ডেস্ক: ভবিষ্যতে বিশ্ব ক্রিকেটের কান্ডারিরূপে অবির্ভুত হবেন এমন ২০ খেলোয়াড়ের তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইসপিএনক্রিকইনফো। যেখানে অনুমিতভাবেই জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলী। টম মুডি, ইয়ান বিশপ, রাসেল আরনল্ড ও তামিম ইকবালসহ মোট ১৫ জনকে নিয়ে গড়া বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বিবেচনায় উদীয়মান ২০ ক্রিকেটারের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন ৯ নম্বরে। বিশেষজ্ঞদের এই বিবেচনা প্রসূত সিদ্ধান্ত ক্রিকেটের প্রতি ‘আইসকুল ক্যাপ্টেন’ আকবরের দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। তার মানে এই নয় যে আগে তিনি দায়িত্ব নিয়ে খেলেননি। বরং অতীতেও তা তার ক্রিকেটীয় দর্শনে সরব উপস্থিতি ছিল। উদাহরণ হিসেবে ২২ গজের বিশ্বযুদ্ধের সেই ফাইনাল ম্যাচটিকেই ধরা যাক না। সেদিন ভারতের দেওয়া ১৭৮ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৮৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬ কোটি মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছিলেন তানজিদ হাসান, মাহমুদুল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়রা। কিন্তু অধিনায়ক আকবর আলীর বরফশীতল মাথার ব্যাটিং (অপরাজিত ৪৩) ও রিটায়ার্ড হার্ট থেকে ফিরে পারভেজ হোসেন ইমনের লড়াকু ৪৭ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে প্রথম কোনো বিশ্বকাপ মুকুট জয়ের হর্ষে ভাসাল। বয়স আহামরী তেমন নয়। মাত্র ১৯! কিন্তু তবুও বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো ওমন স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে তিনি যে স্নায়ুর পরীক্ষা ও দায়িত্ব বোধের পরিচয় দিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। তবে ক্রিকইনফোর দেওয়া নতুন এই তকমা তাকে আরো দায়িত্বশীল করে তুলবে বলেই মত তার। তাকে নিয়ে তাদের এমন উচ্চমার্গীয় ভাবনার সম্মান দিতে নিজের সেরাটুকু উজাড় করে দিতে কুণ্ঠা বোধ করবেন না এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে একথা জানান লাল সবুজের বিশ্বজয়ী এই দলপতি। ‘নির্বাচন প্যানেলে যারা ছিলেন তারা কিংবদন্তি। তারা আমার ভেতরে সম্ভাবনা দেখেছেন, এটা আমাকে উৎসাহিত করছে। এটা বড় একটা দায়িত্ব। নিজেকে যেন সে জায়গায় নিয়ে যেতে পারি সে চেষ্টাই করব। এজন্য বাড়তি চিন্তা বা বাড়তি কিছু করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। নিজেকে কোথায় দেখতে চাই, এমন একটা ছবি তো মনের মাঝে আছেই। সেটা অর্জন করতে যেভাবে আগানো দরকার সেটি নিয়েই ভাবব।’ প্রাণঘাতী করোনা বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেওয়ায় আপাতত দেশের ক্রিকেট বন্ধ। তাই আকবর ফিরে গেছেন নিজ শহর রংপুরে সেখানে নিজেকে ঘরবন্দী করে রেখেছেন। নেহায়াৎ প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। ঘরে বসেই ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন। সবশেষ ব্যাট হাতে নিয়েছেন ১৬ মার্চ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের প্রথম রাউন্ডে। শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ব্যাটসম্যন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে প্রাইম ব্যাংকের বিরুদ্ধে করেন ৩১ রান। তিন চার ও এক ছয়ে খেলেছিলেন নান্দনিক ইনিংস। রান আউট না হলে হয়ত দলকে মৌসুমের প্রথম জয় উপহর দিয়েই মাঠ ছাড়া হত। কিন্তু হয়নি। সেই খেদ ঘোচাতে হয়ত লিগের পরের ম্যাচগুলোর দিকে পাখির চোখ করেছিলেন। কিন্তু ঠিক সে সময়ে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করলে তা আর হয়ে উঠেনি। খেলা বন্ধ ঘোষণা করল বিসিবি। অগত্যা রংপুরে ফিরে গেলেন আকবর। তিন মাসেরও বেশি সময় রংপুরে নিজের বাসাতেই বসেই ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু স্কিল ট্রেনিং (ব্যাটিং, বোলিং) হচ্ছে না। লম্বা সময় ব্যাট-বলের অনুশীলন থেকে আছেন দূরে। তার মতে এই বিরতি যত দীর্ঘ হবে ততই মাঠে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হবে। ‘তিন মাস ধরে স্কিল ট্রেনিংয়ের বাইরে আমরা। সেই কবে প্রিমিয়ার লিগের একটা ম্যাচ খেলেছি। মানিয়ে নেওয়া কষ্ট হলেও যত তাড়াতাড়ি ব্যাট-বলের অনুশীলনে ফিরব তত ভালো হবে আমাদের জন্য। যত গ্যাপ হবে ততই কষ্ট হবে ভবিষ্যতে।’ আবার এও মানছেন করোনাকালের বাস্তবতার নিরিখে কারোরই কিছু করার নেই। ‘দেশের যে করোনা পরিস্থিতি তাতে কিছু করারও নেই, এভাবে দিন কাটানো ছাড়া।’
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy