আরেফিন পপি: মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে উত্তেজনা চলছে সারাদেশ ব্যাপী। ভাস্কর্য বিরোধীরাদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ডাক দিলেন “বঙ্গবন্ধু কল্যান পরিষদ”। “বঙ্গবন্ধু কল্যাণ পরিষদ”-এর গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত দেন সংগঠনের সভাপতি কাজী শাকিল আহমেদ। প্রথমেই শব্দ তিনটা বুঝে নেওয়া যাক: প্রতিমা, ভাস্কর্য ও মূর্তি। প্রতিমা হল মানুষ যার আরাধনা উপাসনা করে, ইহকালে-পরকালে মঙ্গল চাওয়া, ভুলের ক্ষমা চাওয়া ইত্যাদি। ভাস্কর্য হল মানুষসহ কোনো প্রাণী বা কোনো কিছুর মূর্তি যাকে মানুষ রাখে সম্মান দেখতে বা সৌন্দর্য্য বর্ধন করতে, যা মানুষ আরাধনা বা উপাসনা করে না।
ভাস্কর্য শিল্প একটি দেশের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা সময়ে আবিষ্কৃত নানা ভাস্কর্য থেকে বোঝা যায়, সুদূর অতীতকাল থেকেই পৃথিবীতে ভাস্কর্য শিল্পের বিকাশ ঘটেছিলো। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ভাস্কর্য পৃথিবীর ইতিহাস ও সংস্কৃতির গৌরব বহন করে চলেছে। আজো দেশে দেশে ভাস্কর্য তৈরি হচ্ছে নিপুণ সৃষ্টিশীলতায়। এর মাধ্যমে ফুটে উঠছে নিজ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি। মুসলিম বিশ্বও ভাস্কর্য শিল্প থেকে পৃথক নয়। খোদ সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া, মিশর, ইরান, ইরাকসহ প্রায় সকল মুসলিম দেশেই রয়েছে ভাস্কর্য। বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য অপসারণের নামে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের হুমকির প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ সভা শুরু করছে “বঙ্গবন্ধু কল্যান পরিষদ”। ভাস্কর্য বিরোধিতার আড়ালে একটি গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা নস্যাতের ষড়যন্ত্র করছে। সরকার অবস্থান স্পষ্ট করলে তারা কোনঠাসা হয়ে পড়বে। মুর্তি-ভাস্কর্য বিরোধীদের সাম্প্রতিক তৎপরতা বিশ্লেষণ করে এসব বলছেন আলেম ও শিল্প তাত্ত্বিকরা। এরাই রাষ্ট্রের জনঙ্গানী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা বিবেক বুদ্ধি হীন রাজনৈতিক স্বার্থের নির্বোধ নির্লজ্জ অসৎ বাটপার দালাল। এসময় রাজনৈতিক মৌলবাদীদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে সংগঠনের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সোহেল চৌধুরী বলেন, কয়েকজন ব্যক্তির কাছে ইসলাম ধর্মকে লীজ দেয়া হয়নি। ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে। এরা সংবিধান ও সভ্যতাবিরোধী। সভাপতি বলেন, ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারী মৌলবাদীরা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে অশান্তি৷ সৃষ্টির রাজনীতি করছে। ভাস্কর্য বিরোধিতার নামে আসলে সরকার উৎখাতের চক্রান্ত শুরু করছে। বঙ্গবন্ধুকে আবারো হত্যা করছে, দেশে ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করছে এরা। তিনি বলেন, ভাস্কর্য বিরোধীরা বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্র, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধ কিছুই মানে না। এরা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্ম অবমাননা করছে। সভাপতি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার হুমকি দিয়ে উত্তেজনা-অশান্তি সৃষ্টিকারীদের আইনের আওয়াতায় আনা এবং ধর্মের অপব্যাখ্যা-ধর্ম নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করার দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্য নেতা কর্মীদের আহ্বান করেন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy