আমান উল্লাহ প্রতিবেদক,
আটক দুজন হলেন চাঁদপুরের কচুয়া থানার জুনাসার গ্রামের শিপন হোসেন ও মফিজুল ইসলাম। তারা সম্পর্কে সৎভাই
বুধবার গভীর রাতে কুমিল্লার লাকসাম থানার মুদাফফরগঞ্জ ও চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার বানিয়া দিঘীরপাড় এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
র্যাব-১১ জানায়, মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. শিপন হোসেন গত বছরের অক্টোবর মাস হতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তার ১৪ বছর বয়সী ভাগ্নিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে যায়।
বিষয়টি প্রথমে কিশোরীর মা বুঝতে পেরে তার ভাই মো. মফিজুল ইসলামকে জানালে সে বিষয়টি কারও কাছে প্রকাশ করতে নিষেধ করে। কাউকে জানালে ভিকটিমের পরিবারকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করে দেবে বলে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
এরই মধ্যে মফিজুল ভিকটিমের পরিবারকে লাকসামে একটি ভাড়া বাড়িতে জোরপূর্বক রেখে আসেন। সেখানে থাকা অবস্থায় ভিকটিমকে গর্ভপাত করানোর জন্য জোরপূর্বক ওষুধ সেবন করানো হয়। ওষুধ সেবনের ফলে গত ২৪ মে ভাগ্নিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে একটি
মৃত সন্তান প্রসব করে। এরপর কোনো ধর্মীয় বিধান অনুসরণ না করেই দ্রুত মফিজুল শিশুটিকে দাফন করেন।
পরবর্তীতে মফিজুল বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ভিকটিমের পরিবার ও ভিকটিমকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখান। অকালে গর্ভপাতের কারণে ভিকটিম অসুস্থ হয়ে যায়। মেয়েটির মা মফিজুলকে বিষয়টি জানায় এবং অসুস্থ কিশোরীকে চিকিৎসা করানোর জন্য সাহায্য চায়। মফিজুল কিশোরীর মাকে কোনো সাহায্য না করে তাদেরকে লাকসামের ভাড়া বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি কারও কাছে না বলার জন্য বারবার হুমকি দেয়। আর ধর্ষক মো. শিপন হোসেনকে আত্মগোপনে রাখে।
এক সপ্তাহ আগে মোবাইল ফোনে বিষয়টি র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পকে অবহিত করে ভিকটিমের মা। তারই প্রেক্ষিতে র্যাব-১১, বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে থাকে।
পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি দল বুধবার রাতে কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার মুদাফফরগঞ্জ এবং চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার বানিয়া দিঘীরপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে ধর্ষক মো. শিপন হোসেন (১৯) ও তার সহযোগী মো. মফিজুল ইসলামকে (৩৫) আটক করে। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে আটককৃতরা।
এ বিষয়ে আটক দুইজনের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলার কচুয়াথানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ধর্ষণের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১-এর কোম্পানি অধিনায়ক (উপপরিচালক) মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।