এ আর আহমেদ হোসাইন
(দেবীদ্বার-কুমিল্লা)প্রতিনিধি
দেবীদ্বারে‘”সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ এই শ্লোাগানকে সামনে রেখে কুমিল্লা উত্তর জেলা ও দেবীদ্বার উপজেলা যুবলীগের আয়োজনে শান্তি-সম্প্রীতি র্যালী ও আলোচনা সভা চলাকালে ব্যানার ধরাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রæপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত: ১০জন আহত হলেও মারাত্মক আহত সোহাগ(১৯) ও মামুনুর রশীদ(২০)কে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে নেতা-কর্মীরা ‘স্বাধীনতা চত্তর’র বেধিতে জুতা পায়ে উঠে বক্তৃতা দেয়ার ঘটনাও ঘটে এবং সংঘর্ষ চলাকালে বেধির সৌন্দর্য বর্ধনে দৃষ্টিনন্দন ঝলক বাতির পিলারগুলোও ভেঙ্গে ফেলে।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যার পরপর্যন্ত দেবীদ্বার নিউমার্কেট ‘স্বাধীনতা চত্তর’র সামনে এবং দেবীদ্বার পুরাতন বাজার এলাকায়। এসময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাতে এ-রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত আছেবলে দলিয় সমর্থকরা জানিয়েছেন।
সংগঠনের নেতারা জানান, যুব লীগ নেতা আনিছুর রহমান ব্যানারের এক পাশে ধরে থাকলে অপর সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম ব্যানার ধরতে চাইলে- ব্যানার টানাটানির এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে প্রথমে ধাক্কা-ধাক্কি পরে দু’সমর্থকের পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক পর্যায়ে সেচ্ছা সেবক লীগ জহীর হোসেন’র দেবীদ্বার পুরাতন বাজারস্থ ব্যাক্তিগত কার্যালয়ে হামলার সংবাদে জহির সমর্থকরা ছুটে যায়, এসময় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে, এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত হতে একাধিক নেতার সাথে সেল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কারোর সাথে কথা বলা যায়নি।
তবে ছাত্রলীগ সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ও যুবলীগ উত্তর জেলার সম্ভাব্য সাধারন সম্পাদক পদের প্রার্থী জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজ’র প্রভাষক মোঃ সাইফুল ইসলাম শামিম ব্যানার ধরাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক বিষয় নয়। সেচ্ছা সেবক লীগ নেতা জহীর এবং যুবলীগ নেতা আনিসের মধ্যে ব্যানার ধরা নিয়ে হাতাহাতি ও পরে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে সেচ্ছা সেবক লীগ নেতা সাদ্দামের অফিস ভাংচুরের সংবাদে জহীর গ্রুপের লোকজন ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া স্বাধীনতা চত্তরের বেধীতে উঠে বেধির অবমাননার বিষয়টি সঠিক নয়, বেধিতে আমাদের নেতা কর্মীরা বক্তৃতা দিলেও জুতা খুলে উঠেছিল, পরে তাদের সবাইকে নামিয়ে দেই। বেধির দৃষ্টিনন্দন বৈদ্যুতিক বাতির যে ক্ষতি সাধন হয়েছে তা আগামীদিন মেরামত করে দেব।
অনুষ্ঠান চলাকালে বক্তারা বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। হাজার বছর ধরে হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খৃষ্ঠান সহ নানা ধর্মালম্বীর দেশ বাংলাদেশ। আমাদের বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের সম্প্রীতি অব্যাহত বজায় আছে এবং থাকবে। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ধর্মকে পূঁজী করে একটি কুচক্রি মহল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির লখ্যে নানা অপকর্ম এবং অপপ্রচার চালালেও তা প্রতিহত করেই আমরা এগিয়ে চলছি। আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের সরকার। কোন ষড়যন্ত্রই এই সরকারের উন্নয়ন কে থামিয়ে রাখতে পারবে না।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকাল সাড়ে চারটায় দেবীদ্বার নিউমার্কেটস্থ আওয়ামী যুবলীগের কার্যালয় থেকে র্যালী শুরু করে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ‘স্বাধীনতা চত্বরে’ গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্যের মধ্যে বক্তারা ওই বক্তব্য তুলে ধরেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়।
এসময় দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ’র ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কাশেম ওমানীর সভাপতিত্বে এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জিএস মান্নানের সঞ্চালনায় উক্ত র্যালী ও শান্তি-সম্প্রীতি সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, জাফরগন্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজ’র প্রভাষক ও সাবেক ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যকরি নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম শামীম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ও সেচ্ছা সেবক লীগ কুমিল্লা উত্তর জেলা সদস্য মোঃ শাদাৎ হোসেন মিঠু, ছাত্রলীগ কুমিল্লা উত্তর জেলা সভাপতি আবু কাউছার অনিক, উপজেলা পূঁজা উদযাপন পরিষদ’র সাধারণ সম্পাদক মানিক চক্রবর্তী, কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য ছাদ্দাম হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ইকবাল হোসেন রুবেল প্রমূখ।
এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাফরগন্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসেন, গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম খাঁন, উপজেলা পূঁজা উদযাপন পরিষদ’র সভাপতি জীবন চন্দ্রদাস, এলাহাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার রাজু সহ উপজেলা এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত আওয়াামীলীগ’র অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।