1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
টাঙ্গাইলে যৌতুকের দাবীতে শিশু ও নারী নির্যাতন
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন

টাঙ্গাইলে যৌতুকের দাবীতে শিশু ও নারী নির্যাতন

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০২০, ৬.৩১ পিএম
  • ৩৬৫ বার পঠিত

আজগর পাঠান :  টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইলে দুই দফায় ৮ লক্ষ টাকার যৌতুক নিয়েও পুনরায় ১০ লক্ষ টাকার যৌতুকের দাবী মেটাতে না পারায় স্ত্রী শারমিন আক্তারের (শাম্মী) উপর স্বামী জুয়েলের দ্বারা নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।এ ব্যাপারে ২৭/১২/২০১৭ইং তারিখে টাঙ্গাইল বিজ্ঞ আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারায় শাম্মী বাদী হয়ে মামলা রজু করে যার নং- ৫১৯/২০১৭।

শাম্মীর উপর মারপিট নির্যাতনের পর শিশু সত্মান নিয়ে পালিয়ে গিয়ে পিত্রালয়ে আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি।উল্টো ডিভোর্স দিয়ে শাম্মীকে ও তার পরিবারকে নানা ভাবে হয়রানী ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।তাই স্ত্রী-সত্মানের অধিকার আদায়ে সুবিচারের আশায় দ্বারে  দ্বারে ঘুরছে শারমিন আক্তার (শাম্মী)।

মামলার বিবরণে জানা যায় গত ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০১৫ইং তারিখে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইলের জামুরিয়া গ্রামের আমিনুর রহমানের পুত্র মোঃ জুয়েল মিয়ার সঙ্গে ঘাটাইল পৌরসভার পশ্চিম পাড়ার মোঃ আব্দুল মজিদের কন্যা মোছাঃ শারমিন আক্তার শাম্মী ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।বিবাহের সময় কন্যার অভিভাবক বর পক্ষকে মোটর সাইকেল ক্রয় করার জন্য নগদ ৩ লক্ষ টাকা, খাট, স্টীলের আলমারী, শো-কেস, ওয়্যারড্রোব, আসবাব-পত্র বাবদ ১ লক্ষ টাকা, স্বর্ণের গলার হার, কানের দুল, হাতের বালা মোট ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার যার মূল্য ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু কিছুদিন ঘর-সংসার করার পর স্বামী জুয়েল মিয়া তার স্ত্রীকে ঘর করার জন্য আরও ৩ লক্ষ টাকা আনিয়া দেওয়ার জন্য চাপ ও মানসিক নির্যাতন চালায়।শাম্মী আক্তারের পিতা, মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আবারও বিবাদী জুয়েলকে  ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করেন।তাদের সংসার জীবনে শাম্মী আক্তারের গর্ভে বিবাদী জুয়েল মিয়ার ঔরসজাত এক কন্যা সত্মান জন্ম নেয় যার নাম রাখা হয় জুঁই ফেরদৌস বুশরা। বর্তমানে তার বয়স ২ বছর ৬ মাস।

ফুটফুটে শিশু সন্তান নিয়ে শাম্মী ও জুয়েলের সুখী সংসার হওয়ার কথা কিন্তু  জুয়েল মিয়ার মনে অবৈধ যৌতুকের লোভের কারণে,পুনরায় আরও ৫ লক্ষ টাকা আনিয়া দিতে স্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করে।পরে শাম্মী ৫ লক্ষ টাকা আনিয়া দিতে অপারগতা প্রকাশ
করলে জুয়েল মিয়া তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।

পরে গত ২৭/১২/২০১৭ইং তারিখে টাঙ্গাইল বিজ্ঞ আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারায় শাম্মী বাদী হয়ে মামলা রজু করে যার নং- ৫১৯/২০১৭। বিজ্ঞ আদালত বিবাদীর প্রতি সমন জারী করে। গত ১৪/১২/২০১৮ইং বিজ্ঞ আদালতের সমন প্রাপ্ত হয়ে জুয়েল মিয়া যৌতুক দাবী ও মারপিট না করার শর্তে উক্ত মামলাটি আপোষের মাধ্যমে উঠিয়ে নেয়।

মামলাটি আপোষের মাধ্যমে উঠিয়ে নেওয়ার পর পুনরায়  আবারও  জুয়েল মিয়া তার স্ত্রীর নিকট  ১০ লক্ষ টাকার যৌতুক দাবী করে। দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় শাম্মীকে মারপিট করিয়া কন্যা সত্মানসহ এক কাপড়ে তাড়িয়ে দেয়। স্ত্রীর শাম্মী ও শিশু সন্তান  ফেরদৌসকে তাড়িয়ে দিয়েও ক্ষান্ত হননি বিবাদী জুয়েল মিয়া। জুয়েল মিয়া তার শ্বশুরের নিকটে গিয়ে ১০ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং টাকা না দিলে সে স্ত্রীকে তালাক দিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে আসে। পরে দাবীকৃত টাকা না পেয়ে গত  জুয়েল মিয়া তার স্ত্রী শারমিক আক্তার (শাম্মী) কে ডিভোর্স দেয়।

এখানে উল্লেখ্য থাকে যে, শাম্মী ডিভোর্সের কথা জানতে পেরে বাধ্য হয়ে গত ১৮/১০/২০১৮ইং তারিখে টাঙ্গাইল বিজ্ঞ আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ও ৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।উক্ত মামলাটি এখনও চলমান আছে।কিন্তু স্বামী জুয়েল মিয়া এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ও তার পরিবারকে নানাভাবে হয়রানী করছে।
এমতাবস্থায় ন্যায় বিচারের আশায়  ২ বছর ৬ মাসের শিশু কন্যাকে  নিয়ে মা-শাম্মী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, মানবাধিকার সংস্থা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী, বাংলাদেশ আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদের সহ-সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী এ্যাড. মোঃ আলী হোসেন বলেন, একটি পরিবারকে বারবার যৌতুক দাবী, যৌতুক আদায়, শিশু-সত্মান সহ স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেওয়া বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। যৌতুকের জন্য শারমিন আক্তার শাম্মী বারবার নির্যাতিত হচ্ছে।স্বামী জুয়েল মিয়ার নির্যাতনে শিশু-সত্মান নিয়ে পিত্রালয়ে অবস্থান করেও শেষ রক্ষা হয়নি। স্বামীর পুনরায় দাবীকৃত ১০ লক্ষ টাকার যৌতুক না দেওয়ায় ডিভোর্স দিয়েছে। এতে করে স্ত্রী স্বামীর, শিশু-সত্মান পিতার অধিকার থেকে বঞ্চিত।অসহায় শাম্মী ও শিশু-সত্মান ও তার পরিবার সমাজে হেয় প্রতিপন্ন ও অপমানিত হয়ে পড়েছে এবং চরমভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে অসহায় পরিবারটি।আমি একজন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী হয়ে অসহায় শাম্মী ও তার শিশু-সত্মানের অধিকার আদায়ে আদালতের পাশাপাশি সামাজিক ভাবে দায়বদ্ধতা রয়েছে বলে মনে করি।তাই আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সমাজপতি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে শাম্মী ও তার শিশু-সত্মানের  মানবাধিকার রক্ষায় অসহায় পরিবারটি পাশের দাড়ানোর জোর দাবী জানাচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews