প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ৪:২১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ৩০, ২০২১, ৭:১০ পি.এম
চকরিয়া বরইতলী ইউপি নির্বাচনের মারপ্যাঁচঃ
ওসমান সরওয়ার প্রতিবেদকঃ
শুরুতেই নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামানকে অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি ওনার নির্বাচনী আলোচনা :
তিনি প্রথম নির্বাচনেই ৩ হাজারের উপরে ভোট পেয়ে অনেকটা জানান দিয়েছিলেন খালি হাতে ফেরার পাত্র তিনি নন। পরবর্তীতে কৌশলগত ও সরকার দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীর চাপের মুখে নির্বাচন থেকে বিরত থাকলেও এলাকায় আঠার মতো লেগে থাকেন, যেকোন দূর্যোগে ও বন্যায় মানুষকে সহযোগিতা করা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, খেলাধুলাসহ সবক্ষেত্রে তাঁর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো, শুধু তাই নয় বেশিরভাগ মানুষের জানাযায়ও তিনি উপস্থিত হতেন বলে জানাযায়। এছাড়াও মানুষ হিসেবে ছিলেন অসাধারণ কিছু গুণের অধিকারী যেমন; সততা, মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ ত্যাগ, ধৈর্য, ধার্মিকতা, ভালো মনমানসিকতা, এলাকার অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে কোন ধরনের দলাদলিতে না গিয়ে কৌশলী সম্পর্ক বজায় রাখেন ভেতরে ভেতরে। এছাড়াও নিজ এলাকার গ্রহণযোগ্য মানুষের পাশাপাশি অন্য মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আঞ্চলিকতার টান সৃষ্টি করতে সক্ষম হন এবং তিনি যেইদলের রাজনীতি করেন সেইদলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টারও কোন ধরনের ঘাটতি ছিলনা। সবমিলিয়ে এবারের বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রেকর্ড পরিমাণ ভোট নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সেরা চমক দেখালেন সদা হাস্যজ্জোল থাকা মোহাম্মদ ছালেকুজ্জমান। ধর্ম, বর্ণ, দলমত সবকিছুর উর্ধ্বে উঠে বরইতলীবাসী আপনাকে যে স্বীকৃতি দিয়েছেন আশা করছি তার প্রতিদানে ভালো কিছু উপহার দিবেন।
এবার আসা যাক,
এটিএম জিয়া উদ্দীন চৌধুরী জিয়ার নির্বাচনী আলোচনা : তিনি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই দুই বারের নির্বাচিত সফল একজন চেয়ারম্যান বলে বরইতলীবাসীর অনেকে মনে করেন, তবে এই দুই নির্বাচনে তৎকালীন প্রভাবশালী দলীয় নেতার সহযোগিতা তিনি পেয়েছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। এছাড়াও তিনি গতবারও দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীর ও দলীয় কিছু নেতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়ার পরও অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। এবারও তিনি দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও আগের চিত্র পাল্টায়নি,মিটিং মিছিলে দলীয় নেতাদের অবস্থান দেখা গেলেও ভোটের দিন কেন্দ্রে বা আশেপাশে কিছু নিবেদিত কর্মী ছাড়া কাউকে দেখা যাইনি। সরকারি দলের প্রার্থী হয়েও কিছু কিছু কেন্দ্রের বুথে এজেন্ট পর্যন্ত ছিলনা। এছাড়া যে এলাকায় সবচেয়ে বেশি ভোট, সেখানে নিজ দলের নেতা ও বাংলাদেশের সত্যিকারের বিরোধী দল বিএনপির নেতারা মিলে অন্য আরেক দলের একজন প্রার্থীকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে অনেকটা মাঠ ফাঁকা করে দেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। এছাড়াও এলাকায় কম উপস্থিতি ও নির্বাচনে কম টাকা খরচ করাও হারের পেছনে কিছুটা দায়ী বলে মনে করেন অনেকে। এতকিছুর পরও তিনি ৫ হাজারের কাছাকাছি ভোট পেয়ে বরইতলীতে তাঁর যে একটা শক্ত অবস্থান আছে সেটার প্রমাণ রাখেন।
দ্বিতীয়তে আলোচনা করা যাক,
গতবারের নির্বাচিত জালাল আহমদ সিকদারকে নিয়ে: তিনি আগের দুটি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ থাকলেও নিজের দল বিএনপির নেতাদের অসহযোগিতার কারণে খুবই অল্প ভোটের ব্যবধানে দুঃখজনকভাবে হেরে যান। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে কাজে লাগিয়ে নিজ দলের নেতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিরোধিতার পরও দলীয় প্রতীক নিয়ে নিজ শক্তিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবার তিনি দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলেও আশা করছিলেন সবসময় এলাকায় অবস্থান করে সার্বক্ষণিক মানুষকে সেবা দেওয়ার কারণে ও দলীয় নেতাদের সহযোগিতায় নির্বাচিত হবেন। কিন্তু আশায় গুড়েবালী,এবারও দৃশ্যপট পাল্টায়নি, নিজ দলের নেতাদের মিটিং মিছিলে দেখা গেলেও বেইমানির চিত্র ফুটে ওঠে ভোটের দিন। এরপরও একটা সাইটে তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক থাকার কারণে ৪ হাজারের উপরে ভোট পেয়ে বরইতলীতে নিজের শক্ত একটা অবস্থানের প্রমাণ রাখতে সক্ষম হন। দলীয় নেতাদের সহযোগিতা থেকে অনেকটা বঞ্চিত হওয়ার পরও তাঁর যে একটা শক্ত অবস্থান আছে সেটার প্রমান রাখতে সক্ষম হন।
পরামর্শ :
বিগত দুই দুই বারের সফল চেয়ারম্যান এটিএম জিয়া উদ্দীন চৌধুরী জিয়া ও সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদারকেও অনেক মানুষ ভোট দিয়েছেন তাই আপনাদের উচিত হবে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের পাশে থেকে সার্বিক উন্নয়নে সহযোগিতা করা, যাতে বেলা শেষে জনগণেরই কল্যাণ হয়। এবং নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামানকে মানুষ যে আশা আঙ্কাংকা নিয়ে ভোট দিয়েছেন তার যথাযথ মূল্যায়ন করা।
ধন্যবাদ ও অভিনন্দন :
সবশেষে বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সকল ইউপি সদস্যদের আন্তরিক অভিনন্দন এবং সুন্দর, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সরকার, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy