1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
তেভাগা আন্দোলন ১৯৩০সালে দিনাজপুর জেলায় প্রথম শুরু হয়
সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ছাত্ররা লোহাগড়ায় দুই ভাই হত্যার ঘটনায় আসামি ২৯ কারাগারে সাভারের সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয় রাজশাহীতে সরকারি জায়গা দখল করে বিএনপি নেতাদের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ নড়াইলে ডিবির অভিযানে ১০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সাভারে সান্তনা (৩৫) নামের একজন গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার শেখ হাসিনাস সহ পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনতে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে প্রসিকিউশনের চিঠি লোহাগড়ায় জয়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুমন গ্রেফতার সাতক্ষীরা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ডিবি পুলিশের অভিযানে দুই শ বোতল ফেন্সিডিল সহ আটক- দুই

তেভাগা আন্দোলন ১৯৩০সালে দিনাজপুর জেলায় প্রথম শুরু হয়

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০, ৪.৪৫ পিএম
  • ১৮১ বার পঠিত
তাজ চৌধুরী দিনাজপুর
তেভাগা আন্দলন উৎপাদনের দুই-তৃতীয়াংশের দাবিতে সংগঠিত বর্গাচাষিদের আন্দোলন। তেভাগা শব্দের আভিধানিক অর্থ ফসলের তিন অংশ। প্রচলিত অর্থের ভাগচাষি তাদের ভাগচাষের অধিকারস্বরূপ উৎপাদনের সমান অংশ বা দুই ভাগের এক ভাগ পাওয়ার অধিকারী। ভূমি নিয়ন্ত্রণের শর্তাদি অনুযায়ী শস্য ভাগাভাগির বিভিন্ন পদ্ধতি বর্গা, আধি, ভাগি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
১৯৪৬-৪৭ সালে ভূমি মালিক এবং ভাগচাষিদের মধ্যে উৎপাদিত শস্য সমান দুই ভাগ করার পদ্ধতির বিরুদ্ধে বর্গাদাররা প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯৪৬ সালে আমন ধান উৎপাদনের সময়কালে বাংলার উত্তর এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের জেলা সমূহের কিছু সংখ্যক ভাগচাষি এবং তাদের সমর্থক নিজেদের উৎপাদিত ফসল কাটতে নিজেরাই মাঠে নামে, এমনকি নিজেদের খলানে তা ভানতে নিয়ে যায়।
দুটি কারণে এটি বিদ্রোহ হিসেবে চিহ্নিত। প্রথমত, তারা দাবি করে যে, অর্ধেক ভাগাভাগির পদ্ধতি অন্যায়। উৎপাদনে যাবতীয় শ্রম এবং অন্যান্য বিনিয়োগ করে বর্গাচাষি; উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পুঁজি বিনিয়োগ, শ্রম এবং অবকাঠামোতে ভূমি মালিকের অংশগ্রহণ থাকে অতি নগণ্য। এ কারণে, মালিকরা পাবেন ফসলের অর্ধেক নয়, মাত্র এক-তৃতীয়াংশ।
দ্বিতীয়ত, বর্গাচাষিরা দাবি করেন যে উৎপাদিত শস্যের সংগ্রহ মালিকদের খলানে রাখা এবং সেখান থেকে সমান সমান খড় ভাগাভাগি করার নিয়ম আর মান্য করা হবে না, সংগৃহীত ফসল থাকবে বর্গচাষিদের বাড়িতে এবং ভূমিমালিক খড়ের কোনো ভাগ পাবেন না।
মূলত তেভাগা আন্দোলন সংগঠিত করেন বাংলার প্রাদেশিক কৃষকসভার কম্যুনিস্ট কর্মীরা। তাদের নেতৃত্বে বর্গাচাষিরা ভূমিমালিক শ্রেণীর বিরুদ্ধে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়। খুব দ্রুত নিচের স্তরে এর নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। এ তেভাগা আন্দোলন বাংলার ১৯টি জেলায় ছড়িয়ে পড়ে।
আন্দোলনটি তীব্র আকার ধারণ করে দিনাজপুর, রংপুর, জলপাইগুড়ি, খুলনা, ময়মনসিংহ, যশোর এবং চবিবশ পরগনা জেলায়। ভূমি মালিকরা ভাগচাষিদের এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করে। তারা পুলিশ দিয়ে আন্দোলনকারীদের অনেককে গ্রেফতার করে এবং তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
কিন্তু জমিদারদের দমন-পীড়ন আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারে নি। অপ্রতিরোধ্য ভাগচাষিরা পরবর্তীকালে তাদের লক্ষ্য অর্জনের স্বার্থে জমিদারি প্রথা বিলোপের ক্ষেত্রে একটি নতুন শ্লোগান যোগ করে। বর্গাচাষিদের সমর্থনে পরিচালিত তেভাগা আন্দোলনে এ শ্লোগানের সূত্রে খাজনার হার কমে আসার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়।
তেভাগা আন্দোলনের অগ্রবর্তী ধাপ হিসেবে কৃষকরা কোনো কোনো এলাকাকে তেভাগা এলাকা বা ভূস্বামী মুক্ত ভূমি হিসেবে ঘোষণা করে এবং তেভাগা কমিটি স্থানীয়ভাবে সেসব এলাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। তেভাগা আন্দোলনের চাপে অনেক ভূস্বামী তেভাগা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নেন এবং তাদের সাথে আপস করেন। যশোর, দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়ি তেভাগা এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীকালে সম্প্রসারিত তেভাগা এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় মেদিনীপুর এবং চবিবশ পরগনা। এ সকল ঘটনায় সরকার প্রাথমিকভাবে ১৯৪৭ সালে বিধানসভায় একটি বিল উত্থাপনে প্রণোদিত হয়। বিলটি কৃষকদের মধ্যে বিরাজমান অসমুতষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে বর্গা প্রথা সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু সমকালীন অন্যান্য রাজনৈতিক ঘটনা সরকারকে বর্গা আইন অনুমোদনে অসুবিধায় ফেলে। দেশবিভাগ এবং নতুন সরকারের অঙ্গীকার এ আন্দোলনকে সাময়িকভাবে স্থবির করে দেয়।
তেভাগা আন্দোলন সফল হওয়ার ফলে শতকরা ৪০ ভাগ বর্গাচাষি ভূমিমালিকদের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় তেভাগা প্রাপ্ত হন। এ আন্দোলন আবওয়াব এর নামে বলপূর্বক অর্থ আদায় বন্ধত বা সীমিত করে। তবে পূর্ববাংলার জেলাসমূহে আন্দোলনটির সাফল্য ছিল সীমিত। ১৯৪৮-৫০ সালের দিকে তেভাগা আন্দোলনে আরেক দফা সংগঠিত হয়।
সরকার এ আন্দোলন ভারতীয় দালালদের আন্দোলন বলে চিহ্নিত করে। সাধারণ মানুষও তা বিশ্বাস করে এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ থেকে নিজেদের বিরত রাখে। তবে আন্দোলনটি নিশ্চিতভাবেই পূর্ববঙ্গ জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ প্রণয়নে প্রভাব বিস্তার করেছিল। যেখানে হাজী মোহাঃ দানেশ এই আন্দোলনের নেত্রীত্ব প্রদান করেন। বতর্মানে বাংলাদেশে তেভাগা আন্দোলনের ভাস্কর্য্য বীরগঞ্জে  দেখলে মনে পড়ে সেই সময় আদিবাসী (সাওতাল) সহ অসংখ্য ঝরে যাওয়া প্রাণের কথা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews