প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ৯, ২০২৫, ৫:৪২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ২৪, ২০২১, ১:০৮ এ.এম
নওগাঁয় আমে মরিচা ধরাসহ কালো দাগ : তীব্র খরায় গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে আম

সুবীর দাস, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি :
দেশের অন্যতম শীর্ষ আম উৎপাদনকারি জেলা নওগাঁয় চলতি মৌসুমের প্রায় ৬মাস ধরে অনাবৃষ্টির কারণে তীব্র খরায় গাছ থেকে অনবরত ঝড়ে পড়ছে গোপালভোগ, লেংড়া, আমরুপালী, আশ্বিনা বানানা মাংগো, ফজলীসহ ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির আম।
সেই সাথে জেলার বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর, পত্নী তলায় আমে হপার, উঁকুনপোকাসহ বিভিন্ন পোকা মাকড়ের আক্রমনের পাশাপাশি মরিচা রোগ দেখা দেয়ায় আমের শরীরে মরিচাসহ আম ফেটে যাচ্ছে এবং এই রোগাক্রান্ত বেশির ভাগ আম ধারন করছে কালো রং।
এ সব আমে কীটনাশক, প্রতিষেধক ব্যবহার করেও কোন সুফল মিলছেনা বলে অভিযোগ আম চাষিদের। এ অবস্থা চলতে থাকলে জেলায় আমের উৎপাদন ব্যাহত হবার পাশাপাশি আমচাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশংকা করছেন আম চাষিরা।
জেলায় চলতি মৌসুমে ২৫ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। চাষকৃত আম বাগান থেকে জেলায় ৩ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিন হবে বলে আশা করছে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর।
জেলার আমচাষিরা বলছেন, মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অনাবৃষ্টির কারনে তীব্র খরায় ও পানির সেচ সংকটে গাছ থেকে প্রতিনিয়ত আম ঝড়ে পড়ছে। সেই সাথে আমে হপার, উঁকুনপোকাসহ বিভিন্ন পোকা মাকড়ের আক্রমনের পাশাপাশি মরিচা রোগ দেখা দেয়ায় আমের শরীরে মরিচাসহ আম ফেটে যাচ্ছে এবং এই রোগাক্রান্ত বেশির ভাগ আম ধারন করছে কালো রং। এ সব আমে কীটনাশক, প্রতিষেধক ব্যবহার করেও কোন সুফল মিলছেনা বলে অভিযোগ আম চাষিদের।
সাপাহার উপজেলার আমচাষি আজিজুল হক বলেন, এ বছর অতিরিক্ত খরার কারনে আমে হপার ও মাকর পোকার আক্রমন খুব বেশি। ১৫ দিন পরপর ঔষুধ স্প্রে করছি কিন্তু এসব পোকা দমন হচ্ছেনা। একমাত্র বৃষ্টি হলে পোকার হাত থেকে আম রক্ষা পাবে বলে জানান এই আম চাষি।
মহাদেবপুর উপজেলার আম চাষি মাহফুজুর রহমান জানান, অনাবৃষ্টির কারনে এ বছর আমে হপার, পোকা, মাকড় ও এক জাতীয় মাছির আক্রমন হচ্ছে। এতে আম কালো হয়ে যাচ্ছে। কোন ঔষুধ দিয়েও কাজ হচ্ছেনা। এ বছর বৃষ্টির পানি না থাকায় আমের ফলন ও কম হবে বলে মনে করছেন এই আম চাষি।
সাপাহারের আমচাষি ইউনুছ আলী জানান, দীর্ঘ সময় ধরে অনাবৃষ্টির কারনে আমের দাগ ও ছত্রাক কোন ঔষুধ দিয়ে দুর করতে পারছিনা। তাছাড়া আম ঝড়ে পড়ায় আম উৎপাদন অনেকটা কম হবে । একমাত্র বৃষ্টি হলেই এসব পোকা মাকড় ও ছত্রাক দুর হতে পারে বলে জানান এই আম চাষি।
পোরশার আমচাষি আমির হোসেন বাবু বলেন, আমে এমন পোকা মাকড়ের আক্রমন কখনও হয়নি। এ অবস্থায় আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। বারবার ঔষুধ দিয়েও পোকা-মাকড় দমন হচ্ছেনা। এ অবস্থা চলতে থাকলে এবং শীঘ্রই বৃষ্টিপাত নাহলে এবার আম চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপ- পরিচালক মো: সামশুল ওয়াদুদ জানান, জেলার সাপাহার উপজেলা সহ কিছু এলাকায় আম ধরা ও রোগ বালাইয়ের কারনে ঝড়ে পড়লেও এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কোন প্রভার পড়বেনা।
আর যে সকল আমে মরিচা সহ অন্যান্য রোগ বালাই পোকা মাকড় আক্রমন দেখা দিয়েছে কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক ওই সব আমে কীটনাশক ও প্রতিষেধক ব্যবহার করলে রোগ বালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমন থেকে আম রক্ষা করা সম্ভব। আর বৃষ্টি হলে আম ঝড়ে পড়ারোধ করা সম্ভব হবে বলে জানান কৃষি কর্মকতার্ মো: সামশুল ওয়াদুদ ।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy