মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর ধামইরহাটের ভাতকুন্ডু খাতেমন নেসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের গাফিলতির কারনে জহুরা জাবিন নামের এক ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষা দিতে না পারার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বড় ভাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গত মঙ্গলবার (২ মে) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ওই শিক্ষার্থীর ভাইয়ের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জহুরা জাবিন ভাতকুণ্ডু কেএন উচ্চ বিদ্যালয়ে২০২৩ সালের একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতসহ কোচিং করেছে। গত ২৭ এপ্রিল সে প্রতিদিনের ন্যায় সকাল অনুমান সাড়ে ৯ দিকে সময় বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশ পত্র নেওয়ার জন্য যায়। তখন প্রধান শিক্ষক জহুরাকে প্রবেশ পত্র না দিয়ে জানায় যে, তোমার প্রবেশপত্র বোর্ড থেকে আসেনি। এই কথা শুনে সে কান্নাকাটি করে বাড়িতে এসে ঘটনাটি আমাদের জানালে আমার স্ত্রী মোসাঃ লিজা পারভীন ও বোন জহুরা প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে প্রবেশ পত্র নেওয়ার জন্য গেলে প্রধান শিক্ষক তাদের সাথে দেখা করেনি এবং প্রধান শিক্ষকের মোবাইলে ফোন করিলে ফোনটিও রিসিভ করেনি।
তিনি অভিযোগে আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক আমার নিকট হইতে ফরম ফিলআপ করা বাবদ সর্বমোট ৮ হাজার ৭ শত টাকা নেয়। আমার বোন এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় বর্তমানে মানসিক ভাবে অশান্তিতে ভুগতেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বড় ভাই মোঃ আবু সাঈদ বলেন, প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে আমার ছোট বোন পরীক্ষা দিতে পারেনি। তিনি আমাদের কাছে থেকে ফরম পূরণ, কোচিং ক্লাস ও বিদায় অনুষ্ঠান বাবদ টাকা নিয়েছেন বলে গতকাল তদন্তের সময় শিক্ষা অফিসার স্যারকে লিখিত ভাবে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। ইতোপূর্বেও তিনি এভাবে অনেক ছাত্র-ছাত্রী জীবন নষ্ট করেছেন। আমি প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় আটটি বিষয়ে ফেল করে। তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি অতিরিক্ত ক্লাসে আসার অনুমতি দিয়েছিলাম। তার কাছে থেকে কোন টাকা নেয়নি। তারা এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার আলী শাহ বলেন, এবিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিলে সেটির তদন্তভার আমার উপর আসে। সে প্রেক্ষিতে বুধবার সরেজমিনে তদন্তে গেলে দেখা যায় সে প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থী ছিল এবং সে প্রধান শিক্ষককে ফরম পূরণ, অতিরিক্ত ক্লাস ও দোয়া মাহফিল বাবদ টাকা নিয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। ওই শিক্ষার্থী চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেনি। এবিষয়ে খুব শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
ধামুইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসের নিকট বিষয়টি জানার জন্য মোবাইলে ফোন করলে ফোন রিসিভ না করায় কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।