রাসেল চৌধুরী
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারি গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্তে। এপার থেকে আগুনের কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় টেকনাফ পৌরসভার জালিয়া পাড়ারস্থল সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে শব্দ শোনা যায় ও আগুনের কুণ্ডলী দেখা গেছে।
টেকনাফ পৌরসভার সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘রাতে সীমান্তের ওপারে আগুনের কুণ্ডলী দেখা গেছে। এর আগের দিন বিকট শব্দ শোনা গেছে, আজও শোনা গেছে।’
সীমান্তের গোলার বিকট শব্দ বন্ধ হয়নি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিন জালিয়াপাড়ার বসবাসকারী আবুল আলী। তিনি বলেন, ‘আজও (শুক্রবার) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সীমান্তের মানুষ গোলার বিকট শব্দ পেয়েছি।’
এদিকে জানা গেছে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফনদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফনদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে। সেটি চলমান এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সব সময় প্রস্তুত সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও কোস্টগার্ড।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তে বাসিন্দারা আজকেও ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়ার কথা বলেছেন। আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যরা দেশের অভ্যন্তরে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন।’
এদিকে আরকান আর্মি মংডু টাউনশিপ দখল করে নিয়েছে বলে অসমর্থিত তথ্য পাওয়া গেছে। দেশটির সরকারি সংস্থা বিজিপির সদস্যদের কেউ কেউ বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। চলতি মে মাসে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের ১২৮ জন বিজিপি সদস্য এপারে আত্মসমর্পণ করেছে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের কাছে। নিরস্ত্র করে সবাইকে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়। বর্তমানে বিজিপির ১২৮ জনকে হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। এর আগে দুই দফায় পালিয়ে আসা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ৬১৮ জনকে ফেরত পাঠানো হয়। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৮৮ জন বিজিপি সেনা এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জন বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।