জাহেদুল ইসলাম মিরাজ, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
বাঁশখালীর দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার মো. আমানাতুন মাওলা জেল থেকে জামিনে এসে একই কর্মস্থলে ভারপ্রাপ্ত কানুনগো পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। জেলে যাবার আগে সার্ভেয়ার পদে দুইদফা বদলি আদেশ হলেও তাও ঠেকিয়েছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে। দুদকের মামলায় গ্রেফতারের পনের দিনের মাথায় জামিনে এসে সার্ভেয়ার পদে কর্মস্থলে যোগদান করার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত কানুনগো দায়িত্বও পালন করায় বাঁশখালী জুড়ে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। মানুষের মুখে মুখে প্রচার হচ্ছে দুর্নীতিবাজের পদোন্নতি সার্ভেয়ার থেকে কানুনগো।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত সার্ভেয়ার মো. আমানাতুন মাওলা ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় জেল কেটে আবারো কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। তবে বাঁশখালী উপজেলা অফিসে কানুনগো পদ শূণ্য থাকায় তাঁকে পদোন্নতি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত কানুনগো’র দায়িত্বও দেয়া হয়েছে। বাঁশখালীর অসংখ্য মানুষের অভিযোগ থাকলেও ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়মসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত আমানাতুন মাওলাকে ২০২২ সালের মার্চ ও ডিসেম্বর মাসে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী স্বাক্ষরে কাট্টলী সার্কেল, উপজেলা ভূমি অফিস এবং পতেঙ্গা সার্কেল ভূমি অফিসে দুই দফা বদলি আদেশ করা হয়েছিল।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর পিপি মাহমুদুল হক বলেন, সার্ভেয়ার মো. আমানাতুন মাওলা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার(এলএ) শাখায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সঙ্গবদ্ধভাবে ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ১৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালে দুদক মামলা দায়ের করেন। ওইসময় তাকে বরখাস্ত না করে শাস্তি হিসেবে বাঁশখালী উপজেলা ভূমি অফিসে বদলি করা হয়। ওই মামলায় গত ২০ ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছা’র আদালতে জামিন নিতে আসলে জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় তিনি জেল হাজতে যান। এর ১০ দিন পর ৭ মার্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবারো বাঁশখালীতে সার্ভেয়ার পদে যোগদান করেছেন।
বাঁশখালী উপজেলার জহিরুল ইসলাম, আলী নবী, দেবেন্দ্র দাশ, রবিউল আলম, শ্রীজয় দাশসহ অসংখ্য মানুষ অভিযোগ করেন, বাঁশখালী ওপর দিয়ে যাওয়া গ্যাস লাইনের ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা এখনো মানুষ উঠাতে পারেনি। প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করে ব্যর্থ হলে ভুয়া প্রতিবেদন দিয়ে আটকে রাখেন। আদালতে দায়ের করা সাধারণ মানুষের আবেদনে ভুয়া প্রতিবেদন দেন।
বাঁশখালী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও ভারপ্রাপ্ত কানুনগো মো. আমানাতুন মাওলা বলেন, আমার দুর্নীতির মামলার ঝামেলা শেষ হয়েছে। তাই আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কর্মস্থলে যোগদান করেছি।
বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ কারো বদলি কিংবা যোগদান সবকিছু উর্ধ¦তন কর্তৃপক্ষের আদেশে হয়। আমার কিছু বলার নেই।