বিনোদন ডেস্ক: ঘুরে ফিরে একই মুখ আর দেখতে চান না দর্শক। তাই টেলিভিশন নাটকে আস্থা বাড়ছে নতুনদের। শ্রম, মেধা ও অভিনয়গুণে নির্মাতা ও প্রযোজকদের কাছে ধীরে ধীরে নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছেন তরুণ প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীরা। তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে দর্শকদেরও কাছে। নাটক দেখতে বসলেই দর্শকরা খোঁজেন সেসব নতুনের মুখ। ইউটিউব চ্যানেলেও বেছে নেন নতুনদের নাটক। নাটকে দিন দিন তাদের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিনয়েও ব্যস্ততা বাড়ছে নতুনদের। আজ এখানে তো কাল ওখানে ছুটে চলেছেন শুটিংয়ে। করোনাকালেও থেমে থাকেনি তাদের গতি। টিভি নাটকের উদীয়মান তারকা তাসনিয়া ফারিণ। অভিনয়ের জগতে বয়স খুব একটা বেশি নয়। কিন্তু তার পরিচিতি অল্প সময়েই জোয়ারের পানির মতো হুহু করে বেড়েছে। সাবলীল অভিনয়ে দর্শকের মনে জায়গা পেয়েছেন অল্প দিনেই। নাটকনির্মাতাদেরও তার প্রতি আস্থা বেড়েছে বহুগুণে। ফলে সমসাময়িক অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে ফারিণের ব্যস্ততাই বেশি। কখনো দস্যি মেয়ে, কখনো বোকা-সোকা প্রেমিকা আবার কখনো বড়লোক বাপের অহঙ্কারী মেয়ে হয়ে পর্দায় হাজির হোন তিনি। বাদ যায়নি রোমান্টিক ঘরানার নাটকও। রোজা ও কোরবানির ঈদের ৩১টি নাটকে অভিনয় করেছেন তাসনিয়া ফারিণ। গত ঈদে অপি করিম, ঈশিতার পর তার নামই বেশি আলোচিত হয়েছে। ঈদ শেষে একই ধারাবাহিকতায় ফিরেছেন কাজে। একের পর এক অভিনয় করছেন নাটকে। ফারিণের শুরুটা হয়েছিল মডেলিং দিয়ে। অভিনয়ে এলেন ২০১৮ সালে। অভিনয়ে নিয়মিত হয়েছেন গত বছর থেকে। পড়াশোনার একটা ধাপ (অনার্স) সম্পন্ন করেছেন এরই মধ্যে। ভেবেছিলেন ২০২০ সালটা অন্য রকম কাটবে, অনেক বেশি সময় দিতে পারবেন শোবিজে। কিন্তু পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দিল করোনা। তবু দুই ঈদে ফারিণ অভিনীত ৩১টি নাটক প্রচারিত হয়েছে! রোজার ঈদে ১৬টি, কোরবানির ঈদে ১৫টি! নাট্যাঙ্গনের নতুনদের আরেক জন কেয়া পায়েল। অভিনয়ে অভিষেক হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন ‘ইন্দুবালা’ সিনেমাখ্যাত এ অভিনেত্রী। গেল কোরবানির ঈদে তিনি অভিনয় করেন সর্বাধিক নাটকে। তাকে ১৪টি খন্ডনাটকে এবং তিনটি সাত পর্বের ঈদ ধারাবাহিকে দেখা গেছে। ঈদে মোস্তফা কামাল রাজের ‘অবুঝ মন’, ফুয়াদের ‘শর্ত প্রযোজ্য’, ইমরাউল রাফাতের ‘বাঘের খাঁচা’, গোলাম সোহরাব দোদুলের ‘সাইলেন্ট জোন’, জুয়েল হাসানের ‘এক দফা এক দাবি’, অলোক হাসানের ‘ইয়ে করে বিয়ে’, ‘প্রবলেম টু পয়েন্ট ফাইভ’, ‘চিলে কোঠার বাদশা’, মেহেদী হাসান হৃদয়ের ‘কোয়েশ্চেন’, শহীদ উন নবীর ‘কুফা জয়নাল’, হাসান রেজাউলের ‘হয়তো তোমারই জন্য’, শামীম জামানের ‘ট্রাম্প কার্ড’, গোলাম সোহরাব দোদুলের ‘বনেভোজন’ এবং জাহিদ হাসানের ‘বুড়া জামাই’ নাটকে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়। ২০১৮ সালে রাসেলের নির্দেশনায় ‘রূপকথার রঞ্জনা’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন কেয়া পায়েল। এর আগের বছর সোহেল আফগানীর নির্দেশনায় একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়ে মিডিয়াতে কেয়া পায়েলের যাত্রা শুরু। তাহসানের ‘ভালোবাসি তাই’ গানে তিনি প্রথম মিউজিক ভিডিওর মডেল হন। বর্তমানে এই অভিনেত্রী নাটক নিয়ে ব্যস্ত আছেন। এই প্রজন্মের প্রতিশ্রম্নতিশীল আরেক অভিনেত্রী নিশাত প্রিয়ম। অভিনয়ে তার পথচলা খুব বেশি দিন না হলেও নিজেকে পরিণত করেছেন ব্যস্ত অভিনেত্রী হিসেবে। বর্তমানে ধারাবাহিক এবং খন্ড নাটক নিয়ে দিনরাত পার করছেন তিনি। সম্প্রতি শেষ করেছেন আবু হায়াত মাহমুদের নির্দেশনায় ‘কোটিপতি’, আশরাফুল চঞ্চলের নির্দেশনায় ‘ডায়মন্ড নেকলেস’, সাজিন আহমেদ বাবুর ধারাবাহিক নাটক ‘কর্পোরেট ভালোবাসা’। বর্তমানে এনটিভিতে প্রচার হচ্ছে এজাজ মুন্না পরিচালিত ‘শহরালী’। নিশাত প্রিয়ম বেশকিছু সিনেমাতেও কাজ করার প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমায় কাজ করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নন বলে মনে করেন। পূর্ণাঙ্গরূপে সিনেমার জন্য প্রস্তুত করেই সিনেমায় কাজ করবেন বলে জানান প্রিয়ম। নিশাত প্রিয়ম সাজ্জাদ সুমনের পরিচালনায় ‘ছলে বলে কৌশলে’ ধারাবাহিকে প্রথম অভিনয় করেন। তার অভিনীত প্রথম খন্ড নাটক ছিল আর বি প্রীতমের ‘সেকেন্ড লাইফ’। এই সময়ে টিভি নাটকের হাসি মুখ জিয়াউল হক পলাশ। সহকারী পরিচালক হিসেবে মিডিয়ায় কাজ শরু হলেও এখন অভিনেতা। পরিচালক থেকে হুট করে হয়ে গেলেন অভিনেতা! একে একে অভিনয় করেছেন- ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’, ‘এক্স বয়ফ্রেন্ড’, ‘এক্স গার্লফ্রেন্ড’, ‘ব্যাচেলর ঈদ’, ‘ব্যাচেলর ট্রিপ’, ‘মি অ্যান্ড ইউ’, ‘ইনকমপিস্নট’, ‘মুঠোফোন’সহ অসংখ্য নাটকে।