কামরুল হাসান মহানগর প্রতিনিধি,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলে জোর করে প্রবেশ করেছেন কিছু শিক্ষার্থী। শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আগামী ৫ অক্টোবর থেকে আবাসিক হল খোলার সিদ্ধান্ত থাকলেও এর আগেই হলে প্রবেশ করলেন তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার অনুরোধ জানালেও তাতে সাড়া দেননি তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ৫০-৬০ শিক্ষার্থী হলে যান। তারা মূল ফটকের সঙ্গে থাকা ছোট গেট দিয়ে ঢোকেন। এ সময় ভেতরের ভবনগুলো তালাবদ্ধ ছিল। শিক্ষার্থীরা সেগুলো ভেঙে ঢুকে পড়েন।
হলটির আবাসিক শিক্ষার্থী সারজিস আলম সমকালকে বলেন, ‘হল ছেড়ে আমরা কই যাব? ঢাকা শহরে কেউ কারও বাসায় এক দিন রাখতে চায় না। তবে ৫ তারিখ পর্যন্ত আমাদের অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা করলে আমরা হল ছাড়ব।’
রাকিব হাসান নামে অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা এতদিন ধৈর্য ধরতে পেরেছি। আর তিন দিন পারছি না কেন- এটা তো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বুঝতে হবে। আমরা কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে হলে উঠেছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই দাবি জানিয়ে আসছি ১ তারিখ হল খুলতে হবে। এই পাঁচ দিনের জন্য আমরা মেস ভাড়া দিতে পারব না। প্রশাসন আমাদের সঙ্গে প্রহসন করেছে। আমরা আজ থেকেই হলে থাকব। তাছাড়া ঢাকায় আমাদের থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘অমর একুশে হলের প্রাধ্যক্ষ আমাকে অনুরোধ করলে আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যাই। তাদের ৫ তারিখের আগে হলে না ওঠার অনুরোধ জানাই। কিন্তু তারা হল থেকে চলে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।’
অমর একুশে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইশতিয়াক এম সৈয়দ বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী হলে প্রবেশ করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে বৈঠক করছি। আশা করি, সুষ্ঠু সমাধান হবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। হল প্রশাসনকে তাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করতে বলা হয়েছে। যারা হলে প্রবেশে করেছে তারা শিক্ষার্থী নয়। আমি বিশ্বাস করি, কোনো নিয়মিত ও মেধাবী শিক্ষার্থী এ কাজ করবে না। তারা কারা, তাদের পরিচয় কী, তারা কোন উদ্দেশ্যে এটা করছে- এসব জানার চেষ্টা চলছে।’
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২০ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন থেকে হলগুলো বন্ধ আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র দেখে ৫ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের হলে তোলা হবে।