ইমাম হোসেন জীবন চট্টগ্রামঃ
চট্টগ্রামে বিনিয়োগ করতে মুখিয়ে আছি - মার্কিন রাষ্ট্রদূত
উন্নয়নে বিদেশিসহ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব চাই - মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
আজ বুধবার বিকেলে চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে তাঁর দপ্তরে সাক্ষাতকালে এসব কথা বলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও চট্টগ্রামে বিনিয়োগে আগ্রহী। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি ও পর্যটনখাতে বিনিয়োগে ও সম্ভাব্যতা যাচাই পূর্বক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেছেন, ভূ-প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্য এবং একই সাথে পাহাড়-নদী-সমুদ্র-সমতট বেষ্টিত চট্টগ্রাম নগরীর নান্দনিক রূপে আমি মুগ্ধ ও বিমোহিত।
এছাড়া এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর একটি প্রাচীনতম বাণিজ্যিক পোতাশ্রয়। এ কারণে সুদূর অতীতে পৃথিবীর নানা প্রান্তের বণিক, পর্যটক ও ব্যবসায়ীগণ নৌ-বহর নিয়ে চট্টগ্রামে যাওয়া আসা করেছেন। তাই তখন থেকেই চট্টগ্রামের পরিচিতি, কদর, গুরুত্ব ও খ্যাতি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। বর্তমানে চট্টগ্রামে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা ও ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে বলে বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের চোখ চট্টগ্রামের দিকে।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এখন যেভাবে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এবং হচ্ছে তাতে চট্টগ্রাম অচিরেই রিজিওন্যাল ও গ্লোবাল কানেক্টিভিটির কার্যকর যোগসূত্র হিসেবে সংযোজিত হবে। এখানে যে সকল অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো গড়ে উঠেছে তাতে বিশ্বের বড় বড় অর্থনৈতিক শক্তির অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে তার ইতিবাচক প্রভাব শুধু বাংলাদেশ বা অঞ্চলগত নয়, বৈশ্বিকভাবে প্রতিফলিত হবে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত চসিক মেয়রের কাছ থেকে মিয়ানমার থেকে আগত বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের অবস্থা ও সমস্যা এবং কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি বর্তমানে কি অবস্থায় ও কোন স্তরে আছে তা জানতে চান।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত অকৃত্রিম আগ্রহে চট্টগ্রাম এখন বৈশ্বিক সম্পদে পরিণত হচ্ছে। কর্ণফুলী তলদেশ দিয়ে নির্মিত ট্যানেল চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ এ পরিণত করতে যাচ্ছে। রেলপথ কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলে মিয়ানমার হয়ে চীন পর্যন্ত যোগাযোগ সংযোগের দ্বার খুলে যাবে। মিরসরাই ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো শিল্পায়নের ক্ষেত্রে চমক দেখাবে। সমগ্র চট্টগ্রামই পর্যটন শিল্পের দ্যুতি ছড়াবে।
তাই দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ-পরিস্থিতি তৈরী করে দিতে পারাটাই আমাদের এখন বড় কাজ ও দায়বদ্ধতা। এই কাজটা সম্মিলিতভাবেই করতে হবে। এজন্য বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তির সহায়তা ও অংশগ্রহণ প্রয়োজন। একই সাথে আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) উপর জোর দিতে চাই।
চসিক মেয়র মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজদেশে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি ভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, বাংলাদেশ একটি ঘন জনবসতিপূর্ণ জনপদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে তাদেরকে এদেশে আশ্রয় দিয়েছেন এবং তাদের লালন-পালনের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছেন। রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।
এই পরিস্থিতি নিরসনের একমাত্র সমাধান হচ্ছে তাদেরকে দ্রত নিজ মাতৃভূমিতে প্রাপ্য মর্যাদা ও স্বীকৃতি অনুযায়ী প্রত্যাবাসন করা। তিনি রাষ্ট্রদূতকে আরো অবহিত করেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার কারণে করোনার পরিস্থিতিকে সামাল দেয়া সম্ভব হয়েছে। করোনা সংক্রমণ এখনো চলমান থাকলেও তার হার নিম্নমুখী। ইতোমধ্যেই দেশে ২০ শতাংশের বেশি মানুষকে করোনার প্রতিষেধক টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে এবং আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে বলে সরকার আশাবাদী।
তিনি করোনা প্রতিরোধে টিকা সরবরাহসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কাউন্সিলর ফর পলিটিকেল এন্ড ইকোনোমিক অ্যাফেয়ার্স স্কট এ ব্র্যান্ডন, ইকোনোমিক এন্ড কর্মাশিয়াল স্পেশালিষ্ট শাহীনুর সিকদার, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী, অতি: প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী প্রমুখ।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy