্তা পরে যায় মার্মা সহ আদিবাসিদের। শুুুধু তাদের মনে একটায় প্রশ্ন রয়ে যায় এই বছরে কি হবে নাহ “মাহা সাংগ্রাই পোয়ে”? এইদিকে গেল বছরে চেয়ে এই বছরে মাহা সাংগ্রাই পোয়েঃ নববর্ষ উদযাপন করতে না পারায় আবেগ থেকে গেছে মার্মা সম্প্রদায়ে। ইচ্ছে পোষণ ছিল আনন্দ মিছিল যেন বয়ে যাবে এই বছরে।
এইদিকে মার্মা সম্প্রদায়ের বছরে বড় উৎসব মাহা সাগ্রাই পোয়েঃ এর জলকেলি । ১৪ এপ্রিল হতে শুরু হয় মারমা সম্প্রদায়ের মাহা সাংগ্রাই উৎসব। যা বছরে একবার আসে সেই বছরকে নতুন দিন হিসেবে গ্রহন করে ৩ দিন ব্যাপি চলে বিভিন্ন রকমে পিঠা বানানো, জল কেলি, বন্দনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু গেল বছরে না হওয়ার মাহা সাংগ্রাই পোয়েঃ এই বছর যেন পরিকল্পনা ছিল অনেক বড়। লকডাউন দেওয়ার কয়েকমাস আগে সবার মুখে শুধু শোনা যায় এই বছরে সাংগ্রাই হবে যেন বিশাল আকারে। হবে নানা আয়োজন ও নানা অনুষ্ঠান। কিন্তু সেই উৎসব যেন আনন্দ নাই তাদের মাঝে। কেননা মহামারী যেন করোনা কেড়ে নিয়েছে আনন্দ ভরা বড় দিন গুলোকে। কেড়ে নিয়েছে এক স্থান হতে অন্য স্থানে ঘোরাঘুরি ও দাওয়াতে ডাকা প্রিয়জন বাড়িতে ঘুড়তে যাওয়া মুহূর্তগুলো। তবে কিছু কিছু গ্রাম ও এলাকায় ঘরোয়া ভাবে পালন করেছে সাংগ্রাই পোয়েঃ উৎসব। আবার অনেকে মেনে নিতে পারছে না এই লকডাউনকে। আবেগে যেন ভেঙ্গে পড়েছে এই বড় উৎসব দিন গুলো পালন করতে না পারার মারমা সম্প্রদায়ের। আবার কিছু গ্রামে ঘুরে দেখা যায় বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে রেখেছে পাড়াগুলোকে। কিন্তু সেই গ্রামে চলছে ছোট পরিসরে সাংগ্রাই উৎসব।
তবে শহরে দুরবর্তি গ্রাম গুলো সীমিত আকারে মধ্য দিয়ে নিজেদের ভিতর চলছে জল উৎসব, খেলাধুলা ও পিঠা আয়োজন। রুমা, থানছি, রোয়াংছড়ি, এই উপজেলা কিছুটা হলেও আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায়। কিন্তু বান্দরবান সদর পাশ্ববর্তি এলাকাতে নাই কোন আনন্দমহল নেই কোন উৎসব। শুধু দেখা যায় বৌদ্ধ মন্দিরে ভিক্ষুকে ,মোমবাতি, অর্থ ও ফলমুল দান করে এসেছে অনেকে। উৎসব ও আয়োজন করছে ঘরোয়া পরিবেশে তাও নিজের ঘরের ভিতর। নিস্তব্ধ যেন গ্রাম গুলো। তবে তারা মনে করছেন এই মহামারি করোনাকে কাটিয়ে আগামী বছরে বড় ধরনে উৎসব ও উদযাপনে করা পরিকল্পনা হবে বড়। সেই আশাকে ব্যক্ত করে মারমা সম্পাদায়ের মাঝে আগামি দিনে পরিকল্পনা করছে সবার।
শহর পার্শ্ববর্তী ৩নং সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাচপ্রু মার্মা জানান, এই করোনা আমাদের বড় উৎসব কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু মৃত্যু সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে সেই দিক থেকে চিন্তা করলে ভয় হয়। তবে এই বছরে না হলেও আগামী বছর পালন করব। আনন্দ চেয়ে আমাদের সবার জীবন খুবই মুল্যবান। তবে গ্রামে ছোট পরিসরে গ্রাম যুবক যুবতী পালন করছে গ্রাম ভিতরে। কিন্তু এই লকডাউনে বাইরে মানুষকে গ্রামে প্রবেশ করতে দিবেননা এলাকাবাসি।
এইদিকে ৪নং সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা বলেন, গ্রামে সবাইকে তেমন ভাবে সাংগ্রাই পালন না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। বিহারে কাউকে না উঠার জন্য বলা হয়েছে। তবে গ্রামে ভিতরে মানুষ ছাড়া বাইরে মানুষকে না আসার বলা হয়েছে। তবে প্রত্যেক গ্রামে যুবক যুবতী নিজ নিজ পাড়ারস্তরে সাংগ্রাই উৎসব পালন করছে। বলেন, এই মহামারি একদিন কাটবে ও দেশের শান্তি ফিরে আসবে ও সেই সাথে সবাই একদিন হাসি মুখে উদযাপন করা যাবে বলে এই আশাব্যক্ত করেন।
Leave a Reply