লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
ছেলের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে লালমনিরহাটে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাবা। রবিবার (১৬ আগষ্ট) বিকালে ‘লালমনিরহাট বার্তা’ কার্যালয়ে মামলার আসামি সুমন ইসলাম (৩০) এর পিতা আলহাজ্ব আনসার আলী এই সংবাদ সম্মেলন করেন। তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাকে সংবাদ সম্মেলনে ‘মিথ্যা মামলা’ দাবি করেন।
এর আগে গত ৮ আগষ্ট লালমনিরহাট সদর থানার শাহিদুল ইসলাম (২৩) বাদি হয়ে সুমন ইসলাম (৩০) ও ফরিদুল ইসলাম (২২) নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের একটি মামলা দায়ের করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুমনের পিতা আলহাজ্ব আনসার আলী বলেন,”মামলার বাদী শাহিদুল এবং আমার বাড়ি একেবারে কাছাকাছি। আমার বাড়ির একটি বাড়ি পরেই শাহিদুলের বাড়ি। শাহিদুল আমার ছেলে সুমনকে চাচা বলে ডাকে।বাদী শাহিদুল এবং তার কথিত স্ত্রী মোছাঃ লাইজুর সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত তাদের অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক ছিলো।সুমন এবং শাহিদুল পাশাপাশি থাকার কারণে ৪ আগষ্ট ঘটনার রাতে (রাত ১২ টার পর) সাহিদুল আমার ছেলে সুমনকে ফোন করে অনুরোধ করে, তারা (শাহিদুল এবং লাইজু) কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার জন্য একটি নিরিবিলি ঘর প্রয়োজন। তার অনুরোধ রাখতে আমার ছেলে সুমন শাহিন মোড়ে তার গোডাউনের চাবি দেয়।ঐদিন গভীর রাতে শাহিদুল লাইজুকে সেই গোডাউনে নিয়ে পূর্বের ন্যায় শারিরীক মেলামেশা করে।
সেখানে রাতে কি ঘটেছিলো তা সুমন জানতো না।পরদিন সকালে ঘটনার কথা শুনে সুমন নিজেই শাহিদুল কে ধরে লাইজুর এলাকায় নিয়ে যায় এবং সেখানে গ্রামবাসীর হাতে বিচারের জন্য দিয়ে আসে।
আমার ছেলে সুমন অপরাধী হলে সে নিজেই শাহিদুলকে ধরে গ্রামবাসীর হাতে দিয়ে আসতো না।
গত ১৫/০৮/২০২০ ইং তারিখ রাতে লালমনিরহাটের একটি নিউজ পোর্টালে লালমনিরহাট নিউজ২৪ অনলাইন চ্যালেনে এ মামলার বাদী শাহিদুলের একটি বক্তব্য প্রচারিত হয়েছে।
শাহিদুলের বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে তারা মেয়েটিকে নষ্ট করতে পারে নাই এবং সে নিজেই ওই গোডাউনে লাইজু সহ গিয়েছে। অথচ শাহিদুল মামলার আর্জিতে লিখেছে সাকোয়া বাজার হইতে অস্ত্রের মুখে তাদের দুজনকে তুলে এনে শাহীন মোড়ে সুমনের গোডাউনে ধর্ষণ করে। এমনকি শাহিদুল ফোনে লাইজুকে শারীরিক মেলামেশার প্রস্তাব দিলে মেয়েটি স্বেচ্ছায় রাজি হয়ে ওইদিন গভীর রাতে শাহিদুলের কাছে এসেছিলো।একজন ভালো চরিত্রের মেয়ে কখনোই প্রেমিকার কুপ্রস্তাবে রাজি হওয়ার কথা না।শাহিদুলের কথায় এটাও পরিস্কার হয়েছে, বক্তব্য ধারনের সময়কাল পর্যন্ত তাদের বিয়ে হয়নি। একটি নিউজ পোর্টালে শাহিদুল এবং লাইজুকে সদ্য বিবাহিত দেখিয়ে গনধর্ষনের কথা মিথ্যা এবং জঘন্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে ৪ অগাষ্ট ২০২০ শাহিদুল তার স্ত্রী লাইজু সাকোয়া বাজার হতে বাড়ির দিকে আসছিলো, অথচ তাদের বিয়ের হয়েছে ৫ অগাষ্ট ২০২০ বিকেলে। তাহলে ৪ অগাষ্ট তারা স্বামী স্ত্রী কিভাবে হয়। তারা তো অবৈধ মেলামেশার জন্য রাত ১২ টার পর একত্র হয়েছে। আর ঘটনা যদি সত্যই গনধর্ষন হয়ে থাকে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ওই রাতেই থানায় গিয়ে অভিযোগ করলো না কেন? ঘটনার ৩ দিন পর মামলা করলো কেন?
মামলায় যেই মেয়ের নাম উল্লেখ করা আছে লাইজু আক্তার মিম সে এর আগেও বেশ কয়েকটি ছেলের সাথে নানান ভাবে সম্পর্ক তৈরী করে মিথ্যা ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নেয়। বেশ কিছু দিন আগে গোড়ল ইউনিয়নের দুলাল মিয়ার ছেলে রেজাউল ইসলাম রাতি নামে একজনকে মিথ্যা অভিযোগ দেয় যে কথিত মিম এর পেটে নাকি তার সন্তান। পরে র্যাব এর কর্মকর্তার মাধ্যমে ব্যাপারটা মিমাংসা হয়। এছাড়াও লাইজু অনেক ছেলের সাথে এরকম অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলো যা জানাজানি হলে স্থানীয় গ্রামের লোকজন এবং ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজিজুর রহমান তুহিন বেশ কয়েকটি বিচার করেছিলো।
লাইজু আক্তার মিম এবং শাহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত গোপনে শারিরীক ভাবে মেলামেশা করতো। যার প্রমাণস্বরূপ মোবাইলে কথাবার্তা আমরা অনেক সংগ্রহ করেছি।
মোবাইলের এই কথাবার্তা গুলো আমরা ভাগ্যক্রমে পেয়েছি। আল্লাহ সহায় ছিলো বলেই হয়তো আমরা গোপনীয় এগুলো পেয়েছি। আপনাদের প্রয়োজনে শুনে দেখতে পারেন।”
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজিজুর রহমান তুহিন বলেন, আমি লাইজুর দুইটি বিচার করেছি।
এবিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এরশাদুল ইসলাম জানান,মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে।তদন্ত শেষ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy