জিহাদ হোসাইন,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ মামলার আসামি জেল থেকে বেরিয়ে এসে সাক্ষীকে হত্যার চেষ্টা করে।এতে ব্যার্থ হয়ে ধর্ষণের সাক্ষীকে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।এসময় হাতে থাকা সাক্ষীর ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ২ দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের পালেরহাটের জাহানাবাদ গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,লক্ষ্মীপুর সদরের দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড জাহানাবাদ গ্রামের কামার বাড়ির মৃত সুলতান আহমেদের বখাটে ছেলে আব্দুল কাদের (৩৫) চলতি বছরের গত ৬ এপ্রিল পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর গ্রামের লিটন ড্রাইভার বাড়ির মৃত রমজান আলীর মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ে (৩৫) কে ফুসলিয়ে তার ঘরে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে। স্থানীয়রা ঘটনার কার্যকলাপ টের পেয়ে হাতেনাতে আব্দুল কাদেরকে আটক লাঠির সাথে বেঁধে রাখে।
ধর্ষকের ভাই স্কুল শিক্ষক আব্দুর নুর (প্রকাশ কামাল) ঘটনাস্থলে গিয়ে সিনেমা স্টাইলের চড়-তাপ্পর মেড়ে ধর্ষক কাদেরকে নিয়ে যায়।
এই নিয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী ওই নারীর বড় ভাই আবুল কাশেম বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় আবদুল কাদেরকে বিবাদী করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।মামলার জি,আর নং- ০৬
প্রশাসনের তৎফরতায় র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১) অভিযান চালিয়ে ধর্ষক আবদুল কাদেরকে গ্রেফতার করত সক্ষম হয়।
প্রায় এক মাস কারাবাস শেষে জামিনে মুক্ত হয়ে একই এলাকার স্বাক্ষী আকলিমা আক্তার (৪০) কে মুক্তারামপুর মালেক মেম্বারের বাড়ির সামনে নির্জন রাস্তায় একা পেয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। আকলিমা আক্তারের আত্ন চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে ধর্ষক কাদের আকলিমা আক্তারকে বেদম মারধর করে হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।এসময় ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স এর বীমা কিস্তি কালেকশনের ১লাখ ৮০ হাজার টাকা, চারটি মোবাইল, একজোড়া রুপার নুপুর, একজোড়া সোনার কানের দুল, একটা সোনার আংটি ছিনিয়ে নেয় কাদের।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমির হোসেন খোকন বলেন- 'মালেক মেম্বারের বাড়ির সামনে রাস্তা এতো নির্জন যে এখানে দিনে দুপুরে মানুষকে খুন করলেও কেউ দেখবে না। এপথে যাওয়ার সময় দেখলাম এই মহিলাকে বেদম মারধর করছে কাদের। মারের চোটে মহিলার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে, চোখ ফুলে গেছে। মহিলাটি হাউমাউ করে কাঁদছে।'
অপর আরেক প্রত্যক্ষদর্শী হাজী মাসুদ বলেন -'আকলিমা আক্তার একজন বীমাকর্মী। সে বীমার কিস্তি আদায় করে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় পূর্ব থেকে ওঁতপেতে থাকা প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণকারী আব্দুল কাদের তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। আকলিমার চিৎকার শুনে আমরা এগিয়ে আসলে কাদের চলে যায়।
পরে এই নিয়ে আকলিমা আক্তার বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় ধর্ষক আবদুল কাদেরকে আসামি করে মারধোরের মামলা দায়ের করেন। যাহার নং-৫২.
আবদুল কাদের তার ঘরে সুন্দরী বউ রেখে এর পূর্বেও বহু নারীকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিভিন্ন প্রলোভনে ধর্ষণ করে। সে কখনো নিজেকে ডাক্তার কখনো সাংবাদিক বা জজ কোর্টের উকিল পরিচয় দিয়ে নিরীহ ও অসহায় নারীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। লক্ষ্মীপুর পাসপোর্ট অফিসের পাশেও একই উপায়ে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীকে বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করেছিল।
বিসিক শিল্প নগরীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন- 'বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার মেয়েকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গেছে কাদের। স্বার্থ শেষে তাকে আর পাওয়া যায়নি।' এমনিভাবে লম্পট আব্দুল কাদের তার ভাই আব্দুর নূর এর আস্ফালনে নারী ভোগের পাহাড় বানিয়েছে।
আবদুল কাদেরের বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করলে তার আপন মেঝো ভাই আবদুর নুর প্রকাশ কামাল কোনো সদুত্তর না দিয়ে তড়িঘড়ি করে ঘরে ঢুকে যান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি রুক্ষ মেজাজে বলেন -' লিখেন,আপনি কি আর লিখবেন। লিখে দেন।' তবে কাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এই নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি একেএম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন- 'আবদুল কাদের একটা লম্পট,চরিত্রহীন প্রকৃতির লোক। সে এক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের দায়ে জেল খেটেছে। বেরিয়ে সাক্ষীকে আবার মারধোর করে।এ বিষয়ে মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy