জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের কিছু ব্যক্তির বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পৌর সদরের ইসহাক গ্রামের শাহ আব্দুল আজিজের ছেলে, ট্রাস্টের প্রতিষ্টাতা ট্রাস্টি শাহ নুরুল করিম।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে পৌর সদরের একটি হোটেলে উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি শাহ নুরুল করিম ২০০১ সালে আমি সহ জগন্নাথপুর উপজেলার ১১ জন লন্ডন প্রবাসী মিলে জনপ্রতি ১৪শত পাউন্ড জমা করিয়া জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্ট নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করি এবং আমরা প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টী নিযুক্ত হই। ট্রাস্টী একটি গঠন তন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালিত হয় । ট্রাস্টে গঠনতন্ত্র মোতাবেক সকল ট্রাস্টীদের দেয়া অর্থ ব্যাংকে এফডি আর করে তাহার লভ্যাংশ সহ ট্রাস্টের ফান্ড বৃদ্ধি করা হয়। কিছু দিন সুন্দরভাবে ট্রাস্টের কার্যক্রম পরিচালিত হলে তা দেখে ট্রাস্টিও সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান ট্রাস্টীর সংখ্যা ১৫৭ জন। ট্রাস্টো সদস্যদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইসলামী ব্যাংক সিলেট তালতলা শাখায় এফডি আর করা হয়। বর্তমানে ঐ এফডি আরটি বলবত রয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর ট্রাস্টি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে ট্রাস্টিদের দেয়া অনুদানও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অনুদানের টাকা গুলি এফডি আর হিসেবে না রেখে মুরাদাবা বন্ড নামে সমুহ টাকা সংগঠনের সংবিধানও গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে জমা রাখা হয়। গঠনতন্ত্র ৭ এর (৩) এ উল্লেখ আছে প্রতি বছরের লভ্যাংশ হইতে ৪৭ ভাগের ৩ ভাগ গরীব ও মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদের শিক্ষার উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এক ভাগ ট্রাস্টের ফান্ডে জমা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারি শিক্ষা বান্ধব সরকার হিসেবে মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় জগন্নাথপুরের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে সরকার জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করে থাকেন। তার প্রমান হিসেবে একি্রাম ব্যাংক জগন্নাথপুর শাখার হিসাবপত্র প্রদান করা হলো। কিন্তু দুঃখের বিষয় ট্রাস্টী নুরুল হক লালা মিয়া, সাজ্জাদ মিয়া, এম এ নুর, হাসনাত আহমদ চুনু, মুহিব চৌধুরীর যোগযাসসে গঠনতন্ত্র অনুসর না করে বর্তমান ট্রেজারারকে অবগত না করে তাদের নিজস্ব নামে এক্রিম ব্যাংক জগন্নাথপুর শাখার একাউন্ড খুলেন। এতে আমি সহ ৮ ট্রাস্টীদের মধ্যে অর্থ আত্মসাতের গুঞ্জুন চলছে। সংগঠনকে অবগত না করে জায়গা ক্রয় করে বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। ট্রাস্টের জন্য ক্রয়কৃত জায়গাটি হাসনাত আহমদ চুনুর লীজকৃতভূমি। ভূমিটি নদীর পাড়ে থাকায় যে কোন সময় নদী গর্তে ভিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের ম্যানেজ করে হাসনাত আহমদ চুনু তার কম মুল্যের লীজকৃত ভূমিটুকু ট্রাস্টেও নিকট বেশি দামে বিক্রয় করে ট্রাস্টেও বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করেছে। বর্তমানে উল্লেখিত ৫ সদস্যের চক্রটি জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টকে পুজি করে ব্যবসা শুরু করেছে। শিক্ষা উন্নয়নে পরিচালিত ট্্রাস্টকে ব্যবসায় পরিণত করায় আমরা কোন অবস্থায় মেনে নিতে পারছিনা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, হাসনাত আমহদ চুনু, নুরুল হক লালা মিয়া, সাজ্জাদ মিয়া , এম এ নুর ও মুহিব চৌধুরী শিক্ষার উন্নয়নে প্রতিষ্ঠিত মহত একটি প্রতিষ্ঠানের একটি একাউন্ডকে হোন্ডি ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছে। যা ইসলামী ব্যাংক সিলেট তালতলা শাখায় ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের একাউন্ডটি তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। তারা জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের একাউন্ডগুলো তাদের ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিল করতে ব্যবহার করায় ট্রাস্টের ট্রেজাররা সহ কোন সদস্যদের একাউন্ড সম্পর্কে কোন রূপ অবগত করছেন না। ট্রাস্টের বর্তমান ট্রেজারার আব্দুল হালিম লন্ডনে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ট্রাস্টের ট্রাস্টীদের সাথে সমন্¦য় না করে গুটি কয়েকজনের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারনে গত বছরের বৃত্তি বিতরনী অনুষ্ঠানে গরুর মাংস দিয়ে আপ্রায়নের ব্যবস্থা করার হিন্দু ধর্মের অতিথি, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় দেশে বিদেশে ট্রাস্টেও সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। হাসনাত আহমদ চুনু, নুরুল হক লালা মিয়া, সাজ্জাদ মিয়া, এম এ নুর ও মহিব চৌধুরী ২০১০ সালে জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টেও মুরাদাবা বন্ড জামানত রেখে ইসলামী ব্যাংক সিলেট তালতলা শাখা থেকে ১ কোটি টাকার ঋণ উত্তোলন করে। উক্ত টাকা দিয়ে সিলেটের বিভিন্ন জায়গার ভূমি ক্রয় বিক্রয় করে তারা বিপুল পরিমান অর্থের মালিক হন। যার কারনে নির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের কাউকে একাউন্ডের কোন কিছু না জানিয়ে তাদের সিন্ডিকেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন।
তিনি আরো বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের স্বার্থে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের মাধ্যমে জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের সম্পূর্ন হিসেবে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি।