খুলনা প্রতিবেদক:
তদন্তের নামে হয়রানী বন্ধ ও দোষীদের বিচার দাবীতে একজন গৃহবধু সংবাদ সম্মেলন করেছেন।বুধবার খুলনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী গৃহবধু মোছাঃ জান্নাতুল মাওয়া। তিনি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার বাসিন্দা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার রুস্তম সাহেবের বাসার দ্বিতীয় তলা বাম পার্শ্বে ফ্লাটে আমি আমার পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকি। আমার স্বামীর নাম ইয়াসিন আরাফাত। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। একই বাসার তৃতীয় তলা ফ্লাটে ইরানী খাতুন (৩৮) তার স্বামী শেখ আলমগীর হোসেন (৩৯), পিতা শেখ আনোয়ার হোসেন, মাতা লুৎফুন্নেছা, গ্রাম: আরাজী ডুমুরিয়া (৪ সদস্য) ফ্যামিলি নিয়ে থাকেন। তারা সকলে আমাদের বাসায় নিয়মিত যাওয়া আসা করতো এবং তাদের বাচ্চারা শুধু স্কুল টাইম ছাড়া প্রায় সময় আমাদের বাসায় থাকতো। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের মাঝের দিকে আমার বাসায় মেহমান আসে, আমি রান্নায় ব্যস্ত থাকি। তখন আমার বাচ্চার সাথে তাদের বাচ্চা দুটো খেলাধুলা করছিলো। আমার মেয়ের গলায় একটা সোনার চেইন ছিল। আমার মেয়ে বাবাকে বলে বাবা আমার চেন খুলে দাও। তখন চেইনটা খুলে মেয়ের হাতে দিয়ে বলে তোমার আম্মুর কাছে দিয়ে এসো। কিন্তু মেয়ে আমার কাছে দেয়নি। সেটা আমি খেয়াল করিনি। দুদিন পরে আমি চেইনটা খুঁজতে থাকি। কোথাও না পেয়ে তিন তলার বাচ্চাদেরকে জিজ্ঞাসা করি তারা বলে আমরা নেইনি। তখন আমি তিন তলার ইরানির কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন বাচ্চারা আনে নি। কিন্তু তাদেরকে সন্দেহ করি। আমি বিভিন্নভাবে বের করার চেষ্টা করি। সেই থেকে আমার বাসায়
আর আসতে দেয় না ইরানি খাতুন ও আলমগীর হোসেনের বাচ্চাদের। তিনদিন পরে বাচ্চাদেরকে নিয়ে সন্ধ্যায় আমার বাসায় আসে ইরানি। আর আমি ডাইনিং এ বসে কথা বলছিলাম। ইরানির ছেলে আমাদের রুমে যায়।
সেখানে বেডের উপরে ফিশিং গেম নামে একটা খেলনা রাখা ছিল। তার ছেলে পকেট থেকে চেইনটা বের করে খেলনার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। যেটা আমরা দেখে ফেলি। সেই থেকে আবারও স্বাভাবিকভাবে আমার বাসায় আসতে শুরু করে তারা। গত নভেম্বরে আমার বাসায় একটি অনুষ্ঠানে আমার গহনা গুলো আমি পরেছিলাম। সেদিনই ইরানি আমার গহনা গুলো সব দেখে। তারপর থেকে ইরানি আমার বাসায় একটু বেশি যাওয়া আসার মধ্যে আমার সাথে একটু বেশি সখ্যতা করার চেষ্টা করে। ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় আমার শ্বশুর খুব অসুস্থ হলে তাকে দেখতে আমরা সবাই গ্রামের বাড়িতে যাই। ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিকাল ৫:৩০ টায় বাসায় ফিরে আসি। তখন দেখতে পাই আমার ফ্ল্যাটের ঢোকার দরজায় লাগানো তালা ভাঙ্গা রয়েছে। তখন ভিতরে ঢুকে সবকিছু এলোমেলো দেখি। আমার ওয়ারড্রয়ারে থাকা একজোড়া স্বর্ণের চুরি (১২ আনা), একজোড়া স্বর্ণের রুলি (২ ভরি), একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল (৬ আনা), দুটি স্বর্ণের চেইন লকেট সহ (১৫ আনা), আটটি স্বর্ণের নাকফুল, তিনটি স্বর্ণের আংটি (১ভরি ৪ আনা) এবং বিভিন্ন ধরনের রৌপ্য অলংকারসহ নগদ ৮০ হাজার টাকা। সর্বমোট মূল্য ৬ লাখ ৫১ হাজার ২৫০ টাকা চুরি হয়ে যায়। এই ঘটনার পর বাড়ির তৃতীয় তলা ফ্লাটে থাকা ইরানি খাতুন ও তার স্বামী আলমগীর হোসেনের চলাফেরা আচরণে সন্দেহ হয়। তখন ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করি। সিসিটিভি ফুটেজে ইরানি খাতুন তার স্বামী আলমগীর হোসেন এবং ইরানির ভাই হাফিজুর রহমান শেখকে দেখা যায়। যার ফলে তাদের প্রতি সন্দেহটা বেড়ে যায়। বাড়িওয়ালী আন্টির সাথে তিনতলা ইরানের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক। কিন্তু ইরানি কে অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখে ওই আন্টি বলে কি হয়েছে আপনারা এমন করছেন কেনো। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, তাদের চলাফেরা সন্দেহজনক হওয়ায় এবং বাড়ির সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাদের উপর সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। তখন আমরা গত ২৯ ডিসেম্বর ডুমুরিয়া থানায় অজ্ঞাত নামা চুরির অভিযোগ দায়ের করি। সেই থেকে এ ব্যাপারটা ধামাচাপা দিতে এসপি মনিরুজ্জামান মিঠুন শরণাপন্ন হয় ইরানি খাতুন ও তার স্বামী আলমগীর হোসেন। তখন এসপি মনিরুজ্জামান মিঠুর নির্দেশে ডুমুরিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়াজ দারোগাকে চাপ প্রয়োগ করে এসপির ভাই বাচ্চু। সেই থেকে তদবির করতে শুরু করে এসপি মনিরুজ্জামান মিঠু সহ তার ভাই বাচ্চু। তারপর বিজ্ঞ আদালতে আমার স্বামী শেখ ইয়াসিন আরাফাত বাদী হয়ে একটি এজাহার দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর -৮ তারিখ ০৬/০২/২০২৪। বর্তমান মামলাটি বিজ্ঞ আদালত সিআইডিকে তদন্ত করতে দিয়েছেন। সিআইডি আমাদের নিকট থেকে সিসিটিভি ফুটে সহ বিভিন্ন আলামত ও প্রমাণাদি সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। অদ্যবধি আমরা কোন সুবিচার পাইনি।
জান্নাতুল মাওয়া অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে আমরা সুবিচার পাচ্ছি না। আজ এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আপনাদের মাধ্যমে সু-বিচারের দাবি জানাচ্ছি। আমি এবং আমার পরিবার প্রশাসনের হয়রানী বন্ধের দাবী জানাচ্ছি। মামলার বিষয়টি দ্রুত তদন্তের দাবী জানাচ্ছি। জান্নাতুল মাওয়া প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy