রাঙ্গামাটি প্রতিনিধিঃ
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জাতিয়তাবাদী দলের (বিএনপি) হাইকমান্ড। ফলে আগামী ১৩ই নভেম্বর রাঙামাটি জেলা কাউন্সিল ও প্রতিনিধি সম্মেলনের আয়োজন করেছে রাঙামাটি জেলা বিএনপি।
দলের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগামী কাউন্সিল ঘিরে জেলা নেতৃবৃন্দের মাঝে যেমন চাঞ্চল্য এসেছে তেমনি দলীয় কার্যালয়ে উৎসবমূখর পরিবেশ ও লক্ষণীয়। এদিকে উপজেলাগুলোতে চলছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। পাশাপাশি জেলা বিএনপির সম্মেলন ঘিরে বাড়তি আমেজ এসেছে উপজেলা পর্যায়ে।
প্রতিটি উপজেলা থেকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ জেলায় মোট ১৫৪টি ভোটার বা কাউন্সিলর রয়েছে। এসব সদস্যদের সাথে যোগাযোগ ও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে দলটির নেতারা।
জানা গেছে, সভাপতি হিসেবে আবেদন ফরম ক্রয় ও জমা দিয়েছেন বর্তমান সভাপতি আলহাজ্ব শাহ আলম এবং সাবেক মেয়র ও বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম ভুট্টো।আলহাজ্ব মোঃ শাহ আলমঃ
আলহাজ্ব মোঃ শাহ আলম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল রাঙামাটি জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ করেন। এরপর তিনি বাঘাইছড়ি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তিতে সভাপতি নির্বাচিত হন।
রাঙামাটি জেলা বিএনপি’র পৌর সভাপতি, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে তিনি জেলা বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও তিনি রেড ক্রিসেন্ট এর আজিবন সদস্য, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও চেম্বার অব কমার্সসহ বেশ কিছু সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনেরও দায়িত্ব পালন করেন এই নেতা।
এবিষয়ে মোঃ শাহ আলম বলেন, সদস্যদের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি এবং জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এবং বিগত সময়ে দলের জন্য হামলা মামলাসহ যে ত্যাগ স্বীকার করেছি তার পরিপ্রেক্ষিতে সদস্যরা আবারও আমাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করবে।
বিগত সময়ে আমি কর্মীবান্ধব অনেক কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। আগামীতে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আন্দোলনমুখী কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।
সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভুট্টো
১৯৮৬ সালে আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রাখেন তিনি। দলের অনেক চড়াই উৎরাই এর সাথে মানিয়ে নিয়ে ছাত্রদল, যুবদল, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলাসহ বিভিন্ন কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন এই নেতা।
সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভুট্টো রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথেও জড়িত।
তিনি ডিসট্রিক্ট ফুটবল এসোসিয়েশন (ডিএফএ)’র সভাপতি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাঙামাটি জেলা শাখার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সেক্রেটারীসহ প্রতিভাষ ক্লাবের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি নিষ্ঠার সাথে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও দায়িত্ব পালন করছেন।
এবিষয়ে তিনি বলেন, দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করে আজ সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। অসংখ্য হামলা মামলাসহ অনেক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি। বিরোধী দলের নির্যাতনের স্বীকার অসংখ্য নেতা-কর্মীকে সামর্থ্যানুযায়ী সাহায্য করেছি। দল থেকে প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। সদস্যরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরো বলেন, দলকে শক্তিশালী আন্দোলন উপহার দিতে হলে তরুন নেতৃত্বের বিকল্প নেই। জাতিয়তাবাদী শক্তিকে পুনরোদ্ধার করতে হলে কোন সংলাপ নয়। একদফা দাবি বাস্তবায়ন করতে যোগ্য নেতৃত্বের ও বিকল্প নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে ভুট্টো বলেন, আমি একজন কর্মী ছিলাম। তাই নিজেকে কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বিরোধী দলের হামলা মামলা একজন কর্মীকে কতটা দুর্বল করে সেটা আমি বুঝি। তাই কর্মী মূল্যায়ন আমার কাছে সবার আগে। কর্মীর কষ্ট টা আমি বুঝতে পারি বলে কর্মীদের দুঃখ সুখে পাশে থাকব।
এদিকে সভাপতি প্রার্থী ২জনের পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন ৩জন। এর মধ্যে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দীপন তালুকদার দীপু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পনির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অপরদিকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও লড়ছেন ৩প্রার্থী। তারা হলেন, জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদ চৌধুরী ও কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সাবেক নেতা মোর্শেদ আলম।