চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানাধীন কেরানীহাটের মাইজপাড়া এলাকার চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের উপর মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সময় ৩জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে র্যাব।
আসামীরা হলেন
আসামী মোঃ মামুনর রশিদ (২২), পিতা- আবুল কাছিম, সাং- দক্ষিণ মিঠাছড়ি, থানা- রামু, জেলা- কক্সবাজার‘, মিনহাজুর রহমান মিনহাজ (২৩), পিতা- মৃত নজরুল ইসলাম, সাং- বোয়ালিয়া পাড়া,
থানা- সাতকানিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম ওশহর মুলুক রাশেদ (৪৩), পিতা- মৃত কালা মিয়া, সাং- চৌকিদার বাড়ী, থানা- সাতকানিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম’ আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত এক নম্বর আসামীর হাতে থাকা একটি প্লাষ্টিকের ব্যাগের ভিতর হতে আসামীর নিজ
হাতে বের করে দেয়া মতে ৬০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারসহ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব তথ্যে জানা যায়, ১নং আসামীকে আটক করার পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের আসামী জানায়, সিটিসেন্টারের ২য় তলায় একটি দোকানের ভিতরে আরও কয়েকজন ব্যাক্তি মাদকদ্রব্য ক্রয়/বিক্রয় করছে। র্যাব সদস্যরা তাৎক্ষনিক উপস্থিত সাক্ষীসহ ধৃত আসামীকে নিয়ে উক্ত দোকানটি ঘেরাও করে শাটার খুলে ভিতরে প্রবেশ করলে আসামীকে হাতেনাতে আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে দোকানটি তল্লাশি করে
দোকানের উত্তর পশ্চিম কোনায় রক্ষিত ০২টি প্লাষ্টিকের বস্তা ও ০১টি বাজারের ব্যাগ হতে ২৫ কেজি গাঁজা এবং ৩৩ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারসহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।
এই সিন্ডিকেট হল সিটি সেন্টার, কেরানীরহাট এলাকার কুখ্যাত মাদক গ্রুপ যা ফোরকান গ্রুপ নামে পরিচিত। সিটি সেন্টার শপিং মলটি স্থানীয়ভাবে মাদকের সকল কর্মকান্ডের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
সিটি সেন্টার একটি নির্মাণাধীন ৩ তলা শপিং মল যেখানে প্রায় ৮৫০টি দোকান আছে। মাদক সিন্ডিকেট সিটি সেন্টারের ২য় তলায় খালি ফ্লোরে একটি দোকান ভাড়া নেয় যেটি প্রায় সব ধরনের মাদক মজুদ থাকতো। দোকানের ভিতরে খুচরা ভোক্তাদের জন্য তাদের ভোক্তা সুবিধাও ছিল। গ্রেফতারকৃতরা কেরানিরহাট, সাতকানিয়া এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের সদস্য। তারা সাধারণত ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিলের কারবার করে এবং কক্সবাজার, ফেনী ও কুমিল্লা থেকে কেরানিরহাট, চট্টগ্রামে এসব মাদকদ্রব্য
নিয়ে আসে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ০৫ লক্ষ টাকা।
র্যাব সুত্রে আরো জানা যায়, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মিনহাজ স্টোরম্যান ও ডিস্ট্রিবিউটর। সে সিটি সেন্টারের চারপাশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারির জন্য নিয়মিত
কিশোর গ্রাহকদের একটি দলকে তাদের প্রহরী হিসাবে রাখে। মোঃ মিনহাজ একজন চতুর ব্যক্তি যে র্যাব ও অন্যান্য সংস্থার অপারেটিং সিস্টেম জানে। সে খুব লো প্রোফাইল বজায় রাখে এবং আশেপাশে আইন
প্রয়োগকারী সংস্থার উপস্থিতির অবস্থা সম্পর্কে তার রক্ষীরা তাকে ছাড়পত্র দিলেই কেবল তার ক্রেতাদের সাথে দেখা করেন। তাছাড়া, সে লুকানোর জন্য মুখোশ ব্যবহার করে এবং কাউকে তার মুখ দেখতে দেয় না
এবং গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মামুন মূলত কক্সবাজারের স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী যে ইয়াবা নিয়ে আসে এবং বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে গাঁজা ও ফেনসিডিলের বড় চালান নেয়। সে মিনহাজকে গ্রেপ্তার এবং দোকান খুঁজে বের করার মূল চাবিকাঠি ছিল।
মামুনকে আটকের পর আভিযানিক দল মিনহাজের অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে সাধারণ ধারণা পায়। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ শহর মলুক @ রাশেদ সিন্ডিকেটের প্রধান মোঃ ফোরকানের অংশীদার। শহর মলুক ওই এলাকার বাজার কমিটির বর্তমান সেক্রেটারি যে মাদক ব্যবসায় আশ্রয়, ছাড়পত্র এবং অর্থ বিনিয়োগ করে। সেও একজন চেইন মাদক সেবনকারী। সে ওই এলাকায় ব্যবসায়ী হিসেবে সুপরিচিত এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে যা তাকে তার সুরক্ষার ছায়ায় এই সিন্ডিকেট চালাতে সহায়তা করে। সে সিন্ডিকেট নেতা ফোরকানকে দোকান ভাড়া ও ব্যবসা চালাতে সাহায্য করে। শহর মলুক শহরের কেন্দ্রস্থলের ঠিক পিছনে থাকে এবং একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তার পক্ষে সিন্ডিকেট পরিচালনা করা সহজ ছিল। পরে আসামী ও উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy