দুই পাশে ফুলের রাজ্য। দেশী নানা রঙের ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ-গাঁদা এরই সাথে বিদেশি ফুলের বাহারে বর্ণিল সাজে সজ্জিত চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে সাগর পাড়ে গড়ে তোলা ডিসি পার্ক।
মাঝখানে বিশালাকার পুকুর। তাতে চলছে কায়াকিং। সন্ধ্যায় চালানো হয় পানির ফোয়ারা। ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনোলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, কামিনী, বেলি, চেরিসহ দেশি-বিদেশি ফুলের সুবাসে ম–ম করছে চারপাশ। মাঠজুড়ে নানা নকশায় লাগানো হয়েছে ফুলগাছ। দর্শনার্থীরা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করেছেন এখানে। এ বছর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ডিসি পার্কে দ্বিতীয়বারের মতো চলছে ফুল উৎসব। সে জন্য এত আয়োজন।
ডিসি পার্কে১২৭ প্রজাতির ফুলের লক্ষাধিক গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের ফুল উৎসব। ‘ফুলের মত আপনি ফুটাও গান’ শিরোনামে আয়োজন করা হয়েছে এবছরের ফুল উৎসব। এ ফুল উৎসব শেষ হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি।
এ পার্কে এবছরও ফোটানো হয়েছে টিউলিপ। ফুল উৎসবে শোভা পাচ্ছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ১৫টি সাম্পানের প্রদর্শনী, সাম্পান বাইচ, ঘুড়ি উৎসব, পুতুল নাচ, ভায়োলিন শো, চিত্র প্রদর্শনীর মত নানা ধরনের আয়োজন।
পার্কে স্থায়ীভাবে লাগানো ফুলের পাশাপাশি বিভিন্ন প্যাকেট ভর্তি ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে ডিসি পার্ক। যেখানে দর্শনার্থীরা গিয়ে ইতোমধ্যে ছবি তুলে পোস্ট করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গত বছর দখলদারদের উচ্ছেদের পর ১৯৪ একর খাস জমি উদ্ধার করে জেলা প্রশাসন। এরপর সেখানে গড়ে তোলা হয় ডিসি পার্ক। উচ্ছেদের এক মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো সাত দিনব্যাপী ফুল উৎসবের আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। এতে মানুষের সাড়া পড়ে যায়। তাই এবার দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে ফুল উৎসব।
“প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা ৩০ টাকায় টিকিট কেটে পার্কে প্রবেশ করে ফুল উৎসব উপভোগ করতে পারবেন।”
পরিবার নিয়েও অনেকে ইতোমধ্যেই উপভোগ করছেন দেশী বিদেশী এ ফুলের সৌন্দর্য।
চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজারের ফাউজিয়া হোসাইন জানান, চট্টগ্রামে এমনিতেই বিনোদনের জায়গাগুলো ক্রমেই সংকোচিত হয়ে আসছে এরই মাঝে জেলা প্রশাসকের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন দেখে আমি বিমোহিত। এত এত ফুল আর অপরূপ সৌন্দর্যে আমার প্রাণ জুড়িয়ে গেছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত বছরের ফুল উৎসবে তারা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছিলেন। যার কারণে এবছর ১২৭ প্রজাতির লক্ষাধিক ফুল গাছের সমারোহে নান্দনিকতায় সাজানো হয়েছে এ ডিসি পার্ক।
জজ
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক সময় জায়গাটি ছিল মাদকের আখড়া। গত বছর প্রথমবারের মতো ফুল উৎসবে লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। মানুষের উৎসাহ দেখে এ বছর বৃহৎ পরিসরে মাসব্যাপী ফুল উৎসব শুরু করতে যাচ্ছি আমরা।’
পার্কটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম বলেন, ডিসি পার্কে দ্বিতীয়বারের মতো ফুল উৎসবের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সব মিলিয়ে এবারের উৎসবটি অনেক উপভোগ্য হবে। মূল উৎসবের আগেই দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে।
এবছরের ফুল উৎসব উপভোগ করতে পাঁচ লাখের বেশি লোকের সমাগম হবে বলে আশা করছেন ইউএনও রফিকুল।