কংকন দাশ, চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে বইমেলা। বুধবার বিকালে নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।
মেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা ও ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। চট্টগ্রামের বইমেলায় স্টলের সংখ্যা এবার বেড়ে হচ্ছে ১৪০টি । আগেরবার ছিল ১২০টি। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মিলিয়ে ১০৮টি প্রকাশনা সংস্থা এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে মেয়র রেজাউল বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পুনর্জাগরণের জন্য একুশে বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। একাত্তরে যে চেতনার ভিত্তিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে পুরো জাতি এক হয়ে লড়েছিল সে চেতনার ধারা আজ দুর্বল হয়ে গেছে।
“বঙ্গবন্ধুর অকাল প্রয়াণের পর
“বইমেলার প্রতিটি বই হয়ে উঠুক মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের অস্ত্র হয়ে, লড়ুক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে – এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
“ভাষা আন্দেলনের তাৎপর্য থেকে শুরু করে স্বাধীনতাযুদ্ধের পরিকল্পনা – সমস্তটাকেই জনগণের কাছে পৌঁছাতে সহযোগিতা করেছে বই। এজন্য চট্টগ্রামবাসীর হাতে হাতে বই তুলে দিতে এই বইমেলার আয়োজন।
“ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানাচ্ছি, যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে বাংলা ব্যবহার করছেন না তারা সাইনবোর্ডে বাংলা ব্যবহার করুন।”
নগরবাসীর প্রতি মেলায় আসার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, “আপনারা মেলায় আসুন, নতুন প্রজন্মের হাতে মোবাইল নয়, বরং বই তুলে দিন।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার বলেন, “রাষ্ট্রের উন্নয়নে চাই শিক্ষার উন্নয়ন। আর ভালো মানের বই ছাড়া ভালো শিক্ষা ব্যবস্থা গড়া সম্ভব নয়। এই বইমেলা আমাদের একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে সাহস যোগাবে।”
সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা, বই মেলার আহ্বায়ক কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, কাউন্সিলর গাজী মো. শফিউল আজিম, হাসান মুরাদ বিপ্লব, নাজমুল হক ডিউক, আবদুস সালাম মাসুম, মো. শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী ও মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, সিসিসি সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ।
মেলার প্রথম দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসা সিসিসি পরিচালিত স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিই ছিল সবচেয়ে বেশি। এর বাইরে লেখক-প্রকাশকরা উপস্থিত থাকলেও ক্রেতা সমাগম ছিল কম।
বুধবার মেলা শুরু হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ১০টি স্টলে দেখা গেছে প্রস্তুতি চলছে। কয়েকটি স্টলে দেখা গেছে বই সাজানোর কাজ চলছে। মেলার মাঠে পায়ে হাঁটার পথটি ইট দিয়ে না করায় ধুলাবালির কারণে ক্রেতাদের ভোগান্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন প্রকাশকরা।