চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ এবং পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত ১৩ বছর পলাতক থাকার পর নগরীর মোহাম্মদপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
গ্রেফতারকৃতরা হল : আব্দুর শুক্কুর, তার স্ত্রী শেফালী।
র্যাব-৭ এর বরাত দিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী ভিকটিম (১৯) একজন গার্মেন্টসকর্মী এবং চট্টগ্রাম জেলার পাঁচশাইশ এলাকায় তার মা-বাবার সাথে বাড়া বাসায় বসবাস করছিল। ভিকটিক তার কর্মস্থালে আসা-যাওয়াকালীন বখাটে সিদ্দিক প্রকাশ ডিবি সিদ্দিক ও তার ২/৩ বন্ধুদের সাথে নিয়ে ভিকটিককে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। পরবর্তীতে বখাটে সিদ্দিক বিবাহ করবে বলে আশ্বস্ত করে ভিকটিমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। এরই ধারাবহিকতায় গত ১৩ অক্টোবর রাত ৮ টায় গার্মেন্টস ছুটির পর ভিকটিম বাসার ফেরার পথে আব্দুর শুক্কুর ও কয়ৈতা বেগম শেফালী’র সহযোগীতায় বখাটে সিদ্দিক প্রকাশ ডিবি সিদ্দিক বিবাহ করার কথা বলে ফুঁসলিয়ে ভিকটিমকে মুহাম্মদপুরস্থ একটি বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় সিদ্দিকের পরিবারের কোন সদস্যকে দেখতে না পেয়ে কারণ জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি এবং বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোড়পূর্বক ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে বিবাহের প্রস্তুতির কথা বলে পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন আটকে রেখে জোড়পূর্বক ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ভিকটিমের সন্ধান না পেয়ে ভিকটিমের পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ভিকটিমের কর্মস্থলের বান্ধবী ও আশপাশের লোকজনের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী সিদ্দিক প্রকাশ ডিবি সিদ্দিক এর বাসায় গিয়ে ভিকটিমকে খোঁজে পায়। ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে আব্দুর শুক্কুর ও কয়ৈতা বেগম শেফালী ভিকটিমকে উদ্ধারে বাধা প্রদান করে। পরবর্তীতে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে।
এই ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ২০১০ সালের ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম জেলার পাঁচলাইশ থানায় ৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৬। এরপর ধর্ষক ও সহযোগীরা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করেন। পুলিশ প্রতিবেদন এবং সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত আসামীদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদন্ড প্রদান করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
র্যাব-৭ এর বরাত দিয়ে আরো জানা যায়, র্যা
ব-৭ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী কয়ৈতা বেগম শেফালীকে ২৭ সেপ্টেম্বর অভিযান পরিচালনা নগরীর পাঁচলাইশ এলাকা থেকে কয়ৈতা বেগম শেফালী (৪৫), স্বামীআব্দুর শুক্কুর’কে আটক করে। আটককৃত শেফালী’র দেওয়া তথ্য মতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২টা ৩০ মিনিট পাঁচলাইশ মডেল থানা এলাকা থেকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত অপর পলাতক আসামী আব্দুর শুক্কুর (৫০) গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।