কাজী মোতাহার হোসেন নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজশাহীর তানোর পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহীন সরকার রঞ্জুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের পর বিয়ে ও সম্পর্ক অস্বীকার করে ভ্রূণ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী স্ত্রী। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।
রোববার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহীন সরকারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। ঐ ছাত্রদল নেতার বিচারও দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই নারী জানান, তানোর পৌর এলাকায় স্বামী আর দুই সন্তান নিয়ে শাহীন সরকারের বাড়ির পাশে ভাড়া থাকতেন। ঐ সময় শাহীন তাকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। তবে তিনি বারবার এড়িয়ে যেতেন। বছরখানেক আগে একদিন ফাঁকা বাড়িতে কৌশলে তাকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন শাহীন সরকার। লোকলজ্জায় তিনি বিষয়টি কাউকে বলতে পারেননি। এরপর শাহীন তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এরই মধ্যে একদিন ওই নারীকে শাহীন সরকারের সঙ্গে কথা বলতে দেখেন তার স্বামী। ঐ ঘটনায় তাকে মারধরও করেন। শাহীন সরকার তখন ওই নারীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন। এরপর তিনি ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে রাত কাটাতেন। কিছুদিনের মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হন ওই নারী। এরপরও তাকে বিয়ে করছিলেন না শাহীন। ওই নারী বিয়ের জন্য চাপ দিলেও নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতেন।
গত জুনে ওই নারী জ্বরে আক্রান্ত হন। তখন চিকিৎসার নামে তার বাড়িতে একজন গ্রাম্য চিকিৎসক নিয়ে যান শাহীন। ওই চিকিৎসকের দেওয়া ভ্রূণ নষ্ট করার ওষুধে দেন তার পেটের বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। এর আগেই আদালতে গিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে ওই নারীকে বিয়ে করেন শাহীন সরকার। কিন্তু বিয়ের রেজিস্ট্রি করেননি।
ভুক্তভোগী নারী আরো জানান, বিয়ের পর পৌর এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে তাকে নিয়ে ওঠেন শাহীন সরকার। দুই মাস সংসার করার পর তিনি বিয়ে রেজিস্ট্রি করার জন্য শাহীনকে চাপ দেন। তখন শাহীন বলেন- এখন লকডাউন চলছে। রেজিস্ট্রি হবে না। লকডাউন শেষে ওই নারী আবার চাপ দিলে বিয়ের কথা অস্বীকার করে তাকে বাড়ি থেকেই তাড়িয়ে দেন শাহীন। এ কারণে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছেন তিনি।শাহীন সরকার আমার সংসার ভেঙেছে। আমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। আমার বাচ্চা নষ্ট করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই- এসব কথা বলতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ভুক্তভোগী নারী।অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদল নেতা শাহীন সরকার রঞ্জু বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। ঐ নারী আমাকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছে। এখন নিজেকে বাঁচাতে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছে। বিয়ের যে এফিডেভিট সে দেখাচ্ছে সেটাও ভুয়া।