মাসউদ রানা
১৭ বছর পর দেশে ফিরে মানুষের ভালোবাসায় আর নেতা -কর্মিদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সহসভাপতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদীদল বিএনপির ভার প্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত আইন বিষয়ক উপদেষ্টা ফুলবাড়ীর কৃতিসন্তান ব্যারিস্টার এ.কে.এম কামরুজ্জামান জামান।
ফ্যাসিবাদি সরকারের প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি পিতার মৃত্যুর খবর পেয়েও দেশে আসতে পারেননি। শেষ বিদায়ে পিতার লাশ কাঁধে নিতে পারেননি। তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা.এম এ কাইয়ুম ছিলেন আপাদমস্তক একজন আদর্শ মানুষ।
সময়ের বিবর্তনে ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসন থেকে দেশ ও জাতি মুক্ত হলে দীর্ঘ ১৭ বছর পর তার দেশে ফেরায় গত কয়েকদিন ধরেই জনগণের মাঝে বিপুল উৎসাহ – উদ্দিপনা বিরাজ করছে। প্রতিভাবান জনবান্ধব এই রাজনীতিবিদ কে সংবর্ধিত করতে এলাকাবাসী এবং দলীয় নেতৃবৃন্দ পরিচিতি ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করছে। ব্যারিস্টার এ.কে.এম কামরুজ্জামান জামানের আগমন উপলক্ষে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি ও সকল অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা ও পরিচিতি সভায় তিনি তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ফ্যাসিস্ট সকারের দুঃশাসন থেকে দেশ ও জাতি আজ মুক্ত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা শরিক হয়েছেন, শাহাদাত বরণ করেছেন, আহত হয়েছেন সবার কাছে আমি এবং আমাদের দল কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার এ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য অন্য একটি রাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে যা যা করার দরকার তার সবই করে গেছে। আর বিএনপি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে আপোষহীন, বিএনপি গনতন্ত্রের ক্ষেত্রে ও আপোষহীন। তাই ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ভারতের এই সরকার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কে নিশ্চিহ্ন করতে বীরউত্তম জিয়াউর রহমানের পরিবারকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। সব থেকে বেশি নির্যাতিত হয়েছিল জিয়া পরিবার। চিকিৎসার মৌলিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছিল। চিকিৎসার অভাবে কোকো মারা যায়। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে আজ বেগম জিয়া কে চরম ভাবে সাফার করতে হচ্ছে। নেতা-কর্মিদের উদ্দেশ্যে ব্যারিস্টার জামান বলেন, যারা আন্দোলন -সংগ্রামে বিএনপির ঝান্ডা বহন করেছেন। গুম,নির্যাতনের শিকার হয়েছে তাদের মূল্যায়িত করা হবে। তারাই বিএনপির নেতৃত্ব দিবেন এটাই সঠিক। তবে আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে, ভালোবাসা নিতে হবে, মানবিক ও সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত হতে হবে।
বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চাইলে আমাদের আচরণের পরিবর্তন করতে হবে। বিগত দিনে যেভাবে গুম, খুন, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী এবং নির্যাতন করা হয়েছে। তার যাতে পুনরাবৃত্ত না হয় সে বিষয় সতর্ক থাকতে হবে।
৩১ দফার কথা উল্লেখ করে বলেন, বৈষম্যমুক্ত একটি আধুনিক রাষ্ট্র গঠন করতে যা যা প্রয়োজন বিএনপির ৩১ দফায় তা আছে।বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠিতা জিয়াউর রহমানের ১৯ দফার বিশ্লেষণ এই ৩১ দফা। নেতাকর্মীদের দায়িত্ব গ্রাম গঞ্জে গিয়ে জনগণের কাছে এই ৩১ দফার কথাগুলি পৌঁছে দেয়া। আগামীদিনের রাজনীতি কেমন হবে সে বিষয়ে প্রতিভাবান এ রাজনীতিবিদ বলেন, শুধু স্লোগান ভিত্তিক ট্রেডিশনাল রাজনীতি করলে চলবেনা। জিয়াউর রহমান যেভাবে রাজনৈতিক স্কুল চালু করেছিলেন, সে ভাবে পাড়ায় মহল্লায় রাজনৈতিক কর্মশালা তৈরি করে শিক্ষা, গবেষণার মাধ্যমে বর্হিবিশ্বের সংগে প্রতিযোগিতায় আসতে হবে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ, সততা, দেশপ্রেম অনুসরণ করে সুন্দর শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে হবে।
৩০ ডিসেম্বর (সোমবার) ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা ও পরিচিতি সভায় জেলা বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও ফুলবাড়ী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী খোকনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পার্বতীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ. জেড. এম.রেজওয়ানুল হক, জেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক মহিউদ্দিন বকুল, শাখাওয়াত হোসেন শিল্পি, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মুন্না, জেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোন্নাফ মুকুল প্রমুখ।